Skip to content

নবী আইয়্যুব কে ছিলেন? কেন তিনি আজকের দিনেও গুরুত্বপূর্ণ?

সুরা আল-বাইয়্যিনাহ (সুরা 98 – স্পষ্ট প্রমাণ) ভাল মানুষ হওয়ার প্রয়োজনীয়তার সবন্ধে বর্ণনা করে I এটি বলে 

তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর এবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম।

 সুরা বাইয়্যিনাহ 98:5

অনুরূপভাবে, সুরা আল-আছর (সুরা 103 – পড়ন্ত দিন) বর্ণনা করে আল্লাহর সামনে ক্ষতি এড়াতে আমাদের কি কি গুনাবলীর প্রয়োজন হয় I  

2 নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত; 3 কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের।

সুরা আল-আছর 103:2-3

নবী আইয়্যুব পিবিইউএইচ সুরা আল-বাইয়্যিনাহ এবং সুরা আল-আছর এর মধ্যে বর্ণিত এমন ধরণর মানুষ ছিলেন I নবী আইয়্যুব খুব সুপরিচিত নন I কোরআনের মধ্যে চার বার তার নাম ধরে উল্লেখ করা হয়েছে I

আমি আপনার প্রতি ওহী পাঠিয়েছি, যেমন করে ওহী পাঠিয়েছিলাম নূহের প্রতি এবং সে সমস্ত নবী-রসূলের প্রতি যাঁরা তাঁর পরে প্রেরিত হয়েছেন। আর ওহী পাঠিয়েছি, ইসমাঈল, ইব্রাহীম, ইসহাক, ইয়াকুব, ও তাঁর সন্তাবর্গের প্রতি এবং ঈসা, আইয়ুব, ইউনূস, হারুন ও সুলায়মানের প্রতি। আর আমি দাউদকে দান করেছি যবুর গ্রন্থ।

আন-নিসা 4:163

আমি তাঁকে দান করেছি ইসহাক এবং এয়াকুব। প্রত্যেককেই আমি পথ প্রদর্শন করেছি এবং পূর্বে আমি নূহকে পথ প্রদর্শন করেছি-তাঁর সন্তানদের মধ্যে দাউদ, সোলায়মান, আইউব, ইউসুফ, মূসা ও হারুনকে। এমনিভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।

আল-আন-আম 6:84

 

এবং স্মরণ করুন আইয়্যুবের কথা, যখন তিনি তাঁর পালনকর্তাকে আহবান করে বলেছিলেনঃ আমি দুঃখকষ্টে পতিত হয়েছি এবং আপনি দয়াবানদের চাইতেও সর্বশ্রেষ্ট দয়াবান।

আল-আম্বিয়া 21:83

স্মরণ করুণ, আমার বান্দা আইয়্যুবের কথা, যখন সে তার পালনকর্তাকে আহবান করে বললঃ শয়তান আমাকে যন্ত্রণা ও কষ্ট পৌছিয়েছে।

ছোয়াদ 38:41

আইয়্যুবকে ইব্রাহিম, ঈসা আল মসীহ, দায়ূদ সহ নবীদের তালিকার মধ্যে দেখা যায় কেননা তিনি বাইবেলের মধ্যে একটি বই লিখেছিলেন I তার বই তার জীবনের বর্ণনা I তিনি নবী নোহ (নুহ) এবং ইব্রাহিমের পিবিইউটি সময়ের মধ্যে বাস করতেন I বাইবেল তার সম্বন্ধে এইভাবে বর্ণনা করে:

ষ দেশে ইয়োব নামে এক জন লোক বাস করতেন| ইয়োব একজন সত্‌ ও অনিন্দনীয় মানুষ ছিলেন| ইয়োব ঈশ্বরের উপাসনা করতেন এবং মন্দ কাজ করা থেকে বিরত থাকতেন|
2 ইয়োবের সাতটি ছেলে এবং তিনটি মেয়ে ছিল|
3 ইয়োবের 7,000টি মেষ, 3,000টি উট, 500 জোড়া বলদ, 500 স্ত্রী গাধা এবং অনেক দাসদাসী ছিল| ইয়োব ছিলেন পূর্বদেশের সব চেয়ে ধনী লোক|
4 তাদের বাড়ীতে তাঁর পুত্ররা পালা করে ভোজ সভার আয়োজন করত| এবং তারা তাদের বোনদের নিমন্ত্রণ করতো|
5 তাঁর পুত্রদের ভোজসভা শেষ হয়ে গেলে ইয়োব প্রত্যূষে ঘুম থেকে উঠতেন এবং তাঁর সন্তানদের প্রত্যেকের জন্য একটি করে হোমবলি উত্সর্গ করতেন| তিনি ভেবেছিলেন, “হয়তো আমার সন্তানরা মনে মনে ঈশ্বরকে অভিশাপ দিয়ে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কোন পাপ করেছে|” ইয়োব বরাবরই এই কাজ করেছেন যাতে তাঁর সন্তানদের পাপ ক্ষমা করা হয়|

আইয়্যুব 1:1-15

আইয়্যুবের মধ্যে সুরা আল-বাইয়্যিনাহ এবং সুরা আল-আছর দ্বারা ঘোষিত প্রয়োজনীয় সমস্ত গুনাবলী ছিল I কিন্তু তখন শয়তান সদাপ্রভুর কাছে এল I আইয়্যুবের বই তাদের কথাবার্তাকে নথিভুক্ত করে I   

6 তারপর সেই দিনটি এল য়েদিন দেবদূতেরাপ্রভুর সঙ্গে দেখা করতে এলেন| শয়তানও দেবদূতদের সঙ্গে এসেছিল|
7 প্রভু তখন শয়তানকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোথায় ছিলে?” শয়তান প্রভুকে উত্তর দিল, “আমি পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম|”
8 তারপর প্রভু শয়তানকে বললেন, “তুমি কি আমার দাস ইয়োবকে দেখেছো? পৃথিবীতে ইয়োবের মতো আর কোন লোকই নেই| ইয়োব এক জন সত্‌ এবং অনিন্দনীয় মানুষ| সে ঈশ্বরের উপাসনা করে এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে|”
9 শয়তান উত্তর দিল, “নিশ্চয়! কিন্তু ইয়োব য়ে ঈশ্বরের উপাসনা করে তার য়থেষ্ট কারণ রযেছে!
10 আপনি তাকে, তার পরিবারকে এবং তার যা কিছু আছে সব কিছুকে সর্বদাই রক্ষা করেন| সে যা কিছু করে সব কিছুতেই আপনি তাকে সফলতা দেন| তার গবাদি পশুর দল ও মেষের পাল দেশে এমশঃ বেড়েই চলেছে|
11 কিন্তু তার যা কিছু রযেছে তা যদি আপনি ধ্বংস করে দেন আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, সে আপনার মুখের ওপরে আপনাকে অভিশাপ দেবে|”
12 প্রভু শয়তানকে বললেন, “ঠিক আছে, ইয়োবের যা কিছু আছে তা নিয়ে তুমি যা খুশী তাই কর| কিন্তু তার দেহে কোন আঘাত করো না|”তারপর শয়তান প্রভুর কাছ থেকে চলে গেল|

আইয়্যুব 1:6-12

অতএব শয়তান তখন এইভাবে আইয়্যুবের উপরে বিপর্যয় নিয়ে এল

13 এক দিন ইয়োবের ছেলেমেয়েরা তাদের সব থেকে বড় দাদার বাড়ীতে দ্রাক্ষারস পান ও নৈশ আহার করছিল|
14 তখন এক জন বার্তাবাহক এসে ইয়োবকে সংবাদ দিল, “বলদগুলো জমিতে হাল দিচ্ছিল এবং স্ত্রী গাধাগুলো কাছাকাছি চরে ঘাস খাচ্ছিল, তখন
15 শিবাযীযেরা আমাদের আক্রমণ করে পশুদের ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং অন্য ভৃত্যদের তরবারি দিয়ে হত্যা করে| এক মাত্র আমিই পালাতে পেরেছি| তাই আমি আপনাকে সংবাদটা দিতে এসেছি!”
16 যখন সেই বার্তাবাহক কথা বলছিল তখনই আরও এক জন বার্তাবাহক ইয়োবের কাছে এলো| দ্বিতীয় বার্তাবাহক ইয়োবকে বলল, “আকাশ থেকে বাজ পড়ে আপনার মেষ এবং ভৃত্যরা সব পুড়ে গিয়েছে| এক মাত্র আমিই রক্ষা পেয়েছি| তাই আমি আপনাকে সংবাদটা দিতে এসেছি!”
17 যখন সেই বার্তাবাহক কথা বলছিল তখন আরো এক জন বার্তাবাহক এলো| তৃতীয় বার্তাবাহক বলল, “কল্দীযরা তিন দল সৈন্যে ভাগ হয়েছিল| ওরা আমাদের আক্রমণ করে উটগুলিকে নিয়ে গিয়েছে! ওরা ভৃত্যদের তরবারি দিয়ে হত্যা করেছে| এক মাত্র আমিই রক্ষা পেয়েছি| তাই আমি আপনাকে সংবাদটা দিতে এসেছি!”
18 যখন তৃতীয় বার্তাবাহক কথা বলছিল তখন আরও এক জন বার্তাবাহক এলো| চতুর্থ বার্তাবাহক বলল, “আপনার ছেলেমেয়েরা তাদের বড় দাদার বাড়ীতে আহার করছিল ও দ্রাক্ষারস পান করছিল|
19 তখন মরুভূমি থেকে হঠাত্‌ই একটা ঝড় এসে বাড়ীটাকে ভেঙে দেয়| বাড়ীটা অল্পবয়সী লোকদের ওপরে ভেঙে পড়ে এবং তারা মারা যায়| এক মাত্র আমিই রক্ষা পেয়েছি| তাই আমি আপনাকে সংবাদটা দিতে এসেছি!”
20 যখন ইয়োব এইসব শুনলেন, তখন তিনি তাঁর বস্ত্র ছিঁড়ে ফেললেন এবং মাথা কামিযে ফেললেন| এভাবেই তিনি তাঁর শোক প্রকাশ করলেন| তারপর ইয়োব মাটিতে লুটিযে পড়লেন এবং ঈশ্বরের সামনে নত হলেন|
21 তিনি বললেন:“যখন আমি জন্মেছিলাম আমি নগ্ন ছিলাম, যখন আমি মারা যাবো তখনও আমি নগ্ন থাকব| প্রভু দেন এবং প্রভুই নিয়ে নেন| প্রভুর নামের প্রশংসা করো!”
22 এ সব কিছুই ঘটলো, কিন্তু ইয়োব কোন পাপ করেননি| ইয়োব একথা বলেননি য়ে ঈশ্বর কোন ভুল করেছেন|

আইয়্যুব 1:13-22

শয়তান তখনও আইয়্যুবকে সদাপ্রভুকে শ্রাপ দিতে প্ররোচিত করতে চাইল I সুতরাং সেখানে একটি দ্বিতীয় পরীক্ষা ছিল I  

একদিন দেবদূতরা প্রভুর সঙ্গে দেখা করতে এলেন| শয়তানও তাদের সঙ্গে প্রভুর কাছে দেখা করতে এলো|
2 প্রভু শয়তানকে বললেন, “তুমি কোথায় ছিলে?”শয়তান প্রভুকে উত্তর দিলো, “আমি পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম এবং এদিক-ওদিক যাচ্ছিলাম|”
3 তখন প্রভু শয়তানকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি আমার দাস ইয়োবকে দেখেছো? পৃথিবীতে ইয়োবের মতো আর কোন লোক নেই| ইয়োব এক জন সত্‌ এবং অনিন্দনীয মানুষ| সে এখনও তার সততাকে ধরে আছে যদিও তুমি সম্পূর্ণ বিনা কারণে তাকে ধ্বংস করতে আমাকে প্ররোচিত করেছিলে|”
4 তখন শয়তান উত্তর দিল, “নিজেকে রক্ষা করার জন্য য়ে কেউই যা কিছু করতে পারে|নিজের জীবন রক্ষা করার জন্য এক জন তার সর্বস্ব দিয়ে দেবে|
5 আপনি যদি তার দেহে আঘাত করার জন্য আপনার শক্তিকে ব্যবহার করেন, তাহলে আমি জোর দিয়ে বলতে পারি য়ে সে মুখের ওপরই আপনাকে অভিশাপ দেবে|”
6 তখন প্রভু শয়তানকে বললেন, “ঠিক আছে, ইয়োব এখন তোমার ক্ষমতার মধ্যে| কিন্তু তুমি তাকে মেরে ফেলতে পারবে না|”
7 তখন শয়তান প্রভুর কাছ থেকে চলে গেল| শয়তান যন্ত্রণাদাযক ফোড়ায ইয়োবের পা থেকে মাথা পর্য়ন্ত ভরিয়ে দিল|
8 তখন ইয়োব ছাইযের গাদার মধ্যে বসলেন| একটা ভাঙা খোলামকুচি (সরা বা হাঁড়ির ভাঙা টুকরো) দিয়ে তিনি তাঁর ক্ষত চাঁছতে লাগলেন|
9 ইয়োবের স্ত্রী তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি এখনো ঈশ্বরের প্রতি সততায় অবিচল আছ? কেন তুমি ঈশ্বরকে অভিশাপদিচ্ছো না এবং মরছো না!”
10 ইয়োব তাঁর স্ত্রীকে উত্তর দিলেন, “তুমি এক জন নির্বোধ স্ত্রীলোকের মত কথা বলছো! ঈশ্বর আমাদের ভালো জিনিস দেন এবং আমরা তা গ্রহণ করি| সেই ভাবে আমাদের, তাঁর প্রদত্ত দুঃখ কষ্টও গ্রহণ করা উচিত্‌|” এই সব ঘটনা ঘটলো, কিন্তু ইয়োব ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কোন কথা বলে কোন পাপ করলেন না|

আইয়্যুব 2:1-10

এই কারণেই সুরা আল-আন্বিয়া কষ্টের মধ্যে আইয়্যুবের ক্রন্দনকে বর্ণনা করে এবং সুরা ছোয়াদ ব্যাখ্যা করে যে মন্দ একজন (শয়তান) তাকে কষ্ট দিয়েছিল I . 

তাঁর করুণায়, আইয়্যুবের তিন বন্ধু তার কাছে স্বান্তনা নিয়ে আসতে তার কাছে এসেছিল I

11 ইয়োবের তিনজন বন্ধু হলেন তৈমনীয ইলীফস, শূহীয বিল্দদ ও নামাথীয সোফর| ইয়োবের প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা তিন বন্ধুই শুনলেন| তাঁরা তিন জনে বাড়ী থেকে বেরিয়ে এক জায়গায় মিলিত হলেন| তাঁরা ইয়োবের কাছে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানাতে ও সান্ত্বনা জানাতে রাজী হলেন|
12 কিন্তু তিন বন্ধু ইয়োবকে অনেক দূর থেকে দেখলেন| তাঁরা তাঁকে চিনতেই পারছিলেন না| তাঁরা উচ্চস্বরে কাঁদতে শুরু করলেন| তাঁরা নিজের কাপড় ছিঁড়ে ফেললেন এবং নিজেদের মাথার ওপরে শূন্যে ধূলো ছুঁড়লেন|
13 তারপর সেই তিন বন্ধু ইয়োবের সঙ্গে সাতদিনসাতরাত বসে রইলেন| কেউই ইয়োবের সঙ্গে কোন কথা বলেন নি কারণ তাঁরা দেখেছিলেন ইয়োব অতিরিক্ত কষ্ট পাচ্ছিলেন|

আইয়্যুব 2:11-13

আইয়্যুবের বই তাদের আলোচনাকে লিপিবদ্ধ করে কেন আইয়্যুবের প্রতি এই ধরণের দুর্ভাগ্য ঘটল I যাদের কথাবার্তা অনেক অধ্যায় ধরে বিস্তৃত  রয়েছে I সংক্ষেপে, তার বন্ধুরা আইয়্যুবকে বলে যে এই ধরণের ভীষণ  দুর্ভাগ্য কেবল মন্দ লোকেদের উপরে আসে, তাই আইয়্যুব নিশ্চয়ই গুপ্তভাবে পাপ করেছে I সে যদি এই পাপগুলোকে স্বীকার করে তবে হয়ত তাকে ক্ষমা প্রদান করা হবে I কিন্তু আইয়্যুব অবিরতভাবে জবাব দেয় যে সে অন্যায়-কার্য সম্বন্ধে নির্দোষ I সে বুঝতে পারছে না কেন তার উপরে দুর্ভাগ্য এসেছে I 

আমরা তাদের র্দীর্ঘ কথাবার্তার প্রত্যেকটি অংশকে অনুসরণ করতে পারি না, তবে তার প্রশ্নের মাঝে আইয়্যুব যা নিশ্চিতভাবে জানে তা বলে:

25 আমি জানি একজন আমার স্বপক্ষে আছে| আমি জানি সে বেঁচে আছে| এবং শেষ কালে সে এই মাটিতে দাঁড়াবে এবং আমায় প্রতিরক্ষা করবে|
26 আমি আমার দেহ ত্যাগ করে চলে যাবার পরে এবং আমার দেহের চামড়া নষ্ট হওয়ার পরেও আমি ঈশ্বরকে দেখবো, আমি তা জানি|
27 আমি নিজের চোখে ঈশ্বরকে দেখবো| অন্য কেউ নয়, আমি নিজে ঈশ্বরকে দেখবো, এবং তা আমাকে কতখানি অভিভূত করবে তা আমি বলতে পারবো না! আমার শক্তি সম্পূর্ণ ভাবে চলে গেছে|

আইয়্যুব 19:25-27

যদিও সে বুঝতে পারল না কেন তার উপরে বিপর্যয় এল, সে জানত যে একজন ‘উদ্ধারকর্তা’ পৃথিবীতে আসছেন I উদ্ধারকর্তা এমন একজন যিনি তার পাপ সমূহের জন্য যথেষ্ট মূল্য প্রদান করতে পারেন I আইয়্যুব উদ্ধার্কর্তাকে ‘আমার উদ্ধারকর্তা’ বলে ডাকে তাই সে জানত যে উদ্ধারকর্তা তার জন্য আসছেন I আইয়্যুবের ‘ত্বক বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার পরে’ (সে মারা গেছে) সে ঈশ্বরকে তাঁর দেহে দেখবে I  

আইয়্যুব পুনরুত্থানের দিনের দিকে তাকিয়ে আছে I তবে সে আত্ম বিশ্বাসের সাথে পুনরুত্থানের মধ্যে ঈশ্বরের সম্মুখীন হবে কারণ তার উদ্ধারকর্তা বেঁচে আছেন এবং তাকে উদ্ধার করেছেন I

সুরা আলমা’আরিজ (সুরা 70 – আরোহনকারী সিঁড়ি) পুনরুত্থানের দিনে একজন উদ্ধার্কর্তার সম্বন্ধেও বলে I তবে সুরা আলমা’আরিজ একজন নির্বোধ লোকের বর্ণনা করে, যে পুনরুত্থানের দিনের কোনো উদ্ধার্কর্তার জন্য উন্মত্তবৎ  তাকিয়ে আছে I 

11 যদিও একে অপরকে দেখতে পাবে। সেদিন গোনাহগার ব্যক্তি পনস্বরূপ দিতে চাইবে তার সন্তান-সন্ততিকে,12 তার স্ত্রীকে, তার ভ্রাতাকে,13 তার গোষ্ঠীকে, যারা তাকে আশ্রয় দিত। 14 এবং পৃথিবীর সবকিছুকে, অতঃপর নিজেকে রক্ষা করতে চাইবে।  

সুরা আলমা’আরিজ) 70:11-14

সুরা আল-মা’আরিজ এর নির্বোধ মানুষটি তার কোন উদ্ধারকর্তার জন্য সাফল্যের দিকে দেখে না I সে একজন উদ্ধারকর্তার জন্য তাকিয়ে আছে যে তাকে ‘সেই দিনের শাস্তির’ থেকে উদ্ধার করতে পারে – বিচারের দিনে I তার সন্তানগণ, স্ত্রী, ভাই এবং পৃথিবীর উপরে সকলে তাকে উদ্ধার করতে পারে না I তাদের নিজেদের শাস্তির মূল্য প্রদান করার কারণে তারা তাকে উদ্ধার করতে পারে না I   

আইয়্যুব এজন ন্যায়পরায়ণ মানুষ ছিল, তবুও সে জানত সেই দিনের জন্য তার একজন উদ্ধারকর্তার প্রয়োজন I সে বিশ্বস্ত ছিল যে, তার সমস্ত বিপদ সত্ত্বেও, তার কাছে এই উদ্ধারকর্তা ছিলেন I যেহেতু তাওরাত ঘোষণা করেছিল যে কোনো পাপের মূল্য হ’ল মৃত্যু, উদ্ধারকর্তাকে তার জীবন দিয়ে মূল্য চোকাতে হবে I আইয়্যুব জানত যে তার উদ্ধারকর্তা “শেষ সময়ে পৃথিবীর উপরে দাঁড়াবেন’ I আইয়্যুবের ‘উদ্ধারকর্তা’ কে ছিলেন? সেই একমাত্র ব্যক্তি যিনি কখনও মারা গিয়েছিলেন, তবে পরে পৃথিবীর উপরে পুনরায় দাঁড়াবার জন্য পুনরুত্থিত হয়েছিলেন তিনি হলেন নবী ঈসা আল মসীহ পিবিইউএইচ I তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি সম্ভবত শাস্তির মূল্য (মৃত্যু) চোকাতে পারতেন তবে ‘শেষে পৃথিবীর উপরে দাঁড়াতে পারেন’ I    

আইয়্যুবের মতন একজন ধার্মিক মানুষের নিজের জন্য যদি একজন উদ্ধারকর্তার প্রয়োজন হয়, তবে আপনার এবং আমার জন্য শাস্তির মূল্য চোকাতে কতটা বেশি একজন উদ্ধারকর্তার প্রয়োজন হয়? সুরা আল-বাইয়্যিনাহ এবং সুরা আল-আছর এর মধ্যে তালিকা ভুক্ত উত্তম গুনাবলীর একজন মানুষের  যদি উদ্ধারকর্তার প্রয়োজন হয় তবে আমাদের কি হবে? আমাদেরকে সুরা আল-মা’আরিজ এর নির্বোধ মানুষটির মতন হতে দেব না, যে শেষ দিন পর্যন্ত উন্মত্তবৎ একজনের জন্য অপেক্ষা করতে চেষ্টা করে যে তার শাস্তির মূল্য চোকাতে পারে I নবী যেমন আগে থেকেই দেখেছিলেন, বুঝুন এখন নবী ঈসা আল মসীহ পিবিইউএইচ কিভাবে আপনাকে উদ্ধার করতে পারেন, যেমন নবী আইয়্যুব আগে থেকেই দেখেছিলেন I 

বইয়ের শেষে, আইয়্যুবের সঙ্গে সদাপ্রভুর সাক্ষাৎকার হয় (এখানে) এবং তার উত্তম ভাগ্য পুনস্থাপিত হয় (এখানে)I

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *