সুরা আল-হাক্কক্কাহ (সুরা 69 – বাস্তবতা) বর্ণনা করে কীভাবে বিচারের দিনটি এক তুরীর বিফোটের সাথে উদঘাটিত হবে
13 যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে-একটি মাত্র ফুৎকার 14 এবং পৃথিবী ও পর্বতমালা উত্তোলিত হবে ও চুর্ণ-বিচুর্ণ করে দেয়া হবে,15 সেদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে। 16 সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে ও বিক্ষিপ্ত হবে। 17 এবং ফেরেশতাগণ আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে ও আট জন ফেরেশতা আপনার পালনকর্তার আরশকে তাদের উর্ধ্বে বহন করবে। 18 সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে। তোমাদের কোন কিছু গোপন থাকবে না।
সুরা আল-হাক্কক্কাহ 69:13-18
সুরা কাফ (সুরা 50) এছাড়াও একটি দিনের বর্ণনা করে যখন আল্লাহর তূরী ফুঁকে যাবে আর আমাদের ডান ও বাম দিকের তত্ত্বাবধায়ক দেবদূতরা আমাদের কাজ ও যোগ্যতার রেকর্ড প্রকাশ করবে I এই আয়াতগুলো পড়ে:
16 আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী থেকেও অধিক নিকটবর্তী। 17 যখন দুই ফেরেশতা ডানে ও বামে বসে তার আমল গ্রহণ করে। 18 সে যে কথাই উচ্চারণ করে, তাই গ্রহণ করার জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রয়েছে। 19 মৃত্যুযন্ত্রণা নিশ্চিতই আসবে। এ থেকেই তুমি টালবাহানা করতে। 20 এবং শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে এটা হবে ভয় প্রদর্শনের দিন। 21 প্রত্যেক ব্যক্তি আগমন করবে। তার সাথে থাকবে চালক ও কর্মের সাক্ষী। 22 তুমি তো এই দিন সম্পর্কে উদাসীন ছিলে। এখন তোমার কাছ থেকে যবনিকা সরিয়ে দিয়েছি। ফলে আজ তোমার দৃষ্টি সুতীক্ষ্ন। 23 তার সঙ্গী ফেরেশতা বলবেঃ আমার কাছে যে, আমলনামা ছিল, তা এই।
সুরা কাফ 50:16-23
আয়াত 20 বলে যে তুরীর সাবধানবাণী ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে (কোরআনের প্রকাশনের আগে) I কখন এটিকে দেওয়া হয়েছিল? এটিকে ঈসা আল মসীহর (পিবিইউএইচ) দ্বারা দেওয়া হয়েছিল যখন তিনি ইঞ্জিলের মধ্যে ভবিষ্যদ্বাণী করলেন যে পৃথিবীতে তাঁর প্রত্যার্বর্তন স্বর্গের তুরীর দ্বারা ঘোষিত হবে:
31 লাবন বলল, “মহাশয়, আপনাকে আমাদের আলযে স্বাগত জানাই| আপনার এখানে দাঁড়িয়ে থাকার দরকার নেই| আপনাদের বিশ্রামের জন্যে আমি সমস্ত বন্দোবস্ত করছি এবং আপনাদের উটগুলোর জন্যে আমাদের বাড়ীতে জায়গা আছে|”
মথি 24:31
এর পরে কি ঘটে? সুরা কাফ বর্ণনা করে এক দেবদূত আমাদের ডান দিকে এবং বাম দিকে, আমাদের কাজকর্মগুলো রেকর্ড করছে যেহেতু আল্লাহ আমাদের ঘাড়ের শিরার থেকে নিকটতম, ইঞ্জিল আমাদের বলে যে আমাদের কাজকর্মের এই রেকর্ডগুলো এত ব্যাপক যে তারা আসলে ‘বই’ I এটিকে একটি দর্শনে বর্ণনা করা হয়েছে যাকে যোহন, ঈসা আল মসীহর পিবিইউএইচ একজন শিষ্য, পেয়েছিলেন এবং ইঞ্জিলের শেষ বইয়ের মধ্যে লিখেছিলেন I যেমন এটিকে লেখা হয়েছে:
11 পরে আমি এক বিরাট শ্বেত সিংহাসন ও তার ওপর যিনি বসে আছেন তাঁকে দেখলাম৷ তাঁর সামনে থেকে পৃথিবী ও আকাশ বিলুপ্ত হল এবং তাদের কোন অস্তিত্ব রইল না৷
প্রকাশিত বাক্য 20:11-15
12 আমি দেখলাম, ক্ষুদ্র অথবা মহান সমস্ত মৃত লোক সেই সিংহাসনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে৷ পরে কয়েকটি গ্রন্থ খোলা হল এবং আরও একটি গ্রন্থ খোলা হল৷ সেই গ্রন্থটির নাম জীবন পুস্তক৷ সেই গ্রন্থগুলিতে মৃতদের প্রত্যেকের কাজের বিবরণ লিপিবদ্ধ ছিল এবং সেই অনুসারে তাদের বিচার হল৷
13 য়ে সব লোক সমুদ্রগর্ভে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল সমুদ্র তাদের সঁপে দিল, আর মৃত্যু ও পাতাল নিজেদের মধ্যে য়ে সব মৃত ব্যক্তি ছিল তাদের সমর্পণ করল৷ তাদের কৃতকর্ম অনুসারে তাদের বিচার হল৷
14 পরে মৃত্যু ও পাতাল আগুনের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হল৷ এই আগুনের হ্রদই হল আসলে দ্বিতীয় মৃত্যু৷
15 জীবন পুস্তকে যাদের নাম লেখা দেখতে পাওয়া গেল না, তাদের সকলকে আগুনের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হল৷
এটি ঘোষণা করে যে সকলের বিচার হবে ‘তাদের কাজ অনুসারে’ যেমন এই ‘বইয়ের’ মধ্যে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে I তাই আমরা প্রার্থনার পরে আমাদের ডান দিক এবং বাম দিকের দেবদুতদের শুভেচ্ছা জানাই এবং কাজকর্মের রেকর্ডিংয়ের ক্ষেত্রে কিছু সুবিধা পাওয়ার আশা করি I
জীবন পুস্তক
কিন্তু লক্ষ্য করুন সেখানে আর একটি পুস্তক আছে, যাকে ‘জীবনের পুস্তক’ বলা হয়, যেটি ভাল-মন্দ যোগ্যতার নথি-ধারণকারী বইয়ের থেকে আলাদা I এটি ব্যক্ত করে ‘যে কেউ’ যাদের নাম জীবন পুস্তকে পাওয়া যাবে না তাদেরকে আগুনের হ্রদে (জাহান্নামের জন্য আর একটি মেয়াদ) নিক্ষেপ করা হবে I তাই, এমনকি যদিও আমাদের ডান দিকে দেবদূতের দ্বারা লিপিবদ্ধ ভালো গুনগুলোর তালিকা খুব দীর্ঘ হয়, এবং দেবদূতের দ্বারা লিপিবদ্ধ আমাদের বাম দিকে পাপগুলোর তালিকা খুব সংক্ষিপ্ত হয় – এমনকি তবুও – আপনার নাম যদি ‘জীবন পুস্তকে’ না থাকে আমরা তখনও জাহান্নামের জন্য দোষী সাব্যস্ত হব I এই ‘জীবন পুস্তক’ কি এবং কিভাবে এই পুস্তকে আমাদের নাম লিপিবদ্ধ হয়?
তাওরাত এবং কোরআন উভয়ই ব্যক্ত করে যে যখন হজরত আদম পাপ করল, আল্লাহ তাকে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছিলেন এবং তাকে মরণশীল করেছিলেন I এর অর্থ হ’ল যে সে (এবং আমরা তার সন্তান) জীবনের স্রোত থেকে বিছিন্ন হয়েছিল I এটাই কারণ যে আমরা মরণশীল এবং একদিন আমরা মারা যাব I নবী ঈসা আল মসীহ পিবিইউএইচ এই জীবনকে আমাদের কাছে পুনস্থাপন করতে এসেছিলেন যাতে আমাদের নামকে জীবন পুস্তকের মধ্যে প্রবেশ করাতে পারা যায় I যেমন তিনি ঘোষণা করলেন
24 ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি; য়ে কেউ আমার কথা শোনে, আর যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর ওপর বিশ্বাস করে সে অনন্ত জীবন লাভ করে এবং সে অপরাধী বলে বিবেচিত হবে না৷ সে মৃত্যু থেকে জীবনে উত্তীর্ণ হয়ে গেছে৷
যোহন 5:24
নবী ইব্রাহিম পিবিইউএইচ কিভাবে জীবনের এই বরদানকে আগে থেকেই দেখছিলেন, এবং কেন ঈসা আল মসীহ আমাদের জীবন দিতে পারেন তা এখানে বিস্তৃতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে I সুরা কাফ আমাদের সাবধান করে যে
তোমরা উভয়েই নিক্ষেপ কর জাহান্নামে প্রত্যেক অকৃতজ্ঞ বিরুদ্ধবাদীকে,
সুরা কাফ 50:24
তাই অনন্ত জীবন যদি দেওয়া হয়ে থাকে তবে এর সম্বন্ধে খবর কেন দেওয়া হয়নি?