Skip to content

দিন 6 – ঈসা আল মসীহ এবং শুভ শুক্রবার

সুরা 62 (সমাবেশ, শুক্রবার – আল-জুমু’আহ আমাদের বলে যে মুসলমানের জন্য প্রার্থনার দিন শুক্রবার I আল-জুমূ’আহ প্রথমে একই চ্যালেঞ্জ দেয় – যেটিকে নবী ঈসা পিবিইউএইচ মসীহ হিসাবে তাঁর ভূমিকার মধ্যে স্বীকার করেছিলেন I শুক্রবারকে প্রার্থনার দিন বলে ঘোষনা করার ঠিক পূর্বে, আল-জুমু’আহ ঘোষনা করল:   

বলুন হে ইহুদীগণ, যদি তোমরা দাবী কর যে, তোমরাই আল্লাহর বন্ধু-অন্য কোন মানব নয়, তবে তোমরা মৃত্যু কামনা কর যদি তোমরা সত্যবাদী হও।তারা নিজেদের কৃতকর্মের কারণে কখনও মৃত্যু কামনা করবে না। আল্লাহ জালেমদের সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন।

সুরা 62 আল- জুমু’আহ: 6-7

জুমু’আহর মধ্যে এই আয়াতগুলোর অর্থ হল যে আমরা আল্লাহর প্রকৃত বন্ধু তাহলে  আমাদের কোনো মৃত্যু ভয় থাকবে না I তবে যেহেতু তাদের (এবং আমরা) মধ্যে আমাদের উত্তম কার্যগুলো সম্বন্ধে সন্দেহ আছে আমরা বড় মূল্য দিয়ে মৃত্যুকে এড়িয়ে চলি I তবে এই শুক্রবারের দিনে – তাঁর শেষ সপ্তাহের ষষ্ঠ দিনে, একজন যিহূদি হিসাবে ঈসা আল মসীহ এই সঠিক পরীক্ষাটির সম্মুখীন হলেন – এবং তিনি এটি প্রার্থনা দিয়ে শুরু করলেন I ইঞ্জিল নবীর সম্পর্কে যেমন ব্যাখ্যা করে:   

  37 এরপর তিনি পিতর ও সিবদিয়ের দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে চলতে থাকলেন৷ য়েতে য়েতে তাঁর মন উদ্বেগ ও ব্যথায় ভরে গেল, তিনি অভিভূত হয়ে পড়লেন৷
38 তখন তিনি তাদের বললেন, ‘দুঃখে আমার হৃদয় ভেঙ্গে যাচ্ছে৷ তোমরা এখানে থাক আর আমার সঙ্গে জেগে থাকো৷’
39 পরে তিনি কিছু দূরে গিয়ে মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে প্রার্থনা করে বললেন, ‘আমার পিতা, যদি সন্ভব হয় তবে এই কষ্টের পানপাত্র আমার কাছ থেকে দূরে যাক; তবু আমার ইচ্ছামতো নয়, কিন্তু তোমারই ইচ্ছা পূর্ণ হোক্৷’

মথি 26:37-39

এই শুক্রবারের ঘটনাগুলোকে চালিয়ে যাওয়ার পূর্বে, আমরা এই শুক্রবারের প্রার্থনার অভিমুখে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাগুলোকে পর্যালোচনা করব I আমাদের প্রকাশ্য শত্রু, শয়তান পঞ্চম দিনে নবী ঈসা আল মসীহকে পিবিইউএইচ বিশ্বাসঘাতকতা করতে যুদার ভেতরে প্রবেশ করল I ষষ্ঠ দিনের পরবর্তী সন্ধ্যায় নবী তার শেষ নৈশ ভোজ তার সঙ্গীদের (তাঁর শিষ্য বলেও ডাকা হয়) সাথে ভাগ করলেন I সেই ভোজনে তিনি উদাহরণ এবং শিক্ষার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করলেন কিভাবে আমাদের একে অপরকে প্রেম করা উচিত এবং আমাদের জন্য ঈশ্বরের মহান প্রেম সম্পর্কে I ঠিক কিভাবে তিনি এটি করলেন তা ইঞ্জিল থেকে এখানে বর্ণনা করা হয়েছে I তারপরে তিনি সকল বিশ্বাসীদের জন্য প্রার্থনা করলেন – যাকে আপনি এখানে পড়তে পারেন I     

তাঁর শুক্রবারের প্রার্থনার পরে যা ঘটল সেই সম্বন্ধে ইঞ্জিল বর্ণনা করে:

বাগানের মধ্যে গ্রেফতার

  ই প্রার্থনার পর যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে কিদ্রোণ উপত্যকার ওপারে চলে গেলেন৷ সেখানে একটি বাগান ছিল৷ যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে সেই বাগানের মধ্যে ঢুকলেন৷
2 যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে প্রায়ই সেখানে আসতেন৷ এইজন্য যিহূদা সেই স্থানটি জানত৷ এই যিহূদা যীশুর সঙ্গে প্রতারণা করেছিল৷
3 সে ফরীশীদের ও প্রধান যাজকদের কাছ থেকে একদল সৈনিক ও কিছু রক্ষী নিয়ে সেখানে এল৷ তাদের হাতে ছিল মশাল, লন্ঠন ও নানা অস্ত্র৷
4 তখন যীশু, তাঁর প্রতি কি ঘটতে চলেছে সে সবই তাঁর জানা থাকার ফলে এগিয়ে গিয়ে বললেন, ‘তোমরা কাকে খুঁজছ?’
5 তারা তাঁকে বলল, ‘নাসরতীয় যীশুকে৷’যীশু বললেন, ‘আমিই তিনি৷’ য়ে যিহূদা যীশুর বিরুদ্ধে গিয়েছিল সেও তাদেরই সঙ্গে সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল৷
6 তিনি যখন তাদের বললেন, ‘আমিই তিনি৷’ তখন তারা পিছু হটে গিয়ে মাটিতে পড়ে গেল৷
7 তাই আবার একবার তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা কাকে খুঁজছ?’তারা বলল, ‘নাসরতীয় যীশুকে৷’
8 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘আমি তো তোমাদের আগেই বলেছি, ‘আমিই তিনি৷’ সুতরাং যদি তোমরা আমাকেই খুঁজছ, তাহলে এদের য়েতে দাও৷’
9 এটা ঘটল যাতে তাঁর আগের বক্তব্য যথার্থ প্রতিপন্ন হয়, ‘তুমি আমায় যাদের দিয়েছ তাদের কাউকে আমি হারাই নি৷’
10 তখন শিমোন পিতরের কাছে একটা তরোয়াল থাকায় তিনি সেটা টেনে বের করে মহাযাজকের চাকরকে আঘাত করে তার ডান কান কেটে ফেললেন৷ সেই চাকরের নাম মল্ক৷
11 তখন যীশু পিতরকে বললেন, ‘তোমার তরোযাল খাপে ভরো, য়ে পানপাত্র পিতা আমায় দিয়েছেন, আমাকে তা পান করতেই হবে৷’
12 এরপর সৈন্যরা ও তাদের সেনাপতি এবং ইহুদী রক্ষীরা যীশুকে গ্রেপ্তার করে বেঁধে প্রথমে হাননের কাছে নিয়ে গেল৷
13 সেই বছর যিনি মহাযাজক ছিলেন৷ সেই কায়াফার শ্বশুর এই হানন৷

যোহন 18:1-13

যিরূশালেমের ঠিক বাইরে নবী বাগানের মধ্যে প্রার্থনা করতে গেলেন I সেখানে যুদাস তাকে গ্রেফতার করার জন্য সৈন্যদের নিয়ে এল I আমাদের যদি  গ্রেফতারের সম্মুখীন হতে হয় তবে আমরা হয়ত সংঘর্ষ করতে, দৌড়াতে বা লুকোতে চেষ্টা করি I কিন্তু নবী ঈসা আল মসীহ পিবিইউএইচ সংঘর্ষ বা দৌড় কিছুই করেন নি I তিনি খুব স্পষ্টভাবে স্বীকার করলেন যে র্তিনিই বাস্তবিক  সেই নবী যাকে তারা খুঁজছে I তাঁর স্পষ্ট স্বীকারোক্তি (“আমিই সে”) সৈন্যদের হতচকিত করল এবং তাঁর সঙ্গীরা পলায়ন করল I নবী গ্রেফতার হতে সমর্পণ করলেন এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে হাননের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হ’ল I 

প্রথম জিজ্ঞাসাবাদ

নবীকে সেখানে কিভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল ইঞ্জিল তা লিপিবদ্ধ করে:

  19 এরপর মহাযাজক যীশুকে তাঁর শিষ্যদের বিষয়ে ও তাঁর শিক্ষার বিষয়ে প্রশ্ন করতে লাগলেন৷
20 যীশু এর উত্তরে তাঁকে বললেন, ‘আমি সর্বদাই সকলের কাছে প্রকাশ্যে কথা বলেছি৷ আমি মন্দিরের মধ্যে ও সমাজ-গৃহেতে য়েখানে ইহুদীরা একসঙ্গে সমবেত হয় সেখানে সব সময় শিক্ষা দিয়েছি৷ আর আমি কখনও কোন কিছু গোপনে বলিনি৷
21 তোমরা আমায় কেন সে বিষয়ে প্রশ্ন করছ? যাঁরা আমার কথা শুনেছে তাদেরই জিজ্ঞেস কর আমি তাদের কি বলেছি৷ আমি কি বলেছি তারা নিশ্চয়ই জানবে!’
22 তিনি যখন একথা বলছেন, তখন সেই মন্দির রক্ষীবাহিনীর একজন য়ে সেখানে দাঁড়িয়েছিল সে যীশুকে এক চড় মেরে বলল, ‘তোর কি সাহস, তুই মহাযাজককে এরকম জবাব দিলি!’
23 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, ‘আমি যদি অন্যায় কিছু বলে থাকি, তবে সকলকে বল কি অন্যায় বলেছি; কিন্তু আমি যদি সত্যি কথা বলে থাকি তাহলে তোমরা আমায় মারছ কেন?’
24 এরপর হানন, যীশুকে মহাযাজক কায়াফার কাছে পাঠিয়ে দিলেন৷ যীশু তখনও বাঁধা অবস্থায় ছিলেন৷

যোহন 18:19-24

নবী ঈসা আল মসীহকে পিবিইউএইচ পূর্ব মহা যাজকের থেকে সেই বছরের মহা যাজকের কাছে এক দ্বিতীয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো হ’ল I   

দ্বিতীয় জিজ্ঞাসাবাদ

সেখানে তাঁকে সমস্ত নেতাদের সামনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে I ইঞ্জিল এই আরও  জিজ্ঞাসাবাদকে লিপিবদ্ধ করে:

  53 তখন তারা যীশুকে মহাযাজকের কাছে নিয়ে এল৷ প্রধান যাজকরা, বয়স্ক ইহুদী নেতারা এবং ব্যবস্থার শিক্ষকরা সকলে এক জায়গায় জড়ো হলেন৷
54 আর পিতর দূরে দূরে থেকে যীশুর পেছনে য়েতে য়েতে মহাযাজকের উঠোন পর্যন্ত গেলেন এবং রক্ষীদের সঙ্গে বসে আগুন পোহাতে লাগলেন৷
55 তখন প্রধান যাজকরা এবং মহাসভার সকলেই এমন একজন সাক্ষী খুঁজছিলেন যার কথার জোরে যীশুকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা যায়; কিন্তু তেমন সাক্ষ্য তারা পেলেন না৷
56 কারণ অনেকে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী দিল বটে কিন্তু তাদের সাক্ষ্য মিলল না৷
57 তখন কিছু লোক তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে বলল,
58 ‘আমরা তাঁকে বলতে শুনেছি, ‘মানুষের হাতে তৈরী এই মন্দিরটি ভেঙ্গে ফেলব এবং তিন দিনের মধ্যে মানুষের হাত দিয়ে তৈরী নয় এমনই একটি মন্দির আমি গড়ে তুলব৷”
59 কিন্তু এতেও তাদের সাক্ষ্যের প্রমাণ মিলল না৷
60 তখন মহাযাজক সকলের সামনে দাঁড়িয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি কিছুই উত্তর দেবে না? এই সমস্ত লোকরা তোমার বিরুদ্ধে কি সাক্ষ্য দিচ্ছে?’
61 কিন্তু তিনি চুপচাপ থাকলেন, কোন উত্তর দিলেন না৷ আবার মহাযাজক তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি সেই পরম খ্রীষ্ট পরম ধন্য, ঈশ্বরের পুত্র?’
62 যীশু বললেন, ‘হ্যাঁ, আমিই ঈশ্বরের পুত্র৷ তোমরা একদিন মানবপুত্রকে ঈশ্বরের ডানপাশে বসে থাকতে আকাশের মেঘে আবৃত হয়ে আসতে দেখবে৷’
63 তখন মহাযাজক তাঁর পোশাক ছিঁড়ে বললেন, ‘আমাদের সাক্ষীর আর কি প্রযোজন?
64 তোমরা তো ঈশ্বর নিন্দা শুনলে৷ তোমাদের কি মনে হয়?’ তারা সকলে তাঁকে দোষী স্থির করে বলল, ‘এঁর মৃত্যুদণ্ড হওযা উচিত৷’
65 তখন কেউ কেউ তাঁর মুখে থুথু ছিটিয়ে দিল, তাঁর মুখ ঢেকে ঘুষি মারল এবং বলতে লাগল, ‘ভাববাণী করে বল তো, কে তোমাকে ঘুষি মারল?’ পরে রক্ষীরা তাঁকে মারতে মারতে নিয়ে গেল৷

মার্ক 14:53-65

যিহূদি নেতারা নবী ঈসা আল মসীহকে মৃত্যু দণ্ডে দণ্ডিত করল I তবে যেহেতু যিরূশালেম রোমের দ্বারা শাসিত হত, একটি মৃত্যুদন্ড কেবলমাত্র রোমীয় অধ্যক্ষ দ্বারা অনুমোদিত হতে পারত I অতএব তারা নবীকে রোমীয় অধ্যক্ষ পন্তীয় পীলাতের কাছে নিয়ে গেল I ইঞ্জিল আবারও লিপিবদ্ধ করে সেই একই সময়ে যুদাস ইস্করিতীয়র সাথে কি ঘটল, একজন যে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল I   

বিশ্বাসঘাতক যুদাসের প্রতি কি ঘটল?

  র হলে প্রধান যাজকরা ও সমাজপতিরা সবাইমিলেযীশুকে হত্যা করার চক্রান্ত করল৷
2 তারা তাঁকে বেঁধে রোমীয় রাজ্যপাল পীলাতের কাছে হাজির করল৷
3 যীশুকে শত্রুদের হাতে য়ে ধরিয়ে দিয়েছিল, সেই যিহূদা যখন দেখল যীশুকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তখন তার মনে খুব ক্ষোভ হল৷ সে তখন যাজকদের ও সমাজপতিদের কাছে গিয়ে সেই ত্রিশটা রূপোর টাকা ফিরিয়ে দিয়ে বলল,
4 ‘একজন নিরপরাধ লোককে হত্যা করার জন্য আপনাদের হাতে তুলে দিয়ে তাঁর প্রতি আমি বিশ্বাসঘাতকতা করেছি, আমি মহাপাপ করেছি৷ইহুদী নেতারা বলল, ‘তাতে আমাদের কি? তুমি বোঝগে যাও৷’
5 তখন যিহূদা সেই টাকা মন্দিরের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দিল, পরে বাইরে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে মরল৷
6 প্রধান যাজকরা সেইরূপোর টাকাগুলি কুড়িয়ে নিয়ে বললেন, ‘মন্দিরের তহবিলে এই টাকা জমা করা আমাদের বিধি-ব্যবস্থা বিরুদ্ধ কাজ, কারণ এটা খুনের টাকা৷’
7 তাই তারা পরামর্শ করে ঐ টাকায় কুমোরদের একটা জমি কিনলেন৷ য়েন জেরুশালেমে য়েসব বিদেশী মারা যাবে, তাদের সেখানে কবর দেওযা য়েতে পারে৷
8 সেই জন্য ঐ কবরখানাকে আজও লোকে ‘রক্তক্ষেত্র’ বলে৷

মথি 27:1-8

রোমীয় অধ্যক্ষের দ্বারা ঈসা আল মসীহকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হ’ল

  11 এদিকে যীশুকে রাজ্যপালের সামনে হাজির করা হল; রাজ্যপাল যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি ইহুদীদের রাজা?’যীশু বললেন, ‘হ্যাঁ, আপনি য়েমন বললেন৷’
12 কিন্তু প্রধান যাজকরা ও ইহুদী নেতারা সমানে যখন তাঁর বিরুদ্ধে দোষ দিচ্ছিল, তখন তিনি তার একটারও জবাব দিলেন না৷
13 তখন পীলাত তাঁকে বললেন, ‘ওরা, তোমার বিরুদ্ধে কত দোষ দিচ্ছে, তুমি কি শুনতে পাচ্ছ না?’
14 কিন্তু যীশু তাঁকে কোন জবাব দিলেন না, এমন কি তাঁর বিরুদ্ধে একটা অভিযোগেরও উত্তর দিলেন না, এতে পীলাত আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷
15 রাজ্যপালের রীতি অনুসারে প্রত্যেক নিস্তারপর্বের সময় জনসাধারণের ইচ্ছানুযাযী য়ে কোন কয়েদীকে তিনি মুক্ত করে দিতেন৷
16 সেই সময় বারাব্বানামে এক কুখ্যাত আসামী কারাগারে ছিল৷
17 তাই লোকরা সেখানে একসঙ্গে জড়ো হলে পীলাত তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমাদের জন্য আমি কাকে ছেড়ে দেব? তোমরা কি চাও, বারাব্বাকে বা যীশু, যাকে খ্রীষ্ট বলে তাকে?’
18 কারণ পীলাত জানতেন, তারা যীশুর ওপর ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে তাঁকে ধরিয়ে দিয়েছিল৷
19 পীলাত যখন বিচার আসনে বসে আছেন, সেই সময় তাঁর স্ত্রী তাঁকে বলে পাঠালেন, ‘ঐ নির্দোষ লোকটির প্রতি তুমি কিছু করো না, কারণ রাত্রে স্বপ্নে আমি তাঁর বিষয়ে যা দেখেছি তাতে আজ বড়ই উদ্বেগে কাটছে৷’
20 কিন্তু প্রধান যাজকরা ও ইহুদী নেতারা জনতাকে প্ররোচনা দিতে লাগল, য়েন তারা বারাব্বাকে ছেড়ে দিতে ও যীশুকে মৃত্যুদণ্ড দেওযার কথা বলে৷
21 তখন রাজ্যপাল তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই দুজনের মধ্যে তোমরা কাকে চাও য়ে আমি তোমাদের জন্য ছেড়ে দিই?’ তারা বলল, ‘বারাব্বাকে!’
22 পীলাত তখন তাদের বললেন, ‘তাহলে যীশু যাকে মশীহ বলে তাকে নিয়ে কি করব?’তারা সবাইবলল, ‘ওকে ক্রুশে দেওযা হোক৷’
23 পীলাত বললেন, ‘কেন? ও কি অন্যায় করেছে?’ কিন্তু তারা তখন আরো জোরে চিত্‌কার করতে লাগল, ‘ওকে ক্রুশে দাও, ক্রুশে দাও!’
24 পীলাত যখন দেখলেন য়ে তাঁর চেষ্টার কোন ফল হল না, বরং আরো গোলমাল হতে লাগল, তখন তিনি জল নিয়ে লোকদের সামনে হাত ধুয়ে বললেন, ‘এই লোকের রক্তপাতের জন্য আমি দাযী নই৷’ এটা তোমাদেরইদায়৷
25 এই কথার জবাবে লোকেরা সমস্বরে বলল, ‘আমরা ও আমাদের সন্তানরা ওব রক্তের জন্য দাযী থাকব৷’
26 তখন পীলাত তাদের জন্য বারাব্বাকে ছেড়ে দিলেন; কিন্তু যীশুকে চাবুক মেরে ক্রুশে দেবার জন্য সঁপে দিলেন৷

মথি 27:11-26

নবী ঈসা আল মসীহর ক্রুশারোপন, মৃত্যু এবং সমাধি  

ইঞ্জিল তখন অনেক বিস্তৃত ভাবে লিপিবদ্ধ করে কিভাবে নবী ঈসা আল মসীহকে ক্রুশবিদ্ধ করা হ’ল I এখানে বিবরণটি রয়েছে:

  27 এরপর রাজ্যপালের সেনারা যীশুকে রাজভবনের সভাগৃহে নিয়ে গিয়ে সেখানে সমস্ত সেনাদলকে তাঁর চারধারে জড়ো করল৷
28 তারা যীশুর পোশাক খুলে নিল, আর তাঁকে একটা লাল রঙের পোশাক পরাল৷
29 পরে কাঁটা লতা দিয়ে একটা মুকুট তৈরী করে তা তাঁর মাথায় চেপে বসিয়ে দিল, আর তাঁর ডান হাতে একটা লাঠি দিল৷ পরে তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে তাঁকে ঠাট্টা করে বলল, ‘ইহুদীদের রাজা, দীর্ঘজীবি হোন্!’
30 তারা তাঁর মুখে থুথু দিল ও তাঁর লাঠিটি নিয়ে তাঁর মাথায় মারতে লাগল৷
31 এইভাবে তাঁকে বিদ্রূপ করবার পর তারা সেইপোশাকটি তাঁর গা থেকে খুলে নিয়ে তাঁর নিজের পোশাক আবার পরিয়ে দিল, তারপর তাঁকে ক্রুশে দেবার জন্য নিয়ে চলল৷
32 সৈন্যরা যখন যীশুকে নিয়ে নগরের বাইরে যাচ্ছে, তখন পথে শিমোন নামে কুরীশীয় অঞ্চলের একজন লোককে দেখতে পেয়ে যীশুর ক্রুশ বইবার জন্য তাকে তারা জোর করে বাধ্য করল৷
33 পরে তারা ‘গলগথা’ নামে এক জায়গায় এসে পৌঁছল৷ ‘গলগথা’ শব্দটির অর্থ ‘মাথার খুলিস্থান৷’
34 সেখানে পৌঁছে তারা যীশুকে মাদক দ্রব্য মেশানো তিক্ত দ্রাক্ষারস পান করতে দিল; কিন্তু তিনি তা সামান্য আস্বাদ করে আর খেতে চাইলেন না৷
35 তারা তাঁকে ক্রুশে দিয়ে তাঁর জামা কাপড় খুলে নিয়ে ঘুঁটি চেলে সেগুলো নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিল৷
36 আর সেখানে বসে যীশুকে পাহারা দিতে লাগল৷
37 তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের এই লিপি ফলকটি তাঁর মাথার উপরে ক্রুশে লাগিয়ে দিল, ‘এ যীশু, ইহুদীদের রাজা৷’
38 তারা দুজন দস্যুকেও যীশুর সঙ্গে ক্রুশে দিল, একজনকে তাঁর ডানদিকে ও অন্যজনকে তাঁর বাঁ দিকে৷
39 সেই সময় ঐ রাস্তা দিয়ে য়ে সব লোক যাতাযাত করছিল, তারা তাদের মাথা নেড়ে তাঁকে ঠাট্টা করে বলল,
40 ‘তুমি না মন্দির ভেঙ্গে আবার তা তিন দিনের মধ্যে তৈরী করতে পার! তাহলে এখন নিজেকে রক্ষা কর৷ তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও তবে ক্রুশ থেকে নেমে এস৷’
41 সেইভাবেই প্রধান যাজকরা, ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ইহুদী নেতারা বিদ্রূপ করে তাঁকে বলতে লাগলেন,
42 ‘এ লোক তো অপরকে রক্ষা করত, কিন্তু এ নিজেকে বাঁচাতে পারে না! ও তো ইস্রায়েলের রাজা, তাহলে এখন ও ক্রুশ থেকে নেমে আসুক, তাহলে আমরা ওর ওপর বিশ্বাস করব৷
43 ঐ লোকটি ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস করে৷ যদি তিনি চান, তবে ওকে এখনই রক্ষা করুন, কারণ ও তো বলেছে, ‘আমি ঈশ্বরের পুত্র৷'”
44 তাঁর সঙ্গে য়ে দুজন দস্যুকে ক্রুশে দেওযা হয়েছিল, তারাও সেইভাবেই তাঁকে বিদ্রূপ করতে লাগল৷
45 সেই দিন দুপুর বারোটা থেকে বেলা তিনটে পর্যন্ত সমস্ত দেশ অন্ধকারে ঢেকে রইল৷
46 প্রায় তিনটের সময় যীশু খুব জোরে বলে উঠলেন, ‘এলি, এলি লামা শবক্তানী?’ যার অর্থ, ‘ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, তুমি কেন আমায় ত্যাগ করেছ?’
47 যাঁরা সেখানে দাঁড়িয়েছিল, তাদের মধ্যে কয়েকজন একথা শুনে বলতে লাগল, ‘ও এলীয়কে ডাকছে৷’
48 তাদের মধ্যে একজন তখনই দৌড়ে গিয়ে একটা স্পঞ্জ কতকটা সিরকায় ডুবিয়ে দিয়ে একটা নলের মাথায় সেটা লাগিয়ে তা যীশুর মুখে তুলে ধরে তাকে খেতে দিল৷
49 কিন্তু অন্যরা বলতে লাগল, ‘ছেড়ে দাও, দেখি এলীয় ওকে রক্ষা করতে আসেন কি না?’
50 পরে যীশু আর একবার খুব জোরে চিত্‌কার করে প্রাণ ত্যাগ করলেন৷
51 সঙ্গে সঙ্গে মন্দিরের মধ্যেকার সেই ভারী পর্দাটা ওপর থেকে নীচ পর্যন্ত চিরে দুভাগ হয়ে গেল, পৃথিবী কেঁপে উঠল, বড় বড় পাথরের চাঁই ফেটে গেল,
52 সমাধিগুহাগুলি খুলে গেল, আর মারা গিয়েছিলেন এমন অনেক ঈশ্বরের লোকের দেহ পুনরুত্থিত হল৷
53 যীশুর পুনরুত্থানের পর এরা কবর ছেড়ে পবিত্র নগর জেরুশালেমে গিয়ে বহুলোককে দেখা দিয়েছিলেন৷
54 ক্রুশের পাশে শতপতি ও তার সঙ্গে যাঁরা যীশুকে পাহারা দিচ্ছিল, তারা ভূমিকম্প ও অন্য সব ঘটনা দেখে ভীষণ ভয় পেয়ে বলল, ‘সত্যইইনি ঈশ্বরের পুত্র ছিলেন৷’
55 সেখানে বহু স্ত্রীলোক ছিলেন, যাঁরা দূরে দাঁড়িয়ে সব কিছু দেখছিলেন৷ এই মহিলারা গালীল থেকে যীশুর দেখাশোনার জন্য তাঁর সঙ্গে এসেছিলেন৷
56 তাঁদের মধ্যে ছিলেন মগ্দলীনী মরিয়ম, যাকোব ও য়োষেফের মা মরিয়ম আর যাকোব ও য়োহনেরমা৷
57 সন্ধ্যা নেমে আসছে এমন সময় আরিমাথিযার য়োষেফ নামে এক ধনী ব্যক্তি জেরুশালেমে এলেন; তিনিও যীশুর একজন অনুগামী ছিলেন৷
58 পীলাতের কাছে গিয়ে য়োষেফ যীশুর দেহটা চাইলেন৷ তখন পীলাত তাকে তা দিতে হুকুম করলেন৷
59 য়োষেফ দেহটি নিয়ে পরিষ্কার একটা কাপড়ে জড়ালেন৷
60 তারপর সেই দেহটা নিয়ে তিনি নিজের জন্য পাহাড়ের গায়ে য়ে নতুন সমাধিগুহা কেটে রেখেছিলেন, তাতে রাখলেন৷ পরে সেই সমাধির মুখ বন্ধ করতে বড় একটা পাথর গড়িয়ে নিয়ে গিয়ে তা বন্ধ করে দিয়ে চলে গেলেন৷
61 মরিয়ম মগ্দলীনী ও সেই অন্য মরিয়ম কবরের সামনে বসে রইলেন৷
62 পরের দিন, যখন শুক্রবার শেষ হল, অর্থাত্ প্রস্তুতি পর্বের পরের দিন, প্রধান যাজকরা ও ফরীশীরা গিয়ে পীলাতের সঙ্গে দেখা করল৷
63 তারা বলল, ‘হুজুর, আমাদের মনে পড়ছে সেই প্রতারক তাঁর জীবনকালে বলেছিল, ‘আমি তিনদিন পরে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হব৷’
64 তাই আপনি হুকুম দিন য়েন তিন দিন কবরটা পাহারা দেওযা হয়, তা না হলে ওর শিষ্যরা হয়তো এসে দেহটা চুরি করে নিয়ে গিয়ে বলবে, তিনি মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন; তাহলে প্রথমটার চেয়ে শেষ ছলনাটা আরো খারাপ হবে৷’
65 পীলাত তাদের বললেন, ‘তোমাদের কাছে পাহারা দেবার লোক আছে, তোমরা গিয়ে যত ভালভাবে পারো পাহারা দেবার ব্যবস্থা কর৷’

মথি 27:27-56

নবীর মৃত্যুর মুহুর্তে সুরা আজ-যিলযালের (সুরা 99 – ভূমিকম্প) মতন একই বর্ণনা সহ ইঞ্জিল পৃথিবীর কাঁপুনি, পাথরের বিভাজন এবং সমাধির উন্মোচনের বর্ণনা করে I  

যখন পৃথিবী তার কম্পনে প্রকম্পিত হবে,যখন সে তার বোঝা বের করে দেবে।এবং মানুষ বলবে, এর কি হল ?সেদিন সে তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে,কারণ, আপনার পালনকর্তা তাকে আদেশ করবেন।সেদিন মানুষ বিভিন্ন দলে প্রকাশ পাবে, যাতে তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম দেখানো হয়।

সুরা আজ-যিলযাল 99:1-6

1 যখন পৃথিবী তার কম্পনে প্রকম্পিত হবে, 2 যখন সে তার বোঝা বের করে দেবে। 3 এবং মানুষ বলবে, এর কি হল ? 4 সেদিন সে তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে, 5 কারণ, আপনার পালনকর্তা তাকে আদেশ করবেন। 6 সেদিন মানুষ বিভিন্ন দলে প্রকাশ পাবে, যাতে তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম দেখানো হয়

সুরা যিলযাল বিচারের দিনের প্রত্যাশা করে I ঈসা আল মসীহর মৃত্যুর বিস্তৃত বিবরণ যিলযালের অনুরূপ একটি চিহ্ন স্বরূপ যে তার মৃত্যু সেই আসন্ন দিনের জন্য প্রয়োজনীয় মূল্য ছিল I

তাঁর ‘পার্শ্ব দিকে’ ছিদ্র করা হ’ল

যোহনের সুসমাচার ক্রুশারোপনের মধ্যে একটি আকর্ষনীয় বিবরণ লিপিবদ্ধ   করে I এটি ব্যক্ত করে:

  31 ঐ দিনটা ছিল আযোজনের দিন৷ য়েহেতু বিশ্রামবার একটি বিশেষ দিন, ইহুদীরা চাইছিল না য়ে দেহগুলি ক্রুশের ওপরে থাকে৷ তাই ইহুদীরা পীলাতের কাছে গিয়ে তাঁকে আদেশ দিতে অনুরোধ করল, য়েন ক্রুশবিদ্ধ লোকদের পা ভেঙ্গে দেওযা হয় যাতে তাড়াতাড়ি তাদের মৃত্যু হয় এবং মৃতদেহগুলি ঐ দিনই ক্রুশ থেকে নামিয়ে ফেলা যায়৷
32 সুতরাং সেনারা এসে প্রথম লোকটির পা ভাঙ্গল, আর তার সঙ্গে যাকে ক্রুশে দেওযা হয়েছিল তারও পা ভাঙ্গল৷
33 কিন্তু তারা যীশুর কাছে এসে দেখল য়ে তিনি মারা গেছেন, তখন তাঁর পা ভাঙ্গল না৷
34 কিন্তু একজন সৈনিক যীশুর পাঁজরের নীচে বর্শা দিয়ে বিদ্ধ করল, আর সঙ্গে সঙ্গে সেখান দিয়ে রক্ত ও জল বেরিয়ে এল৷
35 এই ঘটনা য়ে দেখল সে এবিষয়ে সাক্ষ্য দিল তা আপনারা সকলেই বিশ্বাস করতে পারেন, আর তার সাক্ষ্য সত্য৷ আর সে জানে য়ে সে যা বলছে তা সত্য৷
36 এই সকল ঘটনা ঘটল যাতে শাস্ত্রের এই কথা পূর্ণ হয়: ‘তাঁর একটি অস্থিও ভাঙ্গবে না৷’
37 আবার শাস্ত্রে আর এক জায়গায় আছে, ‘তারা যাঁকে বিদ্ধ করেছে তাঁরই দিকে দৃষ্টিপাত করবে৷’

যোহন 1:31-37

যোহন দেখলেন রোমীয় সৈন্যরা একটি বর্শা দিয়ে ঈসা আল মসীহর পার্শ্ব দিক ছিদ্র করল I রক্ত বেরিয়ে এল এবং জল আলাদা হয়ে গেল, সংকেত দেয় যে নবী হৃদয় যন্ত্রের ব্যর্থতায় মারা গিয়েছিলেন I 

সেই দিনের একটি চূড়ান্ত ঘটনা সম্পর্কে ইঞ্জিল লিপিবদ্ধ করে – সমাধি কার্য I  

  57 সন্ধ্যা নেমে আসছে এমন সময় আরিমাথিযার য়োষেফ নামে এক ধনী ব্যক্তি জেরুশালেমে এলেন; তিনিও যীশুর একজন অনুগামী ছিলেন৷
58 পীলাতের কাছে গিয়ে য়োষেফ যীশুর দেহটা চাইলেন৷ তখন পীলাত তাকে তা দিতে হুকুম করলেন৷
59 য়োষেফ দেহটি নিয়ে পরিষ্কার একটা কাপড়ে জড়ালেন৷
60 তারপর সেই দেহটা নিয়ে তিনি নিজের জন্য পাহাড়ের গায়ে য়ে নতুন সমাধিগুহা কেটে রেখেছিলেন, তাতে রাখলেন৷ পরে সেই সমাধির মুখ বন্ধ করতে বড় একটা পাথর গড়িয়ে নিয়ে গিয়ে তা বন্ধ করে দিয়ে চলে গেলেন৷
61 মরিয়ম মগ্দলীনী ও সেই অন্য মরিয়ম কবরের সামনে বসে রইলেন৷

মথি 27:57-61

দিন 6 – শুভ শুক্রবার

যিহূদি ক্যালেন্ডারের প্রত্যেকটি দিন সূর্যাস্ত দিয়ে শুরু হয় I যাতে করে সপ্তাহের ষষ্ঠ দিনটি তাঁর শিষ্যদের সাথে নবীর শেষ নৈশ ভোজ দিয়ে আরম্ভ হল I দিনের শেষে তাঁকে গ্রেফতার করা হ’ল, অনেক বার বিচারে রাখা হ’ল, ক্রুশারোপন করা হ’ল, একটি বর্শা দিয়ে ছিদ্র করা হ’ল এবং সমাধিস্থ করা  হ’ল I এই দিনটিকে প্রায়শই ‘শুভ শুক্রবার’ বলে উল্লেখ করা হয় I সেটি প্রশ্নকে উত্থাপন করে: কিভাবে বিশ্বাসঘাতকতা, অত্যাচার এবং একজন নবীর মৃত্যুকে ‘শুভ’ বলে কখনও উল্লেখ করা যেতে পারে? কেন শুভ শুক্রবার এবং ‘খারাপ শুক্রবার’ নয়?          

এটি একটি বড় প্রশ্ন যেটিকে পরবর্তী দিনগুলোতে ইঞ্জিলের বিবরণ চলতে থাকার দ্বারা আমরা উত্তর দিই I তবে একটি সূত্রকে দেখতে পাওয়া যায় আমরা যদি কালপঞ্জির মধ্যে লক্ষ্য করি এই শুক্রবার নীসন 14 তারিখের পবিত্র দিন ছিল, সেই একই নিস্তারপর্বের দিন যখন যিহূদিরা মিশরে 1500 বছর পূর্বে মৃত্যু থেকে  তাদের উদ্ধারের জন্য একটি মেষশাবক বলি দিয়েছিল I   

দিন 6 – তাওরাতের নিয়মাবলীর তুলনায় ঈসা আল মসীহর জীবনের শেষ সপ্তাহের – শুক্রবার 

মানুষদের বেশিরভাগ বিবরণ সমূহ তাদের মৃত্যুতে শেষ হয়, তবে ইঞ্জিল চলতে থাকে যাতে আমরা বুঝতে পারি কেন এই দিনটিকে সর্বদা শুভ শুক্রবার বলে ভাবা যেতে পারে I পরের দিনটি ছিল বিশ্রাম বার – সপ্তম দিন I

তবে প্রথমে আমাদের অধ্যয়ন করা আয়াত থেকে শুরু করে সুরা আল-জুমু’আহর দিকে ফেরা যাক I

 বলুন, তোমরা যে মৃত্যু থেকে পলায়নপর, সেই মৃত্যু অবশ্যই তোমাদের মুখামুখি হবে, অতঃপর তোমরা অদৃশ্য, দৃশ্যের জ্ঞানী আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন সেসব কর্ম, যা তোমরা করতে।মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।

সুরা 62 আল-জুমু’আহ: 8-9

বলুন, তোমরা যে মৃত্যু থেকে পলায়নপর, সেই মৃত্যু অবশ্যই তোমাদের মুখামুখি হবে, অতঃপর তোমরা অদৃশ্য, দৃশ্যের জ্ঞানী আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন সেসব কর্ম, যা তোমরা করতে। 9 মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।

ঈসা আল মসীহ সুরা আল-জুম্মু’আহর আয়াত 6 এবং 7 এর চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করে, মৃত্যুর থেকে পলায়ন করেন নি, তবে প্রার্থনার সঙ্গে শুরু করে এই মহান পরীক্ষার মুখোমুখি হলেন, প্রমাণ করলেন তিনি একজন ‘ঈশ্বরের বন্ধু’ I এটি কি যথোচিত  নয়, তখন, তাঁর সাহসিকতার স্মরণে, মুসলমানদের পরে আজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল শুক্রবারকে মসজিদের মধ্যে প্রার্থনার দিন হিসাবে আলাদা করতে? এটি যেন আল্লাহ চান না আমরা নবীর পরিষেবাকে ভুলে যাই I        

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *