সূরা আল-হাজ্জ (সূরা 22 – তীর্থযাত্রা) আমাদের বলে যে বিভিন্ন রীতি এবং অনুষ্ঠান সমূহ বিভিন্ন সময়ে দেওয়া হয়েছে I তবে এটি নির্দিষ্ট মাংস বলিদান নয়, বরং যা আমাদের মধ্যে আছে সেটি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ I
আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কোরবানী নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর দেয়া চতুস্পদ জন্তু যবেহ কারার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। অতএব তোমাদের আল্লাহ তো একমাত্র আল্লাহ সুতরাং তাঁরই আজ্ঞাধীন থাক এবং বিনয়ীগণকে সুসংবাদ দাও;যাদের অন্তর আল্লাহর নাম স্মরণ করা হলে ভীত হয় এবং যারা তাদের বিপদাপদে ধৈর্য্যধারণ করে এবং যারা নামায কায়েম করে ও আমি যা দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে।এবং কা’বার জন্যে উৎসর্গীকৃত উটকে আমি তোমাদের জন্যে আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন করেছি। এতে তোমাদের জন্যে মঙ্গল রয়েছে। সুতরাং সারিবদ্ধভাবে বাঁধা অবস্থায় তাদের যবেহ করার সময় তোমরা আল্লাহর নাম উচ্চারণ কর। অতঃপর যখন তারা কাত হয়ে পড়ে যায় তখন তা থেকে তোমরা আহার কর এবং আহার করাও যে কিছু যাচ্ঞা করে না তাকে এবং যে যাচ্ঞা করে তাকে। এমনিভাবে আমি এগুলোকে তোমাদের বশীভূত করে দিয়েছি, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।এগুলোর গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু পৌঁছে তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া। এমনিভাবে তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা কর এ কারণে যে, তিনি তোমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।
সুরাহ আল-হাজ্জ 22:34,37
34 আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কোরবানী নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর দেয়া চতুস্পদ জন্তু যবেহ কারার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। অতএব তোমাদের আল্লাহ তো একমাত্র আল্লাহ সুতরাং তাঁরই আজ্ঞাধীন থাক এবং বিনয়ীগণকে সুসংবাদ দাও; 37 এগুলোর গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু পৌঁছে তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া। এমনিভাবে তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা কর এ কারণে যে, তিনি তোমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।
জল হাজ্জের বিধি এবং অনুষ্ঠান সমূহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কারণ তীর্থযাত্রীরা জ্যাম জ্যাম কুয়োর জল পান করতে চায় I তবে সূরা আল-মূলক (সূরা 67 – সার্বভৌমত্ব) আমাদেরকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চায় I
বলুন, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভের গভীরে চলে যায়, তবে কে তোমাদেরকে সরবরাহ করবে পানির স্রোতধারা?
সুরাহ আল-মূলক 67:30
বলুন, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভের গভীরে চলে যায়, তবে কে তোমাদেরকে সরবরাহ করবে পানির স্রোতধারা?
.
নবী ঈসা আল মসীহ পিবিইউএইচ নবী মশির পিবিইউএইচ দ্বারা অভিষিক্ত এক যিহূদিদের তীর্থযাত্রায় এই প্রশ্নটিকে সম্বোধন করেছিলেন I আমরা এটিকে হাজ্জের চশমা দিয়ে এখানে একবার দেখব I
হাজ্জ তীর্থযাত্রী সু-পরিচিত I যা কম পরিচিত যে 3500 বছর আগে পাওয়া মশির (পিবিইউ এইচ) শারিয়া আইনে যিহূদি বিশ্বাসীদেরকেও প্রতি বছর যিরূশালেমে (আল কুদস) পবিত্র তীর্থযাত্রায় যাওয়ার প্রয়োজন হত I এক তীর্থযাত্রাকে বলা হত ঈশ্বরীয় তাঁবুর ভোজ (বা সুকোট) I এই তীর্থযাত্রার সঙ্গে আজকের হাজ্জের অনেক সাদৃশ্য আছে I উদাহরণস্বরূপ, এই তীর্থযাত্রা সমূহের উভয়ই ক্যালেন্ডারের একটি নির্দিষ্ট সপ্তাহে ছিল, উভয়ই পশু বলিদানকে জড়িত করত, উভয়ই বিশেষ জল প্রাপ্তিকে জড়িত করত (যেমন জ্যামজ্যাম), উভয়ই ঘুমন্ত বহির্দ্বারগুলোকে জড়িত করত, এবং উভয়ই সাতবার একটি পবিত্র কাঠামোকে প্রদক্ষিন করাকে জড়িত করত I ঈশ্বরীয় তাঁবুর ভোজ যিহূদিদের জন্য একটি হাজ্জের ন্যায় ছিল I আজ, যিহূদিরা এখনও ঈশ্বরীয় তাঁবুর ভোজ উদযাপন করে তবে এটিকে একটি অল্প ভিন্নভাবে করে যেহেতু তাদের মন্দিরকে 70 খ্রীষ্টাব্দে রোমীয়দের দ্বারা যিরূশালেমে ধ্বংস করা হয়েছিল I
ইঞ্জিল বর্ণনা করে কিভাবে নবী ঈসা আল মসীহ (পিবিইউএইচ) সম্পন্ন করেছিলেন – তাঁর হাজ্জকে I বিবরণটিকে কিছু ব্যাখ্যার দ্বারা লিপিবদ্ধ করা হয় I
যীশু ঈশ্বরীয় তাঁবুর উৎসবে যান (যোহন 7)
রপর যীশু গালীলের চারদিকে ভ্রমণ করছিলেন৷ তিনি যিহূদিযায় ভ্রমণ করতে চাইলেন না, কারণ ইহুদীরা তাঁকে খুন করবার সুয়োগ খুঁজছিল৷
যোহন 7:1-5
2 এই সময় ইহুদীদের কুটিরবাস পর্বএগিয়ে আসছিল৷
3 তখন তাঁর ভাইরা তাঁকে বলল, ‘তুমি এই জায়গা ছেড়ে যিহূদিযাতে ঐ উত্সবে যাও; যাতে তুমি য়ে সব অলৌকিক কাজ করছ তা তোমার শিষ্যরাও দেখতে পায়৷
4 কারণ কেউ যদি প্রকাশ্যে নিজেকে তুলে ধরতে চায় তবে সে নিশ্চয়ই তার কাজ গোপন করবে না৷ তুমি যখন এত সব মহত্ কাজ করছ তখন নিজেকে জগতের কাছে প্রকাশ কর৷ য়েন সবাই তা দেখতে পায়৷’
5 তাঁর ভাইরাও তাঁর ওপর বিশ্বাস করত না৷
ঈসা আল মসীহর ভাইরা কটুক্তি করে নবীর সঙ্গে আচরণ করছিল যেহেতু তারা তাকে বিশ্বাস করে নি I তবে পরে কিছু ঘটেছিল যা তাদের মন পরিবর্তন করেছিল কারণ তার ভাইদের মধ্যে দুজন, যাকোব এবং যিহূদা, পরবর্তী সময়ে পত্র লিখেছিল (যাকোব এবং যিহূদা নামে) যা নতুন নিয়মের (ইঞ্জিল) অঙ্গ I কি তাদেরকে পরিবর্তন করেছিল? ঈসা আল মসীহর পুনরুথান I
6 যীশু তাঁর ভাইদের বললেন, ‘আমার নিরূপিত সময় এখনও আসে নি; কিন্তু তোমাদের যাওযার জন্য য়ে কোন সময় সঠিক; এখনই তোমরা য়েতে পার৷
যোহন 7:6-27
7 জগত সংসার তোমাদের ঘৃণা করতে পারে না, কিন্তু আমাকে ঘৃণা করে৷ কারণ পৃথিবীর লোকেরা, যাঁরা মন্দ কাজ করে, সেই সব লোকেদের বিরুদ্ধে আমি সাক্ষ্য দিই৷
8 তোমরা পর্বে যাও, আমি এখন এই উত্সবে যাচ্ছি না, কারণ আমার নিরূপিত সময় এখনও আসে নি৷’
9 এই কথা বলার পর তিনি গালীলেই রয়ে গেলেন৷
10 তাঁর ভাইরা উত্সবে চলে গেল, পরে তিনিও সেখানে গেলেন; কিন্তু তিনি প্রকাশ্যে সেই পর্বে না গিয়ে গোপনে সেখানে গেলেন৷
11 ইহুদী নেতারা উত্সবে এসে তাঁর খোঁজ করতে লাগল৷ তারা বলাবলি করতে লাগল, ‘সেই লোকটা গেল কোথায়?’
12 আর জনতার মধ্যে তাঁকে নিয়ে নানা রকম গুজব ছড়াতে লাগল৷ কেউ কেউ বলল, ‘আরে তিনি খুব ভালো লোক৷’ কিন্তু আবার অন্যরা বলল, ‘না, না, ও লোকদের ঠকাচ্ছে৷’
13 কিন্তু ইহুদী নেতাদের ভয়ে তাঁর বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে চাইল না৷
14 পর্বের আধা-আধি সময়ে যীশু মন্দিরে গিয়ে লোকদের মাঝে শিক্ষা দিতে লাগলেন৷
15 ইহুদীরা এতে খুব আশ্চর্য হয়ে বলল, ‘এই লোক কোন কিছু অধ্যয়ন না করেই কি ভাবে এত সব জ্ঞান লাভ করল?’
16 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি যা শিক্ষা দিই তা আমার নিজস্ব নয়৷ যিনি আমায় পাঠিয়েছেন এসব সেই ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওযা৷
17 যদি কেউ ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করতে চায় তাহলে সে জানবে আমি যা শিক্ষা দিই তা ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে, না আমি নিজের থেকে এসব কথা বলছি৷
18 যদি কেউ নিজের ভাবনার কথা নিজে বলে, তাহলে সে নিজেই নিজেকে সম্মানিত করতে চায়; কিন্তু য়ে তার প্রেরণ কর্তার গৌরব চায়, সেই লোক সত্যবাদী, তার মধ্যে কোন অসাধুতা নেই৷
19 মোশি কি তোমাদের কাছে বিধি-ব্যবস্থা দেন নি? কিন্তু তোমরা কেউই সেই বিধি-ব্যবস্থা পালন কর না৷ তোমরা কেন আমাকে হত্যা করতে চাইছ?’
20 জনতা উত্তর দিল, ‘তোমাকে ভূতে পেয়েছে, কে তোমাকে হত্যা করতে চাইছে?’
21 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি একটা অলৌকিক কাজ করেছি, আর তোমরা সকলে আশ্চর্য হয়ে গেছ৷
22 মোশিও তোমাদের সুন্নতের বিধি-ব্যবস্থা দিয়েছিলেন৷ যদিও মুলতঃ সেই বিধি-ব্যবস্থা মোশির নয় কিন্তু এই বিধি-ব্যবস্থা প্রাচীন পিতৃপুরুষদের কাছ থেকে এসেছে৷ আর তোমরা এমনকি বিশ্রামবারেও শিশুদের সুন্নত করে থাকো৷
23 মোশির বিধি-ব্যবস্থা য়েন লঙঘন করা না হয়, এই যুক্তিতে বিশ্রামবারেও যদি কোন মানুষের সুন্নত করা চলে, তাহলে আমি বিশ্রামবারে একটা মানুষকে সম্পূর্ণ সুস্থ করেছি বলে তোমরা আমার ওপর এত ক্রুদ্ধ হয়েছ কেন?
24 বাহ্যিকভাবে কোন কিছু দেখেই তার বিচার করো না৷ যা সঠিক সেই হিসাবেই ন্যায় বিচার কর৷’
25 তখন জেরুশালেমের লোকেদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, ‘এই লোককেই না ইহুদী নেতারা হত্যা করতে চাইছে?
26 কিন্তু দেখ! এ তো প্রকাশ্যেই শিক্ষা দিচ্ছে; কিন্তু তারা তো এঁকে কিছুই বলছে না৷ এটা কি হতে পারে য়ে নেতারা সত্যিই জানে য়ে, ইনি সেই খ্রীষ্ট?
27 আমরা জানি ইনি কোথা থেকে এসেছেন; কিন্তু মশীহ যখন আসবেন তখন কেউ জানবে না তিনি কোথা থেকে এসেছেন৷’
সেই সময়ে যিহূদিদের মধ্যে বিতর্ক ছিল নবী ঈসা আল মসীহ (পিবিইউএইচ) মসীহ ছিলেন কি না I কতিপয় যিহূদি বিশ্বাস করতেন যে জায়গা থেকে মসীহ আসবেন তা অজানা হবে I যেহেতু তারা জানত তিনি কোথা থেকে এসেছিলেন তারা ভাবল যে অতএব তিনি মসীহ হতে পারেন না I সুতরাং কোথা থেকে তারা এই বিশ্বাস পেল যে মসীহর উৎপত্তি জানা যাবে না? তাউরাত থেকে? নবীদের লেখা থেকে? আদৌ নয়! নবীরা স্পষ্টভাবে বলেছিলেন মসীহ কোথা থেকে আসবেন I 700 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে নবী মীখা (পিবিইউএইচ) লিখেছিলেন যে
2 কিন্তু বৈত্লেহম-ইফ্রাথা, তুমি যিহূদার সবচেয়ে ছোট শহর| তোমার পরিবার গোনার পক্ষে খুবই ছোট| কিন্তু আমার জন্য়ে “ইস্রাযেলের শাসক” তোমার মধ্য থেকেই বেরিয়ে আসবে| তার উত্পত্তি প্রাচীনকাল থেকে বহু প্রাচীনকাল থেকে|
মীখা 5:2
এই ভবিষ্যদ্বাণীটি (আরও বিস্তৃত বিবরণের জন্য এখানে দেখুন) বলেছিলেন যে শাসক (= মসীহ) বেৎলেহেম থেকে আসবেন I আমরা মসীহর জন্মের মধ্যে দেখলাম যে 700 বছর আগে তাঁর জন্মের ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে তিনি বাস্তবিকই বেৎলেহেমে জন্ম গ্রহণ করলেন I
এটি শুধুমাত্র সেই সময়ের ধার্মিক পরম্পরা ছিল যা বলল যে মসীহর আগমনের স্থানটি অজানা হবে I তারা একটি ভুল করল কারণ তারা নবীদের লেখা বিচার না করে পরিবর্তে রাস্তার মতামত দিয়ে, তাদের সময়ের ধারণা দিয়ে – এমনকি ধার্মিক পন্ডিতদের ধারণা সমূহ দিয়ে বিচার করল I আমরা সেই একই ভুল করতে সাহস করব না I
বিবরণটি চলতে থাকে…
27 আমরা জানি ইনি কোথা থেকে এসেছেন; কিন্তু মশীহ যখন আসবেন তখন কেউ জানবে না তিনি কোথা থেকে এসেছেন৷’
যোহন 7:27-39
28 তখন যীশু মন্দিরে শিক্ষা দিতে দিতে বেশ চেঁচিয়ে বললেন, ‘তোমরা আমায় জান, আর আমি কোথা থেকে এসেছি তাও তোমরা জান৷ তবু বলছি, আমি নিজের থেকে আসি নি, তবে যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তিনি সত্য; আর তোমরা তাঁকে জান না৷
29 কিন্তু আমি তাঁকে জানি, কারণ তিনি আমায় পাঠিয়েছেন৷ আমি তাঁরই কাছ থেকে এসেছি৷’
30 তখন তারা তাঁকে গ্রেপ্তার করার জন্য চেষ্টা করতে লাগল৷ তবু কেউ তাঁর গায়ে হাত দিতে সাহস করল না, কারণ তখনও তাঁর সময় আসে নি৷
31 কিন্তু সেই জনতার মধ্যে থেকে অনেকেই তাঁর ওপর বিশ্বাস করল; আর বলল, ‘মশীহ এসে কি তাঁর চেয়েও বেশী অলৌকিক চিহ্ন করবেন?’
32 ফরীশীরা শুনল য়ে সাধারণ লোক যীশুর বিষয়ে চুপি চুপি এই সব আলোচনা করছে৷ তখন প্রধান যাজকেরা ও ফরীশীরা যীশুকে ধরে আনবার জন্য মন্দিরের কয়েকজন পদাতিককে পাঠাল৷
33 তখন যীশু বললেন, ‘আমি আর অল্প কিছুকাল তোমাদের সঙ্গে আছি; তারপর যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর কাছে ফিরে যাব৷
34 তোমরা আমার খোঁজ করবে, কিন্তু আমার খোঁজ পাবে না, কারণ আমি য়েখানে থাকব তোমরা সেখানে আসতে পারো না৷’
35 ইহুদী নেতারা তখন পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, ‘সে এখন কোথায় যাবে য়ে আমরা ওকে খুঁজলেও পাব না? গ্রীকদের শহরে য়ে সব ইহুদীরা বসবাস করছে, ও কি তাদের কাছে যাবে আর সেখানে গিয়ে গ্রীকদেব কাছে শিক্ষা দেবে? নিশ্চয়ই নয়৷
36 ও য়ে কথা বলল তার মানে কি য়ে, ‘তোমরা আমার খোঁজ করবে কিন্তু আমায় পাবে না৷’ আর ‘আমি য়েখানে যাব, তোমরা সেখানে আসতে পার না?’
37 পর্বের শেষ দিন, য়ে দিনটি বিশেষ দিন, সেই দিন যীশু উঠে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়ে বললেন, ‘কারোর যদি পিপাসা পেয়ে থাকে তবে সে আমার কাছে এসে পান করুক৷
38 শাস্ত্রে এ কথা বলে, য়ে আমার ওপর বিশ্বাস করে তার অন্তর থেকে জীবন্ত জলের নদী বইবে৷’
39 যীশু পবিত্র আত্মা সম্পর্কে এই কথা বললেন, ‘সেই পবিত্র আত্মা তখনও দেওযা হয় নি, কারণ যীশু তখনও মহিমান্বিত হন নি; কিন্তু পরে যাঁরা যীশুকে বিশ্বাস করে তারা সেই আত্মা পাবে৷’
উৎসবের এই দিনে যিহূদিরা দক্ষিন যিরূশালেমের একটি বিশেষ ঝর্না থেকে জল নেয় এবং ‘জল দ্বারের’ মধ্য দিয়ে নগরে প্রবেশ করে এবং জলকে মন্দিরের বেদিতে নিয়ে যায় I এটি ছিল যখন তারা তাদের এই পবিত্র জলের অনুষ্ঠানটি করছিলেন তখন ঈসা আল মসীহ (পিবিইউএইচ) চীৎকার করে বললেন, যেমন তিনি আগে বলেছিলেন, যে তিনি জীবন্ত জলের উৎস I এটি বলার দ্বারা তিনি তাদের স্মরণ করাচ্ছেন আমাদের হৃদয়ের মধ্যে তৃষ্ণা পাপের দিকে নিয়ে যায় যার সম্বন্ধে নবীরা লিখেছিলেন I
40 সমবেত জনতা যখন এই কথা শুনল তখন তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, ‘ইনি সত্যিই সেই ভাববাদী৷’
যোহন 7:40-44
41 অন্যরা বলল, ‘ইনি মশীহ (খ্রীষ্ট)৷’এ সত্ত্বেও কেউ কেউ বলল, ‘খ্রীষ্ট গালীলী থেকে আসবেন না৷
42 শাস্ত্রে কি একথা লেখা নেই য়ে খ্রীষ্টকে দাযূদের বংশধর হতে হবে; আর দাযূদ য়ে বৈত্লেহম শহরে থাকতেন, তিনি সেখান থেকে আসবেন?’
43 তাঁর জন্য এইভাবে লোকদের মধ্যে মতভেদের সৃষ্টি হল৷
44 কেউ কেউ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে চাইল; কিন্তু কেউ তাঁর গায়ে হাত দিতে সাহস করল না৷
পিছনে তখন, ঠিক আগের মতন, লোকেরা নবী ঈসা আল মসীহ (পিবিইউএইচ) সম্বন্ধে বিভক্ত ছিল I যেমন আমরা উপরে দেখলাম, নবীরা মসীহর বেৎলেহেমে (যেখানে ঈসা জন্মগ্রহণ করেছিলেন) জন্ম হওয়ার সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করছিলেন I তবে গালীলি থেকে মসীহর না আসার এই প্রশ্নটি সম্বন্ধে কি? 700 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে নবী যিশাইয় (পিবিইউএইচ) লিখেছিলেন যে
ন্তু যে বিপদে পড়েছিল তার জন্য কোন অন্ধকার থাকবে না| লোকরা অতীতে সবূলূন দেশ ও নপ্তালি দেশকে কোন গুরুত্বই দিত না| কিন্তু পরবর্তী-কালে সমুদ্রের নিকটবর্তী দেশ, য়র্দন নদীর অপর পারের দেশ এবং অ-ইহুদীদের মহকুমাটিকে ঈশ্বর খুব মহান করবেন|
যিশাইয় 9:1-2
2 এই সব দেশের লোক অন্ধকারে বাস করত| কিন্তু তারা মহা-আলোকটি দেখতে পাবে| ঐসব লোক কবরের মত অন্ধকার জায়গায় বাস করত| কিন্তু “মহা-আলোক” তাদের ওপর কিরণ দেবে|
নবীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে মসীহ তাঁর শিক্ষাদান (একটি আলোর উন্মেষ হয়েছে) ‘গালীলিতে’ শুরু করবেন – সেই বিশেষ স্থান যেখানে ঈসা বাস্তবিকই তাঁর শিক্ষাদান আরম্ভ করেছিলেন এবং তাঁর অলৌকিক কার্যের বেশির ভাগ সম্পন্ন করেছিলেন I আবার লোকেদের ভুল হল কারণ তারা সতর্কভাবে নবীদের অধ্যয়ন করল না এবং পরিবর্তে যা সাধারণভাবে স্বীকৃত হয়েছিল তার উপর বিশ্বাস করল I
45 তখন মন্দিরের সেই পদাতিকরা, প্রধান যাজক ও ফরীশীদের কাছে ফিরে গেল৷ তাঁরা মন্দিরের সেই পদাতিককে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা তাঁকে ধরে আনলে না কেন?’
যোহন 7:45-52
46 পদাতিকরা বলল, ‘উনি য়ে সব কথা বলছিলেন কোন মানুষ কখনও সেই ধরণের কথা বলেনি!’
47 তখন ফরীশীরা বললেন, ‘তাহলে তোমরাও কি ঠকে গেলে?
48 ফরীশী বা নেতাদের মধ্যে এমন কেউ কি ছিলেন যিনি তাঁর ওপর বিশ্বাস করেছেন?
49 কিন্তু এইসব লোকেরা বিধি-ব্যবস্থার কিছুই জানে না৷ তারা অভিশপ্ত এবং ঈশ্বরের কৃপা থেকে বঞ্চিত৷’
50 তখন এই নেতাদের একজন, নীকদীম তাঁদের বললেন, এই নীকদীম ফরীশীদেরই মধ্যে একজন, ইনি আগে একবার যীশুর কাছে গিয়েছিলেন৷
51 ‘কোন ব্যক্তির কথা না শুনে আমরা আমাদের বিধি-ব্যবস্থায় তার বিচার করতে পারি না৷ সে কি করেছে তা না জেনে আমরা তার বিচার করতে পারি না৷’
52 এর উত্তরে তারা তাকে বলল, ‘তুমি নিশ্চয়ই গালীলী থেকে আসো নি৷ তাই না? শাস্ত্র পড়ে দেখো তাহলে জানবে য়ে গালীলী থেকে কোন ভাববাদীর আবির্ভাব হয় নি৷’
ব্যবস্থার বিশেষজ্ঞরা সম্পূর্ণরূপে ভুল ছিলেন যেহেতু যিশাইয় ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে আলোকিতকরণ ‘গালীলি’ থেকে আসবে I
এই বিবরণ থেকে দুটি পাঠ মনে আসে I প্রথমত অত্যন্ত আগ্রহের সাথে আমাদের ধার্মিক কার্যকলাপ অনুষ্ঠিত করা খুব সহজ তবে অল্প জ্ঞানের সাথে I এই রায়টি কি আমাদের সম্বদ্ধে সত্য?
2 আমি ইহুদীদের বিষয়ে একথা বলতে পারি য়ে ঈশ্বরের বিষয়ে তাদের উত্সাহ আছে; কিন্তু এটা তাদের জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে নেই৷
রোমীয় 10:2
যথোচিতভাবে জ্ঞাত হতে নবীদের লেখাগুলোকে আমাদের শেখা দরকার I
দ্বিতীয়ত, নবী ঈসা আল মসীহ (পিবিইউএইচ) একটি প্রস্তাব দেন I তিনি তাদের হাজ্জে বললেন যে
37 পর্বের শেষ দিন, য়ে দিনটি বিশেষ দিন, সেই দিন যীশু উঠে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়ে বললেন, ‘কারোর যদি পিপাসা পেয়ে থাকে তবে সে আমার কাছে এসে পান করুক৷
যোহন 7:37-38
38 শাস্ত্রে এ কথা বলে, য়ে আমার ওপর বিশ্বাস করে তার অন্তর থেকে জীবন্ত জলের নদী বইবে৷’
এই প্রস্তাবটি ‘যে কোনো কাউকে’ (এইরূপে না কেবল যিহূদিদের, বা খ্রীষ্টানদের ইত্যাদি) দেওয়া হয় যারা ‘তৃষ্ণার্ত হয়’ I আপনি কি তৃষ্ণার্ত? (এখানে) I জ্যামজ্যাম কুয়ো থেকে জল পান করা ভাল I মসীহর থেকেও জল পান করা কেন নয় যিনি আমাদের অন্তরের তৃষ্ণাকে তৃপ্ত করতে পারেন?