রমাদানের
সময়ে উপবাস করার সময় আমি আমার বন্ধুদের আলোচনা করতে শুনেছি কিভাবে সেরা উপবাস করতে
হয় I উপবাস কখন শুরু এবং বন্ধ করতে হয় তার উপরে আলোচনা কেন্দ্রীভূত থাকে I গ্রীষ্মকালে
যখন রামাদান আসে, আর যেহেতু আমরা প্রায় 16 বা তার বেশি ঘন্টা দিবালোকের সাথে উত্তর
দিক বাস করি, প্রশ্ন ওঠে উপবাসের জন্য যে কেউ অন্য দিবালোকের মান ব্যবহার করতে
পারে কি না (মক্কায় সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্তের বিরতির মতন) I আমার বন্ধুরা বিভিন্ন
পণ্ডিতদের দ্বারা বিভিন্ন বিধান সমূহকে এর বিষয়ে এবং অনুরূপ প্রশ্নগুলো কি
অনুমতিযোগ্য এবং কি নয় তা অনুসরণ করে I
এই
আলোচনাগুলো গুরুত্বপূর্ণ বলে, আমরা প্রায়শই সমান গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটিকে ভুলে যাই
কিভাবে জীবন যাপন করতে হয় যাতে আমাদের উপবাস আল্লাহকে খুশি করে I নবীরা এই
সম্বন্ধে লিখেছিলেন এবং একটি প্রসন্নকারী উপবাসের জন্য উপযুক্ত জীবন যাপন সম্পর্কে
তাদের বার্তা আজকে দিনে ততটাই গুরুত্ত্বপূর্ণ যতটা তাদের সময়ে ছিল I
নবী
যিশাইয় (পিবিইউএইচ) এমন এক সময়ে বাস করতেন যখন বিশ্বাসীরা তাদের ধর্মীয়
বাধ্যবাধকতা (প্রার্থনা এবং উপবাস) কঠোরভাবে পালন
করতেন I তারা ধার্মিক ছিল I
যাবুরের মধ্যে অন্য কতিপয় নবী সনূহের সাথে নবী যিশাইয়র (পিবিইউএইচ) ঐতিহাসিক কালপঞ্জি
তবে এটি এক বিরাট দুর্নীতির সময়ও ছিল (দেখুন যাবুরের পরিচিতি) I লোকেরা অবিরতভাবে লড়াই, দ্বন্দ এবং তর্ক বিতর্ক করছিল I তাই নবী তাদের কাছে এই বার্তাটি নিয়ে এলেন I
প্রকৃত উপবাস
ত জোরে পারো চিত্কার করো! নিজেকে থামিয়ো না| শিঙার মতো চেঁচিয়ে ওঠো| মানুষকে তাদের ভুল কাজের কথা বলে দাও| যাকোবের পরিবারকে তাদের পাপের কথা জানিয়ে দাও! 2 তারা আমার খোঁজে প্রতিদিন আসে এবং আমার পথ শিখতে চায়, যেন তারা সঠিক পথের জাতি, যারা তাদের ঈশ্বরের বিধি অনুসরণ করা বন্ধ করেনি| তারা আমার কাছে তাদের ন্যায্য বিচার চায়| তারা ঈশ্বরকে কাছে পাবার ইচ্ছা করে| 3 এখন তারা বলে, “আপনাকে সম্মান জানাতে, আমরা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি| আপনি কেন আমাদের দিকে তাকাচ্ছেন না? আমরা আপনাকে সম্মান জানাতে আমাদের শরীরকে আঘাত করছি| আপনি কেন আমাদের লক্ষ্য করছেন না?”কিন্তু প্রভু বলেন, “উপবাসের দিনগুলিতে তোমরা তোমাদের যা ইচ্ছে তাই করো| এবং তোমরা তোমাদের ভৃত্যদের কষ্ট দাও; নিজের শরীরকে নয়| 4 তোমরা ক্ষুধার্ত, কিন্তু খাদ্যের জন্য নয়| তোমাদের খিদে তর্ক আর যুদ্ধ করার জন্য, রুটির জন্য নয়| তোমরা তোমাদের শযতান হাত দিয়ে লোককে আঘাত করার জন্য ক্ষুধার্ত| তোমরা যখন খাওয়া বন্ধ করো সেটা আমার জন্য নয়| তোমরা আমার প্রশংসার জন্য তোমাদের কণ্ঠস্বর ব্যবহার করো না| 5 তোমরা কি মনে কর ঐসব বিশেষ দিনে আমি চাই তোমরা উপবাস করে নিজেদের শরীরকে কষ্ট দাও? তোমরা কি মনে কর, আমি তোমাদের দুঃখী দেখতে চাই? তোমরা কি মনে কর আমি তোমাদের একটি ঘাসের মত মাথা নোযাতে চাই? তোমরা কি মনে কর আমি তোমাদের শোকবস্ত্র পরাতে চাই? তোমরা কি মনে কর যে আমি চাই লোকরা ছাইযের ওপরে বসে তাদের দুঃখ দেখাক? খাবার না খেয়ে তোমরা তোমাদের বিশেষ দিনে তাই করো| তোমরা কি ভাবো যে সত্যিই প্রভু এসব চান? 6 “আমি তোমাদের জানাবো কোন ধরণের বিশেষ দিন আমি চাই, এটা লোকদের মুক্ত করার দিন| আমি একটা দিন চাই যেদিন তোমরা লোকদের তাদের বোঝার ভার থেকে মুক্তি দেবে| আমি চাই একটা দিন, যে দিন তোমরা লোককে কষ্ট মুক্ত করবে| আমি চাই একটা দিন যেদিন তোমরা মানুষের বোঝা নামিয়ে দেবে| 7 আমি চাই তোমরা তোমাদের খাদ্য ভাগ করে নেবে ক্ষুধার্ত মানুষের সঙ্গে| আমি চাই তোমরা গৃহহীনদের খুঁজে নিজের ঘরে নিয়ে এসে রাখো| কোন মানুষকে বস্ত্রহীন দেখলে তাকে নিজের পোশাক দেবে| তারাও তোমাদের মত, তাদের দেখে নিজেকে লুকিয়ে রেখো না|” 8 তোমরা যদি এই সব করো তবে তোমাদের আলো ভোরের আলোর মতো কিরণ দিতে শুরু করবে| তখন তোমাদের সব ক্ষত নিরাময় হবে| তোমাদের “ধার্মিকতা” (ঈশ্বর) তোমাদের সামনে দিয়ে হাঁটবে, এবং প্রভুর মহিমাাতোমাদের পেছন পেছন চলবে| 9 তখন তোমরা প্রভুর সঙ্গে কথাবার্তা চালাতে পারবে| প্রভু তোমাদের প্রশ্োনর জবাব দেবেন! তোমরা প্রভুর জন্য চিত্কার করবে এবং তিনি বলবেন, “আমি এই খানে|”তোমাদের উচিত্ অন্যের সমস্যা ও বোঝা বানানো বন্ধ করা| তোমাদের অন্যকে আঘাত করে বা দোষারোপ করে কথা বলা বন্ধ করা উচিত্| 10 ক্ষুধার্ত মানুষদের জন্য দুঃখী হয়ে তাদের খাদ্য দেওয়া উচিত্| যারা সমস্যায় পড়েছে তাদের প্রয়োজন মতো তোমাদের সাহায্য করা উচিত্| তাহলে অন্ধকারের মধ্যে তোমরা আলোর দিশা পাবে এবং তোমাদের কোন দুঃখ থাকবে না| দুপুরের সূর্য়ালোকের মতো উজ্জল হবে তোমরা| 11 প্রভু তোমাদের সর্বদা নেতৃত্ব দেবেন| শুকনো জমিতেও তিনি তোমাদের আত্মাকে সন্তুষ্ট করবেন| প্রভু তোমাদের হাড়কে শক্তি দেবেন| তোমরা যথেষ্ট জল পাওয়া বাগানের মতো| তোমরা হবে সর্বদা জলে ভরা ঝর্ণার মতো| 12 বহু বছর ধরে ধ্বংস হলেও তোমরা তোমাদের শহরগুলি পুর্নগঠন করবে এবং বহু বছর ধরে থেকে যাবে| তোমাদের বলা হবে “যারা বেড়া মেরামত করে” এবং “যারা রাস্তাসমূহ ও বাড়ীগুলি তৈরী করে|” .
সুরা ইউসুফ (সুরা 12 – যোষেফ) হজরত ইউসুফ/যোষেফের কাহিনী বলে I ইউসুফ হজরত ইয়াকুবের (যাকোব) পুত্র, যে হজরত ইসহাকের (আইসাক) পুত্র, যে হজরত ইব্রাহিমের (আব্রাহাম) পুত্র ছিল I ইয়াকুবের বারো সন্তান ছিল, যাদের মধ্যে একজন ছিল ইউসুফ I ইউসুফের এগারো ভাই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল, আর তাদের পরিকল্পনা ইউসুফের বিবরণকে গঠন করে I এই কাহিনীটি মুসার তাওরাতে 3500 বছর পূর্বে প্রথমে নথিভুক্ত হয়েছিল I তাওরাতের পূর্ণ বিবরণটি এখানে রয়েছে I সুরা ইউসুফ (সুরা 12 – যোষেফ) বিবরণটি এখানে রয়েছে I সুরা ইউসুফ আমাদের বলে যে এটি কেবলমাত্র একটি কাহিনী নয় বরং
অবশ্য ইউসুফ ও তাঁর ভাইদের কাহিনীতে জিজ্ঞাসুদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।
সুরা ইউসুফ 12:7
ইউসুফ এবং
তার ভাইদের কাহিনীর মধ্যে কি রয়েছে যা অন্বেষনকারীদের জন্য ‘লক্ষণসমূহ’ হয়? এই
‘লক্ষণগুলো’ বোঝার জন্য আমরা তাওরাত এবং সুরা ইউসুফ উভয় কাহিনীকে পর্যালোচনা করি
I
সামনে প্রণত
করা … ?
একটি স্পষ্ট
লক্ষণ হ’ল স্বপ্ন যা ইউসুফ তার পিতা ইয়াকুবকে বলল যেখানে
যখন ইউসুফ পিতাকে বললঃ পিতা, আমি স্বপ্নে দেখেছি এগারটি নক্ষত্রকে। সুর্যকে এবং চন্দ্রকে। আমি তাদেরকে আমার উদ্দেশে সেজদা করতে দেখেছি।
সুরা ইউসুফ 12:4
কাহিনীর
শেষে, আমরা বাস্তবিকই দেখি যে
এবং তিনি পিতা-মাতাকে সিংহাসনের উপর বসালেন এবং তারা সবাই তাঁর সামনে সেজদাবনত হল। তিনি বললেনঃ পিতা এ হচ্ছে আমার ইতিপূর্বেকার স্বপ্নের বর্ণনা আমার পালনকর্তা একে সত্যে পরিণত করেছেন এবং তিনি আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আমাকে জেল থেকে বের করেছেন এবং আপনাদেরকে গ্রাম থেকে নিয়ে এসেছেন, শয়তান আমার ও আমার ভাইদের মধ্যে কলহ সৃষ্টি করে দেয়ার পর। আমার পালনকর্তা যা চান, কৌশলে সম্পন্ন করেন। নিশ্চয় তিনি বিজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
সুরা ইউসুফ 12:100
সম্পূর্ণ
কোরআনের মধ্যে ‘প্রণত’ কে বহুবার উল্লেখ করা হয়েছে I তবে তারা সকলে সর্বশক্তিমান
ঈশ্বরের সামনে প্রার্থনার মধ্যে প্রণত হওয়ার কথা উল্লেখ করে, বা কাবার মধ্যে, বা
আল্লাহর অলৌকিক কার্য সমূহের সামনে (মুসার সাথে মিশরের জাদুকরের মতন) I এখানে তার
মধ্যে একটি ব্যতিক্রম আছে সেখানে ‘প্রণত হওয়া’ একজন মানুষের (ইউসুফ) সামনে I আর
একটি অনুরূপ ঘটনা কেবলমাত্র তখন হয় যখন দেবদূতগণকে হজরত আদমের সামনে ‘প্রণত’ করতে
আজ্ঞা দেওয়া হয় (তা-হা 116 এবং আল-আরাফ 11)I তবে দেবদূতগণ মানুষ নয়, সাধারণ নিয়ম
হ’ল কেবলমাত্র প্রভুর কাছে মানুষকে প্রণত হতে হয় I
হে মুমিনগণ! তোমরা রুকু কর, সেজদা কর, তোমাদের পালনকর্তার এবাদত কর এবং সৎকাজ সম্পাদন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
আল-হাজ্জ 22:77
ইউসুফের
ক্ষেত্রে কি এমন হ’ল যা ব্যতিক্রম করল যাতে তার পিতা ইয়াকুব এবং তার ভাইরা তার
সামনে প্রণত করল?
মনুষ্য পুত্র
ঐতিহাসিক কালপঞ্জি দেখায় নবী দানিয়েল এবং যাবুরের অন্যান্য নবীদের
অনুরূপভাবে বাইবেলের মধ্যে আমাদেরকে কেবলমাত্র সদাপ্রভুর সামনে প্রণত করতে, বা আরাধনা করতে আজ্ঞা দেওয়া হয়, তবে সেখানেও একটি ব্যতিক্রম আছে I নবী দানিয়েল একটি দর্শন পেয়েছিল অনেক দুরের সময়কে দেখিয়েছিল যখন ঈশ্বরের রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হবে এবং তার দর্শনে তিনি এক ‘মনুষ্য পুত্র’ কে দেখেছিলেন I
13 “আমি রাত্রে য়ে স্বপ্নদর্শন করলাম তাতে মানুষের মতো দেখতে এক ব্যক্তি আমার সামনে এলেন| তিনি আকাশের মেঘের মধ্যে থেকে বেরিয়ে এসে সেই প্রাচীন রাজার কাছে এলেন এবং তারা তাঁকে তাঁর সামনে নিয়ে এলো| 14 “সেই মানুষের মতো ব্যক্তিটিকে কর্ত্তৃত্ব, মহিমা ও সম্পূর্ণ শাসন ক্ষমতা দেওয়া হল| সমস্ত দেশ ও সমস্ত ভাষার লোকরা তাঁর উপাসনা করবে| তাঁর শাসন ও রাজত্ব চিরস্থায়ী হবে| তা কখনো ধ্বংস হবে না|
দানিয়েল 7:13-14
দর্শনের
মধ্যে লোকেরা ‘মনুষ্য পুত্রের’ সামনে প্রণত করে, যেমনভাবে ইউসুফের পরিবার ইউসুফের
সামনে প্রণত করেছিল I
‘মনুষ্য পুত্র’ শিরোনামটিকে ঈসা আল মসীহ পিবিইউএইচ প্রায়শই নিজের জন্য ব্যবহার করতেন I তিনি শিক্ষাদান, নিরাময়ের ক্ষেত্রে এবং প্রকৃতির উপরে মহান কর্ত্তৃত্বের প্রদর্শন করেছিলেন যখন তিনি পৃথিবীতে গমনাগমন করেছিলেন I তবে তিনি ‘আকাশেরমেঘে চড়ে’ আসেন নি যেমনটি দানিয়েলের দর্শন তার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল I এটি এই কারণে যে দর্শনটি আরও ভবিষ্যতের দিকে দেখছিল, তার প্রথম আগমনকে ছাড়িয়ে গিয়ে তার দ্বিতীয় আগমনকে – তার পৃথিবীতে পুনরায় প্রত্যাবর্তন দজ্জালকে ধ্বংস করতে (যেমন হজরত আদমকে ভবিষ্যতবাণী করা হয়েছিল) এবং ঈশ্বরের রাজ্য প্রতিষ্ঠিত করতে I
31 ‘মানবপুত্র যখন নিজ মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে তাঁর স্বর্গদূতদেব সঙ্গে নিয়ে এসে মহিমার সিংহাসনে বসবেন, 32 তখন সমস্ত জাতি তাঁর সামনে জড়ো হবে৷ রাখাল য়েমন ভেড়া ও ছাগল আলাদা করে, তেমনি তিনি সব লোককে দুভাগে ভাগ করবেন৷ 33 তিনি নিজের ডানদিকে ভেড়াদের রাখবেন আর বাঁদিকে ছাগলদের রাখবেন৷ 34 ‘এরপর রাজা তাঁর ডানদিকের যাঁরা তাদের বলবেন, ‘আমার পিতার আশীর্বাদ পেয়েছ, তোমরা এস! জগত সৃষ্টির শুরুতেইয়ে রাজ্য তোমাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, তার অধিকার গ্রহণ কর৷ 35 কারণ আমি ক্ষুধিত ছিলাম, তোমরা আমায় খেতে দিয়েছিলে৷ আমি পিপাসিত ছিলাম আর তোমরা আমাকে পান করবার জল দিয়েছিলে৷ আমি অচেনা আগন্তুক রূপে এসেছিলাম আর তোমর আমায় আশ্রয় দিয়েছিলে৷ 36 যখন আমার পরনে কোন কাপড় ছিল না, তখন তোমরা আমায় পোশাক পরিয়েছিলে৷ আমি অসুস্থ ছিলাম, তোমরা আমার সেবা করেছিলে৷ আমি কারাগারে ছিলাম, তোমর আমায় দেখতে এসেছিলে৷’ 37 ‘এর উত্তরে যাঁরা ভাল তারা বলবে, ‘প্রভু, কখন আমরা আপনাকে ক্ষুধার্ত দেখে খেতে দিয়েছিলাম, পিপাসিত দেখে জল পান করতে দিয়েছিলাম? 38 কখনই বা আপনাকে অচেনা আগন্তুক দেখে আতিথেয়তা করেছিলাম অথবা আপনার পরনে কাপড় নেই দেখে পোশাক পরিয়েছিলাম? 39 আর কখনই বা অসুস্থ বা কারাগারে আছেন দেখে আপনাকে দেখতে গিয়েছিলাম? 40 ‘এর উত্তরে রাজা তাদের বলবেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমার এইতুচ্ছতমদের মধ্যে যখন কোন একজনের প্রতি তোমরা এরূপ করেছিলে, তখন আমারই জন্য তা করেছিলে৷’ 41 ‘এরপর রাজা তাঁর বাম দিকের লোকদের বলবেন, ‘ওহে অভিশপ্তরা, তোমরা আমার কাছ থেকে দূর হও, দিয়াবল ও তার দূতদের জন্য য়ে ভযাবহ অনন্ত আগুন প্রস্তুত করা হয়েছে, তার মধ্যে গিয়ে পড়৷ 42 কারণ আমি যখন ক্ষুধার্ত ছিলাম, তখন তোমরা আমায় খেতে দাও নি৷ আমার যখন পিপাসা পেয়েছিল, তখন আমায় জল দাও নি৷ 43 আমি অচেনা আগন্তুকরূপে এসেছিলাম, কিন্তু তোমরা আমার আতিথেয়তা করনি৷ আমার পোশাক ছিল না, কিন্তু তোমরা আমায় পোশাক দাও নি৷ আমি অসুস্থ ছিলাম ও কারাগারে গিয়েছিলাম, কিন্তু তোমরা আমার খোঁজ নাও নি৷ 44 ‘এর উত্তরে তারা তাঁকে বলবে, ‘প্রভু, কবে আপনাকে ক্ষুধার্ত, কি পিপাসিত, কি আগন্তুকরূপে দেখে অথবা কবেইবা আপনার পরনে কাপড় ছিল না, বা আপনি অসুস্থ ছিলেন ও কারাগারে গিয়েছিলেন বলে আমরা আপনার সাহায্য করিনি?’ 45 ‘এ কথার উত্তরে রাজা বলবেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যখন এই অতি সামান্য যাঁরা তাদের কোন একজনের প্রতি তা করনি, তখন আমারই প্রতি তা কর নি৷’ 46 ‘এরপর অধার্মিক লোকেরা যাবে অনন্ত শাস্তি ভোগ করতে, কিন্তু ধার্মিকেরা প্রবেশ করবে অনন্ত জীবনে৷’
মথি 25:31:46
হজরত ইউসুফ
এবং ঈসা আল মসীহ
অন্যান্য
মানুষরা ছাড় সহকারে নিজেদেরকে তাদের সামনে প্রণত করবে, হজরত ইউসুফ এবং ঈসা আল মসীহ
ঘটনা সমূহের এক অনুরূপ নমুনার মধ্য দিয়ে গেলেন I লক্ষ্য করুন কতগুলো উপায়ে তাদের
জীবন সাদৃশ্যপূর্ণ I
হজরত ইউসুফের
জীবনের ঘটনাবলী
ঈসা আল মসীহর জীবনের ঘটনাবলী
তার ভাইরা, যারা ইস্রায়েলের
12 উপজাতি হয়ে উঠল, ইউসুফকে ঘৃণা এবং
প্রত্যাহ্যান করল
উপজাতি সমূহের এক জাতি
হিসাবে যিহূদিরা ঈসা আল মসীহকে ঘৃণা করল এবং মসীহ হিসাবে তাকে প্রত্যাখ্যান
করল
ইউসুফ ইস্রায়েলের (ঈশ্বরের
দ্বারা ইয়াকুবেব্র নাম)প্রতি তার ভাইদের ভবিষ্যত প্রণতকে ঘোষণা করে
ঈসা আল মসীহ ইস্রায়েলের
প্রতি তার ভাইদের (সাথী যিহূদিগণ) ভবিষ্যত প্রণতের সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেন (মার্ক 14:62)
ইউসুফ তার পিতার দ্বারা তার
ভাযদের কাছে প্রেরিত হয়েছিল তবে তারা তাকে প্রত্যাখ্যান করল এবং তার প্রাণ হরণ
করতে ষড়যন্ত্র করল
ঈসা আল মসীহ তার পিতার
দ্বারা তার যিহূদি ভাইদের কাছে প্রেরিত হয়েছিলেন, “তবে তার নিজের লোকেরা তাকে
গ্রহণ করল না I” (যোহন 1:11) এবং তারা “তার প্রাণ হরণ করতে ষড়যন্ত্র করল” (যোহন
11:53)
তারা তাকে পৃথিবীর এক
কুপের মধ্যে নিক্ষেপ করে
ঈসা আল মসীহ পৃথিবীর কবরে
অবতরণ করেন
ইউসুফকে বিক্রি করে
বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়া হ’ল
ঈসা আল মসীহকে বিক্রি করে
বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়া হল
তাকে অনেক দুরে নিয়ে যাওয়া
হয় যাতে তার ভাইরা এবং পিতা ভাবে যে সে মারা গেছে
ইস্রায়েল এবং তার ভাই
যিহূদিরা ভাবে যে ঈসা আল মসীহ এখনও মৃত আছেন
ইউসুফ একজন দাসের মতন নম্র
ঈসা আল মসীহ “একজন দাসের
বিশেষ প্রকৃতিকে” অবলম্বন করেছিলেন এবং মৃত্যুর কাছে ‘নিজেকে নত করেছিলেন’
(ফিলিপীয় 2:7)
ইউসুফকে মিথ্যাভাবে পাপের
জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছিল
যিহূদিরা মিথ্যাভাবে “তাকে
বিভিন্ন বিষয় সম্বন্ধে অভিযুক্ত করেছিল’ (মার্ক 15:3)
ইউসুফকে এক দাস হিসাবে
কারাগারে পাঠানো হয়েছিল, যেখানে সে অন্ধকূপের (রুটির কারখানা) অন্ধকার থেকে কিছু
বন্দীদের মুক্ত করার পূর্বাভাষ পেয়েছিলেন
ঈসা আল মসীহকে পাঠানো
হয়েছিল” … ভগ্নান্ত:করণদের ক্ষত বেঁধে দিতে, বন্দীদের জন্য স্বাধীনতা ঘোষণা
করতে এবং বন্দিদের অন্ধকার থেকে মুক্তি দিতে…” (যিশাইয় 61:1)
ইউসুফ মিশরের সিংহাসনে আরোহন
করে, সমস্ত শক্তির উপরে, কেবল ফরৌণের নিজের অধীনে I যে লোকেরা তার কাছে আসে তার
সামনে প্রণত হয় I
“ঈশ্বর তাকে মহিমান্বিত
করলেন সর্বোচ্চ স্থানে এবং তাকে সেই নাম দান করলে যা প্রত্যেক নামের চেয়ে
শ্রেষ্ঠ, যেন যীশুর নামে প্রত্যেকটি জানু নত হয়, স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতালে…”
(ফিলিপীয় 2:10-11)
যখন তার ভাইদের দ্বারা তখনও
প্রত্যখ্যাত এবং মৃত বিশ্বাস করা হ’ল, জাতিগণ ইউসুফের কাছে রুটির জন্য আসে যা তাদের
জন্য সে সরবরাহ করতে পারত
যখন তার সাথী ভাইদের দ্বারা
তখনও প্রত্যখ্যাত এবং মৃত বিশ্বাস করা হ’ল, জাতিগণ ঈসা আল মসীহর কাছে জীবনের
রুটির জন্য আসে যা একমাত্র তিনিই তাদেরকে দিতে পারেন
ইউসুফ তার ভাইদের
বিশ্বাসঘাতকতার সম্বন্ধে বলে (আদিপুস্তক 50:20)
ঈসা আল মসীহ তার ভাই
যিহূদিদের দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতার সম্বন্ধে বলেন যা ঈশ্বরের অভীষ্ট ছিল এবং অনেক
জীবনকে রক্ষা করবে (যোহন
5:24)
তার ভাইরা এবং জাতিগণ
ইউসুফের সামনে প্রণত করে
দানিয়েল মনুষ্য পুত্রের
সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে “সমস্ত জাতিগণ এবং প্রত্যেক ভাষাভাষী লোকেরা তাঁর
আরাধনা করবে”
অনেক নিদর্শন সমূহ – অনেক লক্ষণ সমূহ
তাওরাতের
প্রায় সমস্ত প্রাচীন নবীরা তাদের জীবনকে ঈসা আল মসীহর প্রতিরূপ করেছিলেন – তাঁর
আগমনের কয়েক শত বছর পূর্বে নিদর্শনগুলো রচনা করা হয়েছিল I এটি করা হয়েছিল আমাদের
দেখাতে যে মসীহর আগমন বাস্তবিকই ঈশ্বরের পরিকল্পনা ছিল I, কোনো মানবীয় ধারণা নয়,
যেহেতু মানুষেরা এত আগে থেকে ভবিষ্যতকে জানে না I
তবে ইউসুফের নিদর্শনটি কখন রাজ্য শুরু হবে তার আরও আগের দিকে তাকায় এবং সমস্ত জাতিগণ পৃথিবীতে ঈসা আল মসীহর প্রত্যাবর্তনে নিজেদেরকে প্রণত করবে I যেহেতু আমরা এমন সময়ে বেঁচে আছি যখন আমাদেরকে ঈশ্বের রাজ্যে আমন্ত্রণ করা হয়েছে, আমাদেরকে আল-মা’আরিজের নির্বোধ মানুষটির মতন হতে না দিই যে একজন উদ্ধারকর্তাকে খুঁজে পেতে সেই দিন অবধি বিলম্ব করেছিল – আর অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিল I আপনার প্রতি মসীহর জীবনের উপহার সম্পর্কে এখন আরও জানুন I
মসীহ
শিখিয়েছিলেন যে তার প্রত্যাবর্তন এইরকম হবে
র্গরাজ্য কেমন হবে, তা দশ জন কনের সঙ্গে তুলনা করা চলে, যাঁরা তাদের প্রদীপ নিয়ে বরের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে বার হল৷ 2 তাদের মধ্যে পাঁচজন ছিল নির্বোধ আর অন্য পাঁচজন ছিল বুদ্ধিমতী৷ 3 সেই নির্বোধ কনেরা তাদের বাতি নিল বটে কিন্তু সঙ্গে তেল নিল না৷ 4 অপরদিকে বুদ্ধিমতী কনেরা তাদের প্রদীপের সঙ্গে পাত্রে তেলও নিল৷ 5 বর আসতে দেরী হওযাতে তারা সকলেই তন্দ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল৷ 6 কিন্তু মাঝরাতে চিত্কার শোনা গেল, ‘দেখ, বর আসছে! তাকে বরণ করতে এগিয়ে যাও৷’ 7 ‘সেই কনেরা তখন উঠে তাদের প্রদীপ ঠিক করল৷ 8 কিন্তু নির্বোধ কনেরা বুদ্ধিমতী কনেদের বলল, ‘তোমাদের তেল থেকে আমাদের কিছু তেল দাও, কারণ আমাদের প্রদীপ নিভে যাচ্ছে৷’ 9 ‘এর উত্তরে সেই বুদ্ধিমতী কনেরা বলল, ‘না৷ তেল যা আছে তাতে হয়তো আমাদের ও তোমাদের কুলোবে না, তোমরা বরং যাঁরা তেল বিক্রি করে তাদের কাছে গিয়ে নিজেদের জন্য তেল কিনে আনো৷’ 10 ‘তারা যখন তেল কেনার জন্য বাইরে যাচ্ছে, এমন সময় বর এসে উপস্থিত হল, তখন য়ে কনেরা প্রস্তুত ছিল তারা বরের সঙ্গে বিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করল৷ তারপর দরজা বন্ধ করে দেওযা হল৷ 11 ‘শেষে অন্য কনেরা এসে বলল, ‘শুনছেন, আমাদের জন্য দরজা খুলে দিন৷’ 12 ‘কিন্তু এর উত্তরে বর বলল, ‘সত্যি বলছি, আমি তোমাদের চিনি না৷’ 13 ‘তাইতোমরা সজাগ থেকো, কারণ তোমরা সেই দিন বা মুহূর্ত্তের কথা জান না, কখন মানবপুত্র ফিরে আসবেন৷ 14 ‘স্বর্গরাজ্য এমন একজন লোকের মতো, যিনি বিদেশে যাবার আগে চাকরদের ডেকে সম্পত্তির ভার তাদের হাতে দিয়ে গেলেন৷ 15 তিনি একজনকে পাঁচ থলি মোহর, আর একজনকে দু থলি মোহর এবং আর একজনকে এক থলি মোহর দিলেন৷ যার য়েমন ক্ষমতা সেই অনুসারে দিয়ে তিনি বিদেশে চলে গেলেন৷ 16 য়ে পাঁচ থলি মোহর পেয়েছিল, সে সঙ্গে সঙ্গে সেই টাকা খাটাতে শুরু করল, আর তাই দিয়ে আরো পাঁচ থলি মোহর লাভ করল৷ 17 য়ে লোক দু’থলি মোহর পেয়েছিল সেও সেই টাকা খাটিয়ে আরো দু’থলি মোহর রোজগার করল৷ 18 কিন্তু য়ে এক থলি মোহর পেয়েছিল, সে গিয়ে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে তার মনিবের টাকা সেই গর্তে পুঁতে রাখল৷ 19 ‘অনেক দিন পর সেইচাকরদের মনিব ফিরে এসে তাদের কাছে হিসাব চাইলেন৷ 20 য়ে পাঁচ থলি মোহর পেয়েছিল, সে আরো পাঁচ থলি মোহর এনে বলল, ‘হুজুর, আপনি আমাকে পাঁচ থলি মোহর দিয়েছিলেন, দেখুন আমি তাই দিয়ে আরো পাঁচ থলি মোহর রোজগার করেছি৷’ 21 ‘তার মনিব তখন তাকে বললেন, ‘বেশ, তুমি উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস৷ তুমি এই সামান্য বিষয়ে বিশ্বস্ত থাকাতে আমি তোমার হাতে অনেক বিষয়ের ভার দেব৷ এস, তোমার মনিবের আনন্দের সহভাগী হও৷ 22 ‘এরপর য়ে দু থলি মোহর পেয়েছিল, সেও তার মনিবের কাছে এসে বলল, ‘হুজুর, আপনি আমায় দু থলি মোহর দিয়েছিলেন, দেখুন আমি তাই দিয়ে আরো দু থলি মোহর রোজগার করেছি৷’ 23 ‘তার মনিব তাকে বললেন, ‘বেশ! তুমি উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস৷ তুমি সামান্য বিষয়ের উপর বিশ্বস্ত হলে, তাই আমি আরো অনেক কিছুর ভার তোমার ওপর দেব৷ এস, তুমি তোমার মনিবের আনন্দের সহভাগী হও৷ 24 ‘এরপর য়ে লোক এক থলি মোহর পেয়েছিল সে তার মনিবের কাছে এসে বলল, ‘হুজুর আমি জানি আপনি বড় কড়া লোক৷ আপনি য়েখানে বীজ বোনেন নি সেখানে কাটেন; আর য়েখানে কোন বীজ ছড়ান নি সেখান থেকে শস্য সংগ্রহ করেন: 25 তাই আমি ভয়ে আপনার দেওযা মোহরের থলি মাটিতে পুঁতে লুকিয়ে রেখেছিলাম৷ আপনার যা ছিল তা নিন৷’ 26 ‘এর উত্তরে তার মনিব তাকে বললেন, ‘তুমি দুষ্ট ও অলস দাস! তুমি তো জানতে আমি য়েখানে বুনি না সেখানেই কাটি; আর তুমি এও জান য়েখানে আমি বীজ ছড়াইনা সেখান থেকেই সংগ্রহ করি৷ 27 তাই তোমার উচিত ছিল মহাজনদের কাছে আমার টাকা জমা রাখা, তাহলে আমি এসে আমার টাকার সঙ্গে কিছু সুদও পেতাম৷’ 28 ‘তাই তোমরা এর কাছ থেকে, ঐ মোহর নিয়ে যার দশ থলি মোহর আছে তাকে দাও৷ 29 হ্যাঁ, যার আছে তাকে আরো দেওযা হবে, তাতে তার প্রচুর হবে৷ কিন্তু যার নেই, তার যা আছে তাও তার কাছে থেকে নিয়ে নেওযা হবে৷’ 30 তোমরা ঐ অকর্মন্য দাসকে অন্ধকারে বাইরে ফেলে দাও; সেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষে৷’
সুরা আল-বাইয়্যিনাহ
(সুরা 98 – স্পষ্ট প্রমাণ) ভাল মানুষ হওয়ার প্রয়োজনীয়তার সবন্ধে বর্ণনা করে I এটি
বলে
তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর এবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম।
সুরা বাইয়্যিনাহ 98:5
অনুরূপভাবে, সুরা
আল-আছর (সুরা 103 – পড়ন্ত দিন) বর্ণনা করে আল্লাহর সামনে ক্ষতি এড়াতে আমাদের কি কি
গুনাবলীর প্রয়োজন হয় I
2 নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত; 3 কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের।
সুরা আল-আছর 103:2-3
নবী আইয়্যুব পিবিইউএইচ সুরা আল-বাইয়্যিনাহ এবং সুরা আল-আছর এর মধ্যে বর্ণিত এমন ধরণর মানুষ ছিলেন I নবী আইয়্যুব খুব সুপরিচিত নন I কোরআনের মধ্যে চার বার তার নাম
ধরে উল্লেখ করা হয়েছে I
আমি আপনার প্রতি ওহী পাঠিয়েছি, যেমন করে ওহী পাঠিয়েছিলাম নূহের প্রতি এবং সে সমস্ত নবী-রসূলের প্রতি যাঁরা তাঁর পরে প্রেরিত হয়েছেন। আর ওহী পাঠিয়েছি, ইসমাঈল, ইব্রাহীম, ইসহাক, ইয়াকুব, ও তাঁর সন্তাবর্গের প্রতি এবং ঈসা, আইয়ুব, ইউনূস, হারুন ও সুলায়মানের প্রতি। আর আমি দাউদকে দান করেছি যবুর গ্রন্থ।
আন-নিসা 4:163
আমি তাঁকে দান করেছি ইসহাক এবং এয়াকুব। প্রত্যেককেই আমি পথ প্রদর্শন করেছি এবং পূর্বে আমি নূহকে পথ প্রদর্শন করেছি-তাঁর সন্তানদের মধ্যে দাউদ, সোলায়মান, আইউব, ইউসুফ, মূসা ও হারুনকে। এমনিভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।
আল-আন-আম 6:84
এবং স্মরণ করুন আইয়্যুবের কথা, যখন তিনি তাঁর পালনকর্তাকে আহবান করে বলেছিলেনঃ আমি দুঃখকষ্টে পতিত হয়েছি এবং আপনি দয়াবানদের চাইতেও সর্বশ্রেষ্ট দয়াবান।
আল-আম্বিয়া 21:83
স্মরণ করুণ, আমার বান্দা আইয়্যুবের কথা, যখন সে তার পালনকর্তাকে আহবান করে বললঃ শয়তান আমাকে যন্ত্রণা ও কষ্ট পৌছিয়েছে।
ছোয়াদ 38:41
আইয়্যুবকে ইব্রাহিম, ঈসা আল মসীহ, দায়ূদ সহ নবীদের তালিকার মধ্যে দেখা যায় কেননা তিনি বাইবেলের মধ্যে একটি বই লিখেছিলেন I তার বই তার জীবনের বর্ণনা I তিনি নবী নোহ (নুহ) এবং ইব্রাহিমের পিবিইউটি সময়ের মধ্যে বাস করতেন I বাইবেল তার সম্বন্ধে এইভাবে বর্ণনা করে:
ষ দেশে ইয়োব নামে এক জন লোক বাস করতেন| ইয়োব একজন সত্ ও অনিন্দনীয় মানুষ ছিলেন| ইয়োব ঈশ্বরের উপাসনা করতেন এবং মন্দ কাজ করা থেকে বিরত থাকতেন| 2 ইয়োবের সাতটি ছেলে এবং তিনটি মেয়ে ছিল| 3 ইয়োবের 7,000টি মেষ, 3,000টি উট, 500 জোড়া বলদ, 500 স্ত্রী গাধা এবং অনেক দাসদাসী ছিল| ইয়োব ছিলেন পূর্বদেশের সব চেয়ে ধনী লোক| 4 তাদের বাড়ীতে তাঁর পুত্ররা পালা করে ভোজ সভার আয়োজন করত| এবং তারা তাদের বোনদের নিমন্ত্রণ করতো| 5 তাঁর পুত্রদের ভোজসভা শেষ হয়ে গেলে ইয়োব প্রত্যূষে ঘুম থেকে উঠতেন এবং তাঁর সন্তানদের প্রত্যেকের জন্য একটি করে হোমবলি উত্সর্গ করতেন| তিনি ভেবেছিলেন, “হয়তো আমার সন্তানরা মনে মনে ঈশ্বরকে অভিশাপ দিয়ে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কোন পাপ করেছে|” ইয়োব বরাবরই এই কাজ করেছেন যাতে তাঁর সন্তানদের পাপ ক্ষমা করা হয়|
আইয়্যুব 1:1-15
আইয়্যুবের মধ্যে সুরা আল-বাইয়্যিনাহ এবং সুরা
আল-আছর দ্বারা ঘোষিত প্রয়োজনীয় সমস্ত গুনাবলী ছিল I কিন্তু তখন শয়তান সদাপ্রভুর
কাছে এল I আইয়্যুবের বই তাদের
কথাবার্তাকে নথিভুক্ত করে I
6 তারপর সেই দিনটি এল য়েদিন দেবদূতেরাপ্রভুর সঙ্গে দেখা করতে এলেন| শয়তানও দেবদূতদের সঙ্গে এসেছিল| 7 প্রভু তখন শয়তানকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোথায় ছিলে?” শয়তান প্রভুকে উত্তর দিল, “আমি পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম|” 8 তারপর প্রভু শয়তানকে বললেন, “তুমি কি আমার দাস ইয়োবকে দেখেছো? পৃথিবীতে ইয়োবের মতো আর কোন লোকই নেই| ইয়োব এক জন সত্ এবং অনিন্দনীয় মানুষ| সে ঈশ্বরের উপাসনা করে এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে|” 9 শয়তান উত্তর দিল, “নিশ্চয়! কিন্তু ইয়োব য়ে ঈশ্বরের উপাসনা করে তার য়থেষ্ট কারণ রযেছে! 10 আপনি তাকে, তার পরিবারকে এবং তার যা কিছু আছে সব কিছুকে সর্বদাই রক্ষা করেন| সে যা কিছু করে সব কিছুতেই আপনি তাকে সফলতা দেন| তার গবাদি পশুর দল ও মেষের পাল দেশে এমশঃ বেড়েই চলেছে| 11 কিন্তু তার যা কিছু রযেছে তা যদি আপনি ধ্বংস করে দেন আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, সে আপনার মুখের ওপরে আপনাকে অভিশাপ দেবে|” 12 প্রভু শয়তানকে বললেন, “ঠিক আছে, ইয়োবের যা কিছু আছে তা নিয়ে তুমি যা খুশী তাই কর| কিন্তু তার দেহে কোন আঘাত করো না|”তারপর শয়তান প্রভুর কাছ থেকে চলে গেল|
আইয়্যুব 1:6-12
অতএব শয়তান তখন এইভাবে আইয়্যুবের উপরে
বিপর্যয় নিয়ে এল
13 এক দিন ইয়োবের ছেলেমেয়েরা তাদের সব থেকে বড় দাদার বাড়ীতে দ্রাক্ষারস পান ও নৈশ আহার করছিল| 14 তখন এক জন বার্তাবাহক এসে ইয়োবকে সংবাদ দিল, “বলদগুলো জমিতে হাল দিচ্ছিল এবং স্ত্রী গাধাগুলো কাছাকাছি চরে ঘাস খাচ্ছিল, তখন 15 শিবাযীযেরা আমাদের আক্রমণ করে পশুদের ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং অন্য ভৃত্যদের তরবারি দিয়ে হত্যা করে| এক মাত্র আমিই পালাতে পেরেছি| তাই আমি আপনাকে সংবাদটা দিতে এসেছি!” 16 যখন সেই বার্তাবাহক কথা বলছিল তখনই আরও এক জন বার্তাবাহক ইয়োবের কাছে এলো| দ্বিতীয় বার্তাবাহক ইয়োবকে বলল, “আকাশ থেকে বাজ পড়ে আপনার মেষ এবং ভৃত্যরা সব পুড়ে গিয়েছে| এক মাত্র আমিই রক্ষা পেয়েছি| তাই আমি আপনাকে সংবাদটা দিতে এসেছি!” 17 যখন সেই বার্তাবাহক কথা বলছিল তখন আরো এক জন বার্তাবাহক এলো| তৃতীয় বার্তাবাহক বলল, “কল্দীযরা তিন দল সৈন্যে ভাগ হয়েছিল| ওরা আমাদের আক্রমণ করে উটগুলিকে নিয়ে গিয়েছে! ওরা ভৃত্যদের তরবারি দিয়ে হত্যা করেছে| এক মাত্র আমিই রক্ষা পেয়েছি| তাই আমি আপনাকে সংবাদটা দিতে এসেছি!” 18 যখন তৃতীয় বার্তাবাহক কথা বলছিল তখন আরও এক জন বার্তাবাহক এলো| চতুর্থ বার্তাবাহক বলল, “আপনার ছেলেমেয়েরা তাদের বড় দাদার বাড়ীতে আহার করছিল ও দ্রাক্ষারস পান করছিল| 19 তখন মরুভূমি থেকে হঠাত্ই একটা ঝড় এসে বাড়ীটাকে ভেঙে দেয়| বাড়ীটা অল্পবয়সী লোকদের ওপরে ভেঙে পড়ে এবং তারা মারা যায়| এক মাত্র আমিই রক্ষা পেয়েছি| তাই আমি আপনাকে সংবাদটা দিতে এসেছি!” 20 যখন ইয়োব এইসব শুনলেন, তখন তিনি তাঁর বস্ত্র ছিঁড়ে ফেললেন এবং মাথা কামিযে ফেললেন| এভাবেই তিনি তাঁর শোক প্রকাশ করলেন| তারপর ইয়োব মাটিতে লুটিযে পড়লেন এবং ঈশ্বরের সামনে নত হলেন| 21 তিনি বললেন:“যখন আমি জন্মেছিলাম আমি নগ্ন ছিলাম, যখন আমি মারা যাবো তখনও আমি নগ্ন থাকব| প্রভু দেন এবং প্রভুই নিয়ে নেন| প্রভুর নামের প্রশংসা করো!” 22 এ সব কিছুই ঘটলো, কিন্তু ইয়োব কোন পাপ করেননি| ইয়োব একথা বলেননি য়ে ঈশ্বর কোন ভুল করেছেন|
আইয়্যুব 1:13-22
শয়তান তখনও আইয়্যুবকে সদাপ্রভুকে শ্রাপ
দিতে প্ররোচিত করতে চাইল I সুতরাং সেখানে একটি দ্বিতীয় পরীক্ষা ছিল I
একদিন দেবদূতরা প্রভুর সঙ্গে দেখা করতে এলেন| শয়তানও তাদের সঙ্গে প্রভুর কাছে দেখা করতে এলো| 2 প্রভু শয়তানকে বললেন, “তুমি কোথায় ছিলে?”শয়তান প্রভুকে উত্তর দিলো, “আমি পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম এবং এদিক-ওদিক যাচ্ছিলাম|” 3 তখন প্রভু শয়তানকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি আমার দাস ইয়োবকে দেখেছো? পৃথিবীতে ইয়োবের মতো আর কোন লোক নেই| ইয়োব এক জন সত্ এবং অনিন্দনীয মানুষ| সে এখনও তার সততাকে ধরে আছে যদিও তুমি সম্পূর্ণ বিনা কারণে তাকে ধ্বংস করতে আমাকে প্ররোচিত করেছিলে|” 4 তখন শয়তান উত্তর দিল, “নিজেকে রক্ষা করার জন্য য়ে কেউই যা কিছু করতে পারে|নিজের জীবন রক্ষা করার জন্য এক জন তার সর্বস্ব দিয়ে দেবে| 5 আপনি যদি তার দেহে আঘাত করার জন্য আপনার শক্তিকে ব্যবহার করেন, তাহলে আমি জোর দিয়ে বলতে পারি য়ে সে মুখের ওপরই আপনাকে অভিশাপ দেবে|” 6 তখন প্রভু শয়তানকে বললেন, “ঠিক আছে, ইয়োব এখন তোমার ক্ষমতার মধ্যে| কিন্তু তুমি তাকে মেরে ফেলতে পারবে না|” 7 তখন শয়তান প্রভুর কাছ থেকে চলে গেল| শয়তান যন্ত্রণাদাযক ফোড়ায ইয়োবের পা থেকে মাথা পর্য়ন্ত ভরিয়ে দিল| 8 তখন ইয়োব ছাইযের গাদার মধ্যে বসলেন| একটা ভাঙা খোলামকুচি (সরা বা হাঁড়ির ভাঙা টুকরো) দিয়ে তিনি তাঁর ক্ষত চাঁছতে লাগলেন| 9 ইয়োবের স্ত্রী তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি এখনো ঈশ্বরের প্রতি সততায় অবিচল আছ? কেন তুমি ঈশ্বরকে অভিশাপদিচ্ছো না এবং মরছো না!” 10 ইয়োব তাঁর স্ত্রীকে উত্তর দিলেন, “তুমি এক জন নির্বোধ স্ত্রীলোকের মত কথা বলছো! ঈশ্বর আমাদের ভালো জিনিস দেন এবং আমরা তা গ্রহণ করি| সেই ভাবে আমাদের, তাঁর প্রদত্ত দুঃখ কষ্টও গ্রহণ করা উচিত্|” এই সব ঘটনা ঘটলো, কিন্তু ইয়োব ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কোন কথা বলে কোন পাপ করলেন না|
আইয়্যুব 2:1-10
এই কারণেই সুরা আল-আন্বিয়া কষ্টের মধ্যে আইয়্যুবের ক্রন্দনকে বর্ণনা করে এবং সুরা ছোয়াদ ব্যাখ্যা করে যে মন্দ
একজন (শয়তান) তাকে কষ্ট দিয়েছিল I .
তাঁর করুণায়, আইয়্যুবের তিন বন্ধু তার কাছে
স্বান্তনা নিয়ে আসতে তার কাছে এসেছিল I
11 ইয়োবের তিনজন বন্ধু হলেন তৈমনীয ইলীফস, শূহীয বিল্দদ ও নামাথীয সোফর| ইয়োবের প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা তিন বন্ধুই শুনলেন| তাঁরা তিন জনে বাড়ী থেকে বেরিয়ে এক জায়গায় মিলিত হলেন| তাঁরা ইয়োবের কাছে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানাতে ও সান্ত্বনা জানাতে রাজী হলেন| 12 কিন্তু তিন বন্ধু ইয়োবকে অনেক দূর থেকে দেখলেন| তাঁরা তাঁকে চিনতেই পারছিলেন না| তাঁরা উচ্চস্বরে কাঁদতে শুরু করলেন| তাঁরা নিজের কাপড় ছিঁড়ে ফেললেন এবং নিজেদের মাথার ওপরে শূন্যে ধূলো ছুঁড়লেন| 13 তারপর সেই তিন বন্ধু ইয়োবের সঙ্গে সাতদিনসাতরাত বসে রইলেন| কেউই ইয়োবের সঙ্গে কোন কথা বলেন নি কারণ তাঁরা দেখেছিলেন ইয়োব অতিরিক্ত কষ্ট পাচ্ছিলেন|
আইয়্যুব 2:11-13
আইয়্যুবের বই তাদের আলোচনাকে
লিপিবদ্ধ করে কেন আইয়্যুবের প্রতি এই ধরণের দুর্ভাগ্য ঘটল I যাদের কথাবার্তা অনেক
অধ্যায় ধরে বিস্তৃত রয়েছে I সংক্ষেপে, তার
বন্ধুরা আইয়্যুবকে বলে যে এই ধরণের ভীষণ
দুর্ভাগ্য কেবল মন্দ লোকেদের উপরে আসে, তাই আইয়্যুব নিশ্চয়ই গুপ্তভাবে পাপ
করেছে I সে যদি এই পাপগুলোকে স্বীকার করে তবে হয়ত তাকে ক্ষমা প্রদান করা হবে I
কিন্তু আইয়্যুব অবিরতভাবে জবাব দেয় যে সে অন্যায়-কার্য সম্বন্ধে নির্দোষ I সে
বুঝতে পারছে না কেন তার উপরে দুর্ভাগ্য এসেছে I
আমরা তাদের র্দীর্ঘ কথাবার্তার প্রত্যেকটি অংশকে অনুসরণ করতে পারি না, তবে তার
প্রশ্নের মাঝে আইয়্যুব যা নিশ্চিতভাবে জানে
তা বলে:
25 আমি জানি একজন আমার স্বপক্ষে আছে| আমি জানি সে বেঁচে আছে| এবং শেষ কালে সে এই মাটিতে দাঁড়াবে এবং আমায় প্রতিরক্ষা করবে| 26 আমি আমার দেহ ত্যাগ করে চলে যাবার পরে এবং আমার দেহের চামড়া নষ্ট হওয়ার পরেও আমি ঈশ্বরকে দেখবো, আমি তা জানি| 27 আমি নিজের চোখে ঈশ্বরকে দেখবো| অন্য কেউ নয়, আমি নিজে ঈশ্বরকে দেখবো, এবং তা আমাকে কতখানি অভিভূত করবে তা আমি বলতে পারবো না! আমার শক্তি সম্পূর্ণ ভাবে চলে গেছে|
আইয়্যুব 19:25-27
যদিও সে বুঝতে পারল না কেন তার উপরে বিপর্যয় এল, সে জানত যে একজন
‘উদ্ধারকর্তা’ পৃথিবীতে আসছেন I উদ্ধারকর্তা এমন একজন যিনি তার পাপ সমূহের জন্য
যথেষ্ট মূল্য প্রদান করতে পারেন I আইয়্যুব
উদ্ধার্কর্তাকে ‘আমার উদ্ধারকর্তা’ বলে ডাকে তাই সে জানত যে উদ্ধারকর্তা তার জন্য
আসছেন I আইয়্যুবের ‘ত্বক বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার পরে’ (সে মারা গেছে) সে ঈশ্বরকে তাঁর
দেহে দেখবে I
আইয়্যুব পুনরুত্থানের দিনের
দিকে তাকিয়ে আছে I তবে সে আত্ম বিশ্বাসের সাথে পুনরুত্থানের মধ্যে ঈশ্বরের
সম্মুখীন হবে কারণ তার উদ্ধারকর্তা বেঁচে আছেন এবং তাকে উদ্ধার করেছেন I
সুরা আলমা’আরিজ
(সুরা 70 – আরোহনকারী সিঁড়ি) পুনরুত্থানের দিনে একজন উদ্ধার্কর্তার সম্বন্ধেও বলে
I তবে সুরা আলমা’আরিজ একজন নির্বোধ লোকের বর্ণনা করে, যে পুনরুত্থানের দিনের কোনো
উদ্ধার্কর্তার জন্য উন্মত্তবৎ তাকিয়ে আছে
I
11 যদিও একে অপরকে দেখতে পাবে। সেদিন গোনাহগার ব্যক্তি পনস্বরূপ দিতে চাইবে তার সন্তান-সন্ততিকে,12 তার স্ত্রীকে, তার ভ্রাতাকে,13 তার গোষ্ঠীকে, যারা তাকে আশ্রয় দিত। 14 এবং পৃথিবীর সবকিছুকে, অতঃপর নিজেকে রক্ষা করতে চাইবে।
সুরা আলমা’আরিজ) 70:11-14
সুরা আল-মা’আরিজ
এর নির্বোধ মানুষটি তার কোন উদ্ধারকর্তার জন্য সাফল্যের দিকে দেখে না I সে একজন
উদ্ধারকর্তার জন্য তাকিয়ে আছে যে তাকে ‘সেই দিনের শাস্তির’ থেকে উদ্ধার করতে পারে –
বিচারের দিনে I তার সন্তানগণ, স্ত্রী, ভাই এবং পৃথিবীর উপরে সকলে তাকে উদ্ধার করতে
পারে না I তাদের নিজেদের শাস্তির মূল্য প্রদান করার কারণে তারা তাকে উদ্ধার করতে
পারে না I
আইয়্যুব এজন ন্যায়পরায়ণ মানুষ ছিল, তবুও সে জানত সেই দিনের জন্য তার একজন উদ্ধারকর্তার প্রয়োজন I সে বিশ্বস্ত ছিল যে, তার সমস্ত বিপদ সত্ত্বেও, তার কাছে এই উদ্ধারকর্তা ছিলেন I যেহেতু তাওরাত ঘোষণা করেছিল যে কোনো পাপের মূল্য হ’ল মৃত্যু, উদ্ধারকর্তাকে তার জীবন দিয়ে মূল্য চোকাতে হবে I আইয়্যুব জানত যে তার উদ্ধারকর্তা “শেষ সময়ে পৃথিবীর উপরে দাঁড়াবেন’ I আইয়্যুবের ‘উদ্ধারকর্তা’ কে ছিলেন? সেই একমাত্র ব্যক্তি যিনি কখনও মারা গিয়েছিলেন, তবে পরে পৃথিবীর উপরে পুনরায় দাঁড়াবার জন্য পুনরুত্থিত হয়েছিলেন তিনি হলেন নবী ঈসা আল মসীহ পিবিইউএইচ I তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি সম্ভবত শাস্তির মূল্য (মৃত্যু) চোকাতে পারতেন তবে ‘শেষে পৃথিবীর উপরে দাঁড়াতে পারেন’ I
আইয়্যুবের মতন একজন ধার্মিক মানুষের নিজের জন্য যদি একজন উদ্ধারকর্তার প্রয়োজন হয়, তবে আপনার এবং আমার জন্য শাস্তির মূল্য চোকাতে কতটা বেশি একজন উদ্ধারকর্তার প্রয়োজন হয়? সুরা আল-বাইয়্যিনাহ এবং সুরা আল-আছর এর মধ্যে তালিকা ভুক্ত উত্তম গুনাবলীর একজন মানুষের যদি উদ্ধারকর্তার প্রয়োজন হয় তবে আমাদের কি হবে? আমাদেরকে সুরা আল-মা’আরিজ এর নির্বোধ মানুষটির মতন হতে দেব না, যে শেষ দিন পর্যন্ত উন্মত্তবৎ একজনের জন্য অপেক্ষা করতে চেষ্টা করে যে তার শাস্তির মূল্য চোকাতে পারে I নবী যেমন আগে থেকেই দেখেছিলেন, বুঝুন এখন নবী ঈসা আল মসীহ পিবিইউএইচ কিভাবে আপনাকে উদ্ধার করতে পারেন, যেমন নবী আইয়্যুব আগে থেকেই দেখেছিলেন I
বইয়ের শেষে, আইয়্যুবের সঙ্গে সদাপ্রভুর সাক্ষাৎকার হয় (এখানে) এবং তার উত্তম ভাগ্য পুনস্থাপিত হয় (এখানে)I
নবী এলিয় (বা এলাইজা) সুরা আল-আনম এবং আস-সাফফাতের মধ্যে নাম করে তিন জায়গায়
উল্লিখিত হয়েছেন I তারা আমাদের বলে
আর ও যাকারিয়া, ইয়াহিয়া, ঈসা এবং ইলিয়াসকে। তারা সবাই পুণ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
আল-আনআম 6:85
123 নিশ্চয়ই ইলিয়াস ছিল রসূল। 124 যখন সে তার সম্প্রদায়কে বললঃ তোমরা কি ভয় কর না ? 125 তোমরা কি বা’আল দেবতার এবাদত করবে এবং সর্বোত্তম স্রষ্টাকে পরিত্যাগ করবে। 126 যিনি আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের পালনকর্তা? 127 অতঃপর তারা তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। অতএব তারা অবশ্যই গ্রেফতার হয়ে আসবে। 128 কিন্তু আল্লাহ তা’আলার খাঁটি বান্দাগণ নয়। 129 আমি তার জন্যে পরবর্তীদের মধ্যে এ বিষয়ে রেখে দিয়েছি যে, 130 ইলিয়াসের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক! 131 এভাবেই আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি। 132 সে ছিল আমার বিশ্বাসী বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত।
আস=সাফফাত 37:123-132
এলিয়াকে যোহন (যিয়াহিয়া) এবং যীশুর সাথে উল্লেখ করা হয়েছে কারণ তিনিও বাইবেলের নবীদের মধ্যে অনতম I যেমন বলা হয়েছে এলিয়া (এলাইজা) বাল মূর্তির নবীদের মখোমুখি হয়েছিলেন I এই প্রসঙ্গটিকে অনেক বিস্তৃতভাবে বাইবেলে এখানে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে I নিচে আমাদের জন্য আশীর্বাদ (‘পরবর্তী সময়ের প্রজন্ম সমূহ’ যাকে আস-সাফফত প্রতিশ্রুতি দেয়) অন্বেষণ করি I
এলিয়া
এবং বালের নবীদের জন্য পরীক্ষা
এলাইজা একজন কড়া লোক যিনি বালের 450 জন নবীর মুখোমুখি
হয়েছিলেন I কিভাবে তিনি এত বিরোধিতা করতে পারেন? বাইবেল ব্যাখ্যা করে যে তিনি একটি
চতুর পরীক্ষা ব্যবহার করেছিলেন I তাকে এবং বালের নবী উভয়কে একটি প্রাণীর বলি দিতে
ছিল তবে বলিকে পোড়াবার জন্য আগুন জ্বালাবে না I প্রত্যেক পক্ষ আগুন জ্বালাতে
স্বর্গ থেকে নিজের ঈশ্বরকে ডাকবে I বলি পোড়াবার জন্য যে ঈশ্বর স্বর্গ থেকে আগুন
জ্বালাবে – সেই প্রকৃত এবং জীবন্ত ঈশ্বর I সুতরাং এই 450 নবীরা বালকে সারা দিন ধরে
ডাকল স্বর্গ থেকে তাদের বলিকে জ্বালাতে – কিন্তু কোনো আগুন এলো না I তখন এলাইজা,
নিজেই তার বলিকে জ্বালাতে স্রষ্টাকে ডাকলেন এবং তৎক্ষনাত আকাশ থেকে আগুন এলো এবং
পুরো বলিটিকে পুড়িয়ে দিল I যে লোকেরা এই প্রতিযোগিতা প্রত্যক্ষ্য করল তখন জানল যে
প্রকৃত ঈশ্বর আর মিথ্যা ঈশ্বর কে I বালকে মিথ্যা হিসাবে দেখানো হয়েছিল I
আমরা এই প্রতিযোগিতার স্বাক্ষী ছিলাম না, তবে আমরা
এলাইজার পরীক্ষার একই কৌশলকে অনুসরণ করতে পারি জানতে যে কোনো বার্তা বা নবী
ঈশ্বরের থেকে এসেছে কি না I কৌশলটি এমন উপায়ে পরীক্ষা করে যে কেবল ঈশ্বর এবং তাঁর
দূতগণ সফল হতে পারে এবং বালের নবীদের মতন যাদের কেবল মানবীয় ক্ষমতা আছে, তারা পারে
না I
আজকের দিনে এলাইজারের পরীক্ষা
এলাইজারের আত্মায় এমন একটি পরীক্ষা, কি হবে?
সুরা আন-নাজম আমাদের বলে
অতএব, পরবর্তী ও পূর্ববর্তী সব মঙ্গলই আল্লাহর হাতে।
আন-নাজম 53:25
সমস্ত জিনিসের শেষ কেবলমাত্র ঈশ্বর জানেন, এমনকি শেষ
ঘটবার আগে I মানুষ সেগুলো ঘটবার আগে জিনিসগুলোর শেষ জানে না, কেবল সেগুলো ঘটার পরে
I সুতরাং পরীক্ষা হ’ল দেখা বার্তাটি সঠিকভাবে ভবিষ্যতের পূর্বাভাষ দিয়েছে কি না
এটি ঘটবার আগে I কোনো মানুষ বা মূর্তি এটি করতে পারে না I কেবল ঈশ্বর পারেন I
অনেকে আশ্চর্য বোধ করে ইঞ্জিলে নবী ঈসা আল মসীহ পিবিইউএইচ যেমন প্রকাশিত হয়েছেন সেটি ঈশ্বরের সত্য বার্তা কি না, বা যদি এটিকে চতুর লোকেদের দ্বারা মনগড়ন করা হয়েছে I আমরা এই প্রশ্নটিতে এলাইজারের পরীক্ষাটি প্রয়োগ করতে পারি I এলিয়ার মতন নবীদের সাথে তাওরাত এবং যাবুরের বইগুলো ঈসা আল মসীহর পিবিইউএইচ সময়ের কয়েকশত, এমনকি কয়েক হাজার বছর পূর্বে লেখা হয়েছিল I এগুলো যিহূদি নবীদের দ্বারা লেখা হয়েছিল আর তাই ‘খ্রীষ্টান’ লেখা নয় I প্রথম দিকের এই লেখাগুলোর মধ্যে ভাববাণীগুলো কি ঈসা আল মসীহর ঘটনাগুলোকে সঠিকভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করে? এখানে তাওরাতের দেওয়া ভাববাণীগুলোর একটি সারাংশ রয়েছে I এখানে যাবুর এবং পরবর্তী নবীদের ভাববাণীগুলোর একটি সারাংশ রয়েছে I এখন আপনি এলিয়ার মতন পরীক্ষা করে দেখতে পারেন ইঞ্জিলের মধ্যে লিপিবদ্ধ ঈসা আল মসীহ পিবিইউএইচ কি সত্যই ঈশ্বরের থেকে, বা মানুষের থেকে একটি মিথ্যা বিকৃতি I
“কোরআন হ’ল মূল ধর্মগ্রন্থ – একই ভাষা, অক্ষর, এবং আবৃত্তি I মানবীয় ব্যাখ্যা বা বিকৃত অনুবাদের কোনো স্থান নেই …আপনি যদি পৃথিবীর চারপাশের যে কোনো বাড়ির থেকে কোরআনের কোনো একটি প্রতিলিপি ওঠান আমার সন্দেহ আপনি তাদের মধ্যে এমনকি একটি পার্থক্যও দেখতে পাবেন I”
এক বন্ধু আমাকে এই নোটটি পাঠিয়েছিল I তিনি পবিত্র কোরআনের পাঠটিকে ইঞ্জিল/বাইবেলের সাথে তুলনা করছিলেন I ইঞ্জিলে 24,000 প্রাচীন পান্ডুলিপি রয়েছে এবং তাদের মধ্যে সামান্য পার্থক্য রয়েছে, যেখানে কেবলমাত্র অল্প কয়েকটি শব্দের পার্থক্য রয়েছে I যদিও 24,000 পান্ডুলিপি জুড়ে সমস্ত বিষয় এবং ধারণাগুলো সমান, তাঁর মৃত্যুর মধ্যে ঈসা আল মসীহর আমাদের জন্য মুক্তিপণ প্রদান এবং পুনরুত্থানের থিম সহ, প্রায়শই দাবি করা হয়, যেমন উপরে করা হয়েছে, কোরআনের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই I এটিকে বাইবেলের উপরে কোরআনের আধিপত্যের এক ইঙ্গিত এবং এর অলৌকিক সুরক্ষার স্বাক্ষ্য রূপে দেখা হয় I তবে কোরআনের গঠন এবং সংকলন সম্পর্কে হাদীস আমাদের কি বলে?
নবী
থেকে খলিফা কোরআনের গঠন
বর্ণিত: উমর
বিন আল-খাত্তাব:
আমি হিশাম বিন হাকিম বিন হিজামকে আমার থেকে এক ভিন্ন ভাবে সুরা-আল-ফুরকান আবৃত্তি করতে শুনলাম I আল্লাহ’র দূত আমাকে এটি শিখিয়েছিলেন (এক ভিন্ন উপায়ে) I তাই আমি তার সাথে ঝগড়া করতে উদ্যত ছিলাম (প্রার্থনার সময়ে) তবে আমি অপেক্ষা করলাম যতক্ষণ না এ শেষ করে, তারপরে আমি তার বস্ত্র দিয়ে তাকে গলার চারপাশে বাঁধলাম এবং এর দ্বারা তাকে কব্জা করলাম এবং তাকে আল্লাহর দুতের কাছে নিয়ে গেলাম এবং বললাম, “আমি তাকে সুরা-আল-ফুরকান এমনভাবে আবৃত্তি করতে শুনেছি যা আপনার আমাকে এটি শেখানোর থেকে আলাদা I” নবী আমাকে আদেশ দিলেন তাকে ছেড়ে দিতে এবং হিশামকে এটি আবৃত্তি করতে বললেন I যখন সে এটি আবৃত্তি করল, আল্লহর প্রেরিত বললেন,”এটি এইভাবেই প্রকাশিত হয়েছিল I” তিনি তখন আমাকে এটি আবৃত্তি করতে বললেন I যখন আমি এটি আবৃত্তি করলাম, তিনি বললেন, “এটি এইভাবেই প্রকাশিত হয়েছিল I কোরআন সাতটি বিভিন্ন উপায়ে প্রকাশিত হয়েছে I অতএব যে উপায়ে এটি আবৃত্তি করলে তোমার পক্ষে সহজ হয় সেই উপায়ে কর I”
শাহি আল-বুখারি 2419 :বই 44, হাদীস 9
বর্ণিত ইবন
মাসুদ:
আমি এক ব্যক্তিকে এক নির্দিষ্ট উপায়ে একটি (কোরআন সম্বন্ধীয়) আয়াত আবৃত্তি করতে শুনলাম, এবং আমি নবীকে সেই একই আয়াতকে এক ভিন্ন উপায়ে আবৃত্তি করতে শুনেছিলাম I অতএব আমি তাকে নবীর কাছে নিয়ে গেলাম এবং সেই সম্বন্ধে বললাম তবে আমি তার মুখে অস্বীকৃতির ভাব লক্ষ্য করলাম, এবং তারপরে তিনি বললেন, “তোমরা উভয়ই সঠিক, তাই তোমরা পৃথক হবে না, কারণ জাতিরা তোমাদের মধ্যে মতভেদ হওয়ার আগেই, তারা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল I”
শাহি আল-বুখারি 3476: বই 60, হাদীস 143
এই দুটো পরিষ্কারভাবে আমাদের
বলে যে নবী মহম্মদের (পিবিইউএইচ) জীবদ্দশায় কোরআনের আবৃত্তির বিভিন্ন সংস্করণ ছিল
যাকে মহম্মদের (পিবিইউএইচ) দ্বারা ব্যবহৃত এবং অনুমোদিত করা হয়েছিল I সুতরাং তার
মৃত্যুর পরে কি ঘটল?
আবু
বকর এবং কোরআন
বর্ণিত জাইদ
বিন থাবিত:
আবু বকর আস-সিদ্দিক আমাকে ডেকে পাঠান যখন ইয়ামামার লোকদের হত্যা করা হয়েছিল (অর্থাৎ মুসায়লিমার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এমন অনেক নবীর সঙ্গীরা), (আমি তার কাছে গেলাম) এবং ‘উমর বিন আল-খাত্তাবকে তার সাথে বসতে দেখলাম I আবু বকর তখন বললেন (আমাকে), “উমর আমার কাছে এসে বলল: ইয়ামামার লড়াইয়ের দিনে কোরআনের কোরার (অর্থাৎ যারা মন থেকে কোরআনকে জানত) মধ্যে হতাহতের সংখ্যা ভারী ছিল, আর আমি ভীত যে অন্যান্য যুদ্ধ ক্ষেত্রগুলোতে কোরার মধ্যে আরও অনেক হতাহত ঘটতে পারে, যেখানে কোরআনের এক বৃহৎ অংশ হারিয়ে যেতে পারে I অতএব আমার পরামর্শ, তুমি (আবু বকর) আদেশ দাও যে কোরআন সংগ্রহ করা হোক “কিভাবে আপনি এমন কিছু করতে পারেন যা আল্লাহর প্রেরিত করেন নি?” আমি উমরকে বললাম, উমর বলল, “আল্লাহর কসম, ওটি একটি ভাল প্রকল্প I” উমর আমাকে তার প্রস্তাব স্বীকার করতে তাগিদ দিতে থাকলেন যতক্ষণ না আল্লাহ এর জন্য আমার বুক খুলে দেন আর আমি ধারণাটির মধ্যে ভালকে উপলব্ধি করতে শুরু করলাম যেটিকে উমর হৃদয়ঙ্গম করতে পেরেছিল I” তখন আবুবকর বললেন (আমাকে), ‘আপমি একজন জ্ঞানী যুবক ব্যক্তি আর আপনার সম্বন্ধে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই, এবং আপনি আল্লাহর দুতের (ﷺ) পক্ষে স্বর্গীয় প্রেরণার কথা লিখতে থাকেন I সুতরাং আপনার কোরআনের (খন্ডিত লিপিগুলো) অন্বেষণ করে একটি বইয়ের মধ্যে সংকলিত করে রাখা উচিত I” আল্লাহ কসম, তারা যদি আমাকে পর্বতগুলোর মধ্যে একটিকে সরাতে বলত, আমাকে কোরআন সংগ্রহ করার এই আদেশের তুলনায় এটি আমার পক্ষে বেশি ভারী হত না I তখন আমি আবু বকরকে বললাম, “আপনি কি করে এমন কিছু করবেন যা আল্লাহর দূত (ﷺ) করেন নি?” আবু বকর উত্তর দিলেন, “আল্লাহ কসম, এটি একটি ভাল প্রকল্প I” আবু বকর আমাকে তার প্রস্তাব স্বীকার করতে তাগিদ দিতে থাকলেন যতক্ষণ না আল্লাহ এর জন্য আমার বুক খুলে দেন যার জন্য তিনি আবু বকর এবং উমরের বুক খুলে দিয়েছেন I অতএব আমি কোরআন খুঁজতে এবং এটিকে সংগ্রহ করতে আরম্ভ করলাম (যা লেখা ছিল) তালপাতার বৃন্ত, পাতলা সাদা পাথর থেকে এবং সেই লোকেদের থেকেও যারা এটিকে মনে মনে জানত যতক্ষণ না আমি আবি খুযাইমা আল-আনসারির সাথে সুরা-আট-তৌবার (অনুশোচনা) শেষ আয়াতটি খুঁজে পেলাম এবং তাকে ছাড়া আমি আর কারোর কাছে এটিকে খুঁজে পাই নি I আয়াতটি হ’ল: সত্যই তোমাদের কাছে তোমাদের মধ্য থেকেই একজন প্রেরিত (মহম্মদ) এসেছেন I এটি তাকে দুঃখ দেয় আপনার যদি কোনো আঘাত বা অসুবিধা হয় ..(সুরাত-বারার’ (আট-তৌবা) শেষ পর্যন্ত (9.128-129) I তখন তার মৃত্যু পর্যন্ত কোরআনের সম্পূর্ণ পান্ডুলিপি (প্রতিলিপি) আবু বকরের কাছে রইল, তারপরে উমরের কাছে তার জীবনের শেষ পর্যন্ত, এবং তার পরে উমরের কন্যা, হাফসার কাছে I
শাহি আল-বুখারী 4986 : বই 66, হাদীস 8
এটা তখনকার সময় যখন আবু বকর
খলিফা ছিল, সরাসরিভাবে মহম্মদের (পিবিইউএইচ) উত্তরাধিকারী I এটি আমাদের বলে যে
মহম্মদ (পিবিইউএইচ) কোরআনকে কখনও আদর্শ পাঠ্যে সংগ্রহ করেন নি বা কোনো ইঙ্গিত
দিয়েছিলেন যে এই জাতীয় কোনো জিনিস করা উচিত I যারা কোরআন মনে রেখেছিল তাদের মধ্যে
লড়াইয়ের ভারী হতাহতের সাথে, আবু বকর এবং উমর (সে দ্বিতীয় খলিফা হয়েছিল) জাইদকে
বিভিন্ন সুত্র থেকে একটি কোরআনকে সংগ্রহ করা শুরু করতে প্ররোচিত করল I জাইদ প্রথমে
অনিচ্ছুক ছিল কারণ মহম্মদ (পিবিইউএইচ) কখনও পাঠ্যটির মানদণ্ডের প্রয়োজনীয়তার
ইঙ্গিত দেন নি I নিম্নলিখিত হাদীস অনুসারে তিনি তার অমুগামীদের কোরআন শিক্ষা
দেওয়ার জন্য তার সঙ্গীদের অনেকের উপরে ভরসা করেছিলেন I
বর্ণিত মাসরিক:
আবদুল্লা বিন অমর আবদুল্লা বিন মাসুদকে উল্লেখ করলেন এবং বললেন, “আমি সেই মানুষটিকে সর্বদা ভালবাসব, কারণ আমি নবীকে (ﷺ) বলতে শুনেছি, “চারজনের থেকে কোরআন ‘নাও (শেখ): আবদুল্লা বিন মাসুদ, সেলিম, মু’য়াধ এবং উবাই বিন কা’ব’”
শাহি আল-বুখারি 4999: বই 66,হাদীস 21
যাইহোক, নবীর (পিবিইউএইচ)
মৃত্যুর পরে সঙ্গীদের মধ্যে এই বিভিন্ন আবৃত্তি সমূহের কারণে মতভেদ জন্মালো I নিচে
সুরা 92:1-3 (আল-লায়ল) এর উপরে হাদীস এক মতভেদের সম্বন্ধে বলে I
বর্ণিত ইব্রাহিম:
‘আবদুল্লার (বিন মাসুদ) সঙ্গীরা আবু দারদার কাছে এলেন’, (এবং তার বাড়িতে তাদের পৌঁছনোর পূর্বে), তিনি তাদের সন্ধান করলেন এবং খুঁজে পেলেন I তারপরে তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করেন, “তোমাদের মধ্যে কে আবদুল্লা যেমন এটিকে আবৃত্তি করে সেইরকম আবৃত্তি (কোরআন) করতে পার?” তারা উত্তর দিল, “আমরা সবাই I” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের মধ্যে কে এটিকে মনে মনে জানে?” তারা আলকামার দিকে আঙ্গুল তুলে দেখাল I তখন তিনি আলকামাকে জিজ্ঞাসা করলেন I “তোমরা আবদুল্লা বিন মাসুদকে সুরা আল লায়ল (রাত্রি) আবৃত্তি করতে কিভাবে শুনলে?” আলকামা আবৃত্তি করলেন, ‘পুরুষ এবং স্ত্রীর কসম I’ আবু আদ-দারদা বললেন, “আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি যে নবীকে আমি এটিকে অনুরূপভাবে আবৃত্তি করতে শুনেছি, কিন্তু এই লোকেরা চায় আমি এটিকে আবৃত্তি করি:- ‘এবং তার কসম যিনি পুরুষ এবং স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন,’ কিন্তু আল্লাহ কসম, আমি তাদের অনুসরণ করব না I”
আজকের কোরআনে সুরা আল-লায়ল
92:3 এর দ্বিতীয় পাঠ রয়েছে I মজার বিষয় হ’ল আবদুল্লা, যিনি কোরআনের আবৃত্তির উপরে
পূর্ববর্তী হাদীসের চারজনের একজন তাকে মহম্মদের (পিবিইউএইচ) দ্বারা কোরআন
সম্বন্ধীয় আবৃত্তির উপরে এক কর্ত্তৃত্ব রূপে বিশেষ ভাবে পৃথক করা হয়েছিল, এবং আবু
আদ-দারদা এই আয়াতের জন্য এক ভিন্ন আবৃত্তি ব্যবহার করেছিলেন এবং অন্যদের অনুসরণ
করতে ইচ্ছুক ছিলেন না I
নিম্নলিখিত হাদীস দেখায় যে
ইসলাম সাম্রাজ্যের সমগ্র অঞ্চল বিভিন্ন আবৃত্তি সমূহ অনুসরণ করছিল, এমন পর্যন্ত যে
একজন যাচাই করতে পারত কোথা থেকে কেউ এসেছিল কোন আবৃত্তি সে ব্যবহার করেছিল I নিচের
ঘটনায়, কুফার ইরাকীরা আবদুল্লা বিন মাসুদের সুরা 92: 1-3 এর আবৃত্তি অনুসরণ করছিল
I
আলকামা জানিয়েছেন:
আমি আবু দারদার’, সঙ্গে দেখা করেছিলাম আর তিনি আমাকে বললেন: কোন দেশে আপনি থাকেন? আমি বললাম: আমি ইরাকের লোকেদের একজন I তিনি আবার বললেন: কোন শহরের? আমি জবাব দিলাম: কুফা শহর I তিনি আবার বললেন: তুমি কি আবদুল্লা মাসুদের আবৃত্তি অনুসারে আবৃত্তি কর? আমি বললাম: হ্যাঁ I তিনি বললেন: এই আয়াতটিকে (রাত যখন এটিকে আচ্ছাদন করে) আবৃত্তি কর I তাই আমি এটিকে (রাত যখন এটিকে আচ্ছাদন করে এবং দিন যখন আলোকিত হয়, এবং পুরুষ ও স্ত্রী সৃষ্টি করে) আবৃত্তি করলাম: তিনি হাঁসলেন এবং বললেন: আমি আল্লাহর দূতকে (ﷺ) এইভাবে আবৃত্তি করতে শুনেছি I
শাহি মুসলিম 824 c: বই 6, হাদীস 346
বর্ণিত ইবন আব্বাস:
‘উমর বললেন, উবাই (কোরআনের) আবৃত্তির মধ্যে সর্বোত্তম ছিলেন তথাপি তার আবৃত্তির কয়েকটিকে আমরা ছেড়ে দিই I’ উবাই বলেন, ‘আমি এটিকে আল্লাহর দুতের (ﷺ) মুখ থেকে নিয়েছি এবং যাই হোক না কেন কোনো কিছুর জন্য আমি ছাড়ব না I” কিন্তু আল্লাহ বললেন “আমাদের প্রকাশনগুলোর কোনটিকে আমরা বাতিল বা বিস্মৃত হওয়ার কারণ করি না তবে আমরা আরও ভাল বা অনুরূপ কিছুকে প্রতিস্থাপন করি I”
শাহি আল-বুখারি 5005 : বই 66, হাদীস 27 2:106
যদি উবাইকে কোরআনের আবৃত্তিতে
‘সর্বোত্তম’ বলে বিবেচনা করা হয়ে থাকে (তিনি তাদের মধ্যে একজন ছিলেন যাকে পূর্বে
মহম্মদ-পিবিইউএইচ দ্বারা উল্লেখ করা হয়েছিল), সম্প্রদায়ের অন্যরা তার আবৃত্তির
কিছু বাদ দিয়েছিল I কোনটি বাতিল করতে হবে এবং কোনটি নয় সে বিষয়ে মতভেদ ছিল I বৈকল্পিক
পাঠ এবং বাতিলকরণের বিষয়ে মতভেদ উত্তেজনা সৃষ্টি করছিল I আমরা নিচে হাদীসে দেখি
কিভাবে এই সমস্যার সমাধান করা হ’ল I
খলিফা
উসমান এবং কোরআন
বর্ণিত আনাস বিন মালিক:
আর্মিনিয়া এবং আজারবাইজানকে জয় করার জন্য শাম এবং ইরাকের লোকেরা যখন যুদ্ধ চালাচ্ছিল সেই সময়ে হুধাইফা বিন আল-ইয়ামান উসমানের কাছে এলেন I হুধাইফা কোরআনের আবৃত্তির ক্ষেত্রে তাদের (শাম এবং ইরাকের লোকেরা) মতভেদ সম্পর্কে ভীত ছিলেন I তাই তিনি উসমানকে বললেন, “হে বিশ্বাসীদের প্রধান! বইটি (কোরআন) সম্পর্কে তাদের মতভেদ হওয়ার আগেই এই জাতিকে রক্ষা করুন, যেমন যিহূদি এবং খ্রীষ্টানরা পূর্বে করেছিল I” তাই উসমান হাফসাকে এই বলে একটি বার্তা পাঠালেন, “কোরআনের পান্ডুলিপিগুলো আমাদের কাছে পাঠিয়ে দাও যাতে আমরা নিখুঁত অনুলিপিগুলোতে কোরআন সম্বন্ধীয় সামগ্রীগুলো সংকলন করতে পারি এবং পান্ডুলিপিগুলো তোমাকে ফিরিয়ে দিতে পারি I” হাফসা উসমানকে এগুলো পাঠিয়ে দিল I উসমান তখন জিদ বিন থাবিত, আবদুল্লা বিন আজ্জুবায়র. সৈয়দ বিন আল-আস এবং আব্দুর রহমান বিন হারিথ বিন হিশামকে পুঁথিগুলোকে নিখুঁত অনুলিপিতে পুনরায় লেখার জন্য আদেশ দিলেন I উসমান তিনজন কুরাইশি লোকদের বললেন, “কোনো কারণে যদি কোরআনের যে কোনো বিষয়ের উপরে জাইদ বিন থাবিতের সাথে তোমাদের মতভেদ হয়, তবে এটিকে কুরাইশদের উপভাষায় লিখবে, কোরআন তাদের জিহ্বায় অবতীর্ণ হয়েছিল I” তারা তাই করল, এবং যখন তারা অনেক অনুলিপিগুলো লিখে নিল, উসমান মূল পুঁথিগুলোকে হাফসার কাছে ফেরৎ পাঠিয়ে দিলেন I উসমান তাদের করা অনুলিপিগুলোর থেকে একটি করে প্রতিলিপি প্রত্যেক মুসলিম প্রদেশে পাঠিয়ে দিলেন, এবং আদেশ দিলেন যে অন্যান্য সমস্ত কোরআন সম্বন্ধীয় সামগ্রীগুলোকে তা খন্ড খন্ড পান্ডুলিপিগুলোতে বা পুরো অনুলিপিগুলোতে লেখা হোক না কেন, পুড়িয়ে দেওয়া হোক I
শাহি আল-বুখারি 4987 : বই 66, হাদীস 9
এই কারণেই আজ কোনো বৈকল্পিক পঠন নেই I এটি কারণ নয় যে নবী মহম্মদ (পিবিউএইচ) কেবল একটি আবৃত্তি (তিনি করেন নি, তিনি সাতটি ব্যবহার করেছিলেন) গ্রহণ করেছিলেন বা ব্যবহার করেছিলেন, নাতো এই কারণে যে তিনি কোনো অনুমোদিত কোরআন সংকলিত করেছিলেন I তিনি করেন নি I প্রকৃতপক্ষে, আপনি যদি অনলাইন সুন্নতে ‘বিভিন্ন আবৃত্তিগুলো’ অন্বেষণ করেন তবে সেখানে 61 হাদীস রয়েছে যা কোরআনের বিভিন্ন আবৃত্তিগুলো নিয়ে আলোচনা করে I আজকের কোরআন বৈষম্যহীন কারণ উসমান (তৃতীয় খলিফা) পাঠ্য গুলোর মধ্যে একটিকে গ্রহণ করেছিলেন, এটিকে সম্পাদন করেছিলেন, এবং অন্য সমস্ত আবৃত্তিগুলোকে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন I নিম্নোক্ত হাদীসগুলো আজকের কোরআনে এই সম্পাদনাটি কিভাবে থেকে যায় দেখায় I
বর্ণিত ইবন আব্বাস:
উমর বললেন, “আমি ভীত যে দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরে, লোকেরা বলতে পারে, “আমরা পবিত্র পুস্তকে রাজমের আয়াতগুলো (পাথর মেরে হত্যা) দেখতে পাই না,” এবং ফলস্বরূপ তারা আল্লাহ প্রকাশিত একটি বাধ্যবাধকতা রেখে বিপথগামী হতে পারে I লো! আমি নিশ্চিত করি যে অবৈধ যৌন মিলন করে তাকে রাজমের শাস্তি দেওয়া হবে, যদি সে ইতিমধ্যেই বিবাহ করে থাকে এবং স্বাক্ষ্য বা গর্ভাবস্থা বা স্বীকারোক্তির দ্বারা অপরাধটি প্রমাণিত হয় I সুফিয়ান যোগ করলেন, “আমি এই বর্ণনাটি এই ভাবে মুখস্ত করেছি I” উমর যোগ করলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহর দূত (ﷺ) রাজমের শাস্তি বহন করেছিলেন, আর আমরাও তারপরে তাই করেছি I”
শাহি আল-বুখারি 6829: বই 86, হাদীস 56
বর্ণিত ইবন আব্বাস:
…আল্লাহ মোহম্মদকে সত্যের সাথে পাঠিয়েছিলেন এবং তার কাছে পবিত্র পুস্তকটি প্রকাশিত করেছিলেন, এবং আল্লাহ যা প্রকাশ করেছিলেন, তার মধ্যে রাজমের আয়াতটি ছিল (বিবাহিত ব্যক্তিকে (পুরুষ এবং স্ত্রী) পাথর মারা) যে অবৈধ যৌন মিলন করে, এবং আমরা এই আয়াতটিকে আবৃত্তি করেছি এবং বুঝতে পেরেছি এবং এটিকে মুখস্ত করেছি I আল্লাহর দূত (ﷺ) পাথর মারার শাস্তিটি বহন করেছিলেন এবং তারপরে আমরাও তাই করেছি….
বুখারি বই 86, হাদীস 57
আজকের দিনে কোরআনের মধ্যে
ব্যাভিচারের জন্য পাথর মারা (রাজম) সম্বন্ধে কোনো আয়াত নেই I এটি এইভাবেই সম্পাদিত
হয়েছিল I
বর্ণিত ইবন আজ-জুবের: আমি উসমানকে বললাম, “সুরা-আল-বাকরার মধ্যে থাকা এই আয়াতটি: “আপনারা যারা মারা যান এবং পেছনে বিধবাকে পেছনে ফেলে রেখে যান…তাদের ফিরিয়ে না দিয়ে,” আর একটি আয়াত দ্বারা বাতিল করা হয়েছে I তাহলে কেন আপনি এটিকে লিখবেন (কোরআনের মধ্যে)?” উসমান বললেন, “ছেড়ে দিন এটিকে (যেখানে এটি আছে)….কারণ এর কিছুই আমি বদলাব না (অর্থাৎ কোরআন) এর আসল অবস্থান থেকে I”
উএসসি-এমএসএ ওয়েব (ইংরেজি)রেফারেন্স: খণ্ড 6 বই 60 হাদীস 60 আরবি রেফারেন্স : বই 65, হাদীস 4536 বই 65, হাদীস 4536
এখানে উসমান এবং আজ-জুবেরের
মধ্যে আমরা একটি মতভেদ দেখি যে কোনো আয়াত বাতিল করার অর্থ এটি কোরআনে রাখা উচিত
ছিল বা রাখা উচিত ছিল না I উসমানের কাছে তার উপায় ছিল আর তাই এই আয়াতটি আজকে
কোরানের মধ্যে রয়েছে I তবে এটি নিয়ে বিতর্ক ছিল I
উসমান এবং সুরা 9 (আত তৌবা) এর
শিরোনাম
বর্ণিত উসমান ইবন আফফান:
ইয়াজিদ আল-ফারিশি বললেন: আমি ইবন আব্বাসকে বলতে শুনেছিলাম: আমি উসমান ইবন আফফানকে জিজ্ঞাসা করলাম: আপনাকে কি উৎসাহিত করল (সুরা) আল-বারাকে রাখতে যেটি মিন (সুরা) এর মধ্যে রয়েছে (একশত আয়াত রয়েছে) এবং (সুরা) আল-আনফালকে যেটি মাথানি (সুরা) তে আস-সাবু আত-তিওয়ালের (প্রথম দীর্ঘ সুরা বা কোরআনের অধ্যায়গুলো) শ্রেনীর মধ্যে রয়েছে, এবং তাদের মধ্যে আপনি দয়াশীল, করুণাময় আল্লাহর নামে লেখেন নি?”
উসমান উত্তর দিলেন: নবীর (ﷺ) নিকট যখন কোরআনের আয়াতগুলো প্রকাশিত হয়েছিল, তিনি কাউকে সেগুলো তার জন্য লিখতে ডেকেছিলেন এবং তাকে বললেন: এই আয়াতটি এমন সুরার মধ্যে রাখুন যাতে এই প্রকারের উল্লেখ রয়েছে; এবং যখন একটি বা দুটি আয়াত প্রকাশিত হয়েছিল, তিনি অনুরূপভাবে বলতেন (সেগুলো সম্পর্কে) I (সুরা) আল-আনফাল প্রথম সুরা যেটি মদিনাতে প্রকাশিত হয়েছিল, এবং (সুরা) আল-বারাহ কোরআনের মধ্যে শেষে প্রকাশিত হয়েছিল, এবং এর বিষয়বস্তুগুলো আল-আনফালের সেগুলোর মতন অনুরূপ ছিল I আমি, তাই, ভাবলাম যে এটি আল-আনফালের একটি অংশ ছিল I তাই আস-সাবু আত-তিওআলের (সাতটি দীর্ঘ সুরা সমূহ) বিভাগে আমি তাদের রাখলাম এবং তাদের মধ্যে “দয়াশীল, করুণাময় আল্লাহর নামে” আমি লিখলাম না I
সুমন আবি দায়ুদ 786: বই 2, হাদীস 396
সুরা 9 (আত তৌবা বা আল-বারাহ)
কোরআনের মধ্যে কেবলমাত্র সুরা যা ‘দয়াশীল, করুণাময় আল্লাহর নামে” শুরু হয় না’ I
হাদীস ব্যাখ্যা করে কেন I উসমান ভাবলেন যে সুরা 9 সুরা 8 এর অংশ যেহেতু বিষয়বস্তু
একই ছিল I প্রশ্নোত্তর থেকে আমরা দেখতে পারি যে এটি প্রাথমিক মুসলিম সম্প্রদায়ের
মধ্যে বিতর্কিত ছিল I পরবর্তী হাদীসে উসমানের কোরআনের প্রতি একজন সঙ্গীর প্রতিক্রিয়া
দেখান হয়েছে I
আবদুল্লা
(বি.মাসুদ) জানিয়েছিলেন যে তিনি (তার সঙ্গীদের কোরআনের তাদের প্রতিলিপিগুলো
লুকিয়ে রাখতে বললেন) এবং আরও বললেন:
যে কেউ কিছু গোপন রাখে, সে বিচারের দিনে যা লুকিয়ে রেখেছিল তাকে তা আনতে হবে, এবং তারপরে বললেন: কার আবৃত্তির ধরণের উপরে আপনি আমাকে আবৃত্তি করতে আদেশ করেন? আমি প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দুত (ﷺ) এবং আল্লাহর দুতের (ﷺ) সঙ্গীদের সামনে কোরআনের সত্তর অধ্যায়ের বেশি আবৃত্তি করলাম এটিকে জেনে যে আলাহর পুস্তকের সম্বন্ধে আমার আরও ভাল ধারণা রয়েছে (তাদের চেয়ে), এবং আমি যদি জানতাম যে কারোর আমার চেয়ে ভাল ধারণা আছে, আমি তার কাছে যেতাম I সফিক বললেন: আমি মোহম্মদের (ﷺ) সঙ্গীদের সান্নিধ্যে বসেছিলাম তবে আমি কাউকে তা বাতিল করতে (অর্থাৎ, তার আবৃত্তি) বা এর মধ্যে কোনো ত্রুটি খুঁজে পেতে শুনি নি I
শাহি মুসলিম 2462: বই 44, হাদীস 162
বেশ কয়েকটি জিনিস লক্ষনীয়:
1. আবদুল্লা
বি. মাসুদ তার অনুগামীদের কোনো কারণের জন্য তাদের কোরআনকে লুকিয়ে রাখতে বললেন I
2. মনে হয়
তাকে কেউ আলাদা আবৃত্তি করার নির্দেশ দিয়েছিল I উসমানের তার কোরআনের
সংস্করণটি আদর্শস্বরূপ করার সময়টিকে উল্লেখ হিসাবে সব চেয়ে ভাল বোঝা যায় I
3. কোরআনের
আবৃত্তি করার তার পদ্ধতি পরিবর্তন করতে ইবন মাসুদের আপত্তি ছিল যে: আমার(মাসুদ)
বইটির সম্বন্ধে আরও ভাল ধারণা আছে I
4. সফিক
বললেন যে মাসুদের সঙ্গে মোহম্মদের সঙ্গীদের মতবিরোধ হয় নি I
বর্তমানে
কোরআনের পাঠ্য সংস্করণ
উসমানের সংস্করণ অনুসরণ করার
পরেও, যাইহোক, বৈকল্পিক পাঠগুলো এখনও বিদ্যমান I প্রকৃতপক্ষে, এই মনে হয় যে নবীর
(পিবিইউএইচ) পরে চতুর্থ শতাব্দিতে বিভিন্ন পঠনের প্রতি একটি অনুমোদিত মঞ্জুরি ছিল
I তাই যদিও বর্তমানে আরবদের প্রধান পাঠ্য হাফস (বা হফস), সেখানে ওয়ারশও
রয়েছে, বেশিরভাগ উত্তর আফ্রিকা, আল-দুরিতে ব্যবহৃত হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে
পশ্চিম আফ্রিকা এবং এখনও অন্যত্র ব্যবহৃত হয় I এই পাঠগুলোর মধ্যে পার্থক্যটি বানান
এবং কিছুটা শব্দের পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে, সাধারণত অর্থের উপরে কোনো প্রভাব ফেলে
না, তবে কিছু পার্থক্য রয়েছে যার সাথে কেবল তাৎক্ষনিক প্রসঙ্গের ক্ষেত্রে অর্থের উপরে প্রভাব রয়েছে
কিন্তু বৃহত্তর চিন্তার মধ্যে নয় I
তাই কোরআনের কোন সংস্করণটি
ব্যবহার করা উচিত তার একটি বিকল্পরয়েছে I
আমরা জেনেছি যে বর্তমানে কোরানের মধ্যে বৈকল্পিক আরবী পাঠ্য আছে, এবং এটি নবী মোহম্মদের (পিবিইউএইচ) পরে সম্পাদনা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গিয়েছিল I বর্তমানে কোরআনের পাঠ্যের মধ্যে এই ধরণের ক্ষুদ্র পার্থক্য হওয়ার কারণ হ’ল অন্যান্য সমস্ত সংস্করণগুলোকে সেই সময়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল I কোরআনের কোনো বিকল্প পাঠ্য পাদটীকা নেই, এই জন্য না যে তার কাছে কোন বিকল্প পাঠ্য ছিল না, বরং এই কারণে যে সেগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল I উসমান সম্ভবত কোরানের একটি ভাল আবৃত্তি উৎপন্ন করেছিলেন, তবে এই কেবল একমাত্র একটি ছিল না, এবং এটিকে বিতর্ক ছাড়া প্রস্তুত করা হয় নি I সুতরাং কোরআন হ’ল “মূল ধর্মগ্রন্থ – এটি ভাষা, অক্ষর এবং আবৃত্তি সম্পর্কে ব্যাপকভাবে গৃহীত ধারণা I মানবীয় ব্যাখ্যার কোনো স্থান নেই” ভুল I যদিও বাইবেল এবং কোরআন উভয়ের বৈচিত্র্যপূর্ণ পাঠ্য আছে, এছাড়াও তাদের উভয়ের শক্তিশালী পান্ডুলিপির প্রমাণ আছে যা ইঙ্গিত দেয় যে বর্তমানে যে লেখাটি আছে তা আসলটির কাছাকাছি I উভয় আমাদের আসলটির বিশ্বাসযোগ্য উপস্থাপনা দিতে পারে I অনেকে কোরআন সংরক্ষণের পদ্ধতি সম্পর্কে অযৌক্তিক শ্রদ্ধার সাথে এবং বাইবেল সংরক্ষণের পদ্ধতি সম্পর্কে অযৌক্তিক অবজ্ঞার দ্বারা বইগুলোর বার্তা বুঝতে চাওয়ার থেকে বিভ্রান্ত হন I বইগুলো বোঝার দিকে মনোনিবেশ করা আমাদের পক্ষে আরও ভাল I সেই কারণেই তাদের প্রথম স্থান দেওয়া হয়েছিল I শুরু করার জন্য একটি ভাল জায়গা হল আদম
সুরা আল-কদর
(সুরা 97 – শক্তি) শক্তির রাতের বর্ণনা করে যখন কোরআন প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল
1 আমি একে নাযিল করেছি শবে-কদরে। 2 শবে-কদর সমন্ধে আপনি কি জানেন? 3 শবে-কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। 4 এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে। 5 এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
সুরা আল-কদর 97:1-5
সুরা আল-কদর, যদিও ‘হাজার মাসের
চেয়ে ভাল’ হিসাবে রাতের শক্তিকে বর্ণনা
করে তবুও জিজ্ঞাসা করে রাতের শক্তি কি ছিল I আত্মাটি কি করছিল যা শক্তির রাতকে এক হাজার
মাসের চেয়ে ভাল করেছিল?
সুরা আল-লায়লের (সুরা 92 –
রাত) কাছে দিনের একটি বিশেষ অনুরূপ থিম আছে এবং আলো রাতকে অনুসরণ করে I দিনটি
মহিমায় আসে, এবং আল্লাহ গাইড করেন কারণ তিনি শুরুর থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত কিছু
জানেন I অতএব তিনি শেষে আমাদের আগুনের সম্বন্ধে সাবধান করেন I
1 শপথ রাত্রির, যখন সে আচ্ছন্ন করে, 2 শপথ দিনের, যখন সে আলোকিত হয় I
সুরা আল লায়ল 92:1-2
12 আমার দায়িত্ব পথ প্রদর্শন করা। 13 আর আমি মালিক ইহকালের ও পরকালের। 14 অতএব, আমি তোমাদেরকে প্রজ্বলিত অগ্নি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছি।
সুরা আল-লায়ল 92:12-14
নিচের সাথে সুরা আল-কদর এবং
সুরা আল-লায়লকে তুলনা করুন:
আমাদের কাছে নবীদের বাণীটি আরও সুনিশ্চিত হয়েছে এবং অন্ধকারে জ্যোতির্ময়ী এক আলোক আলো যতক্ষণ না ভোর হয় এবং প্রভাত নক্ষত্রটি আপনার অন্তরে উদয় না হয় ততক্ষণ আপনি এদিকে মনোযোগ দেবেন।
2 পিতর 1:19
আপনি কি কোনো সাদৃশ্য দেখতে
পাচ্ছেন? আমি যখন সুরা আল-কদর এবং সুরা আল-লায়ল পড়ি আমাকে এই উদ্ধৃতিটি মনে করিয়ে
দেয় I এছাড়াও এটি একটি রাতের পরে উত্থিত একটি দিনের ঘোষণা করে I রাতের সময়ে নবীদের
প্রকাশন দেওয়া হয়েছিল I এটি আবারও আমাদের ভবিষ্যদ্বাণীপূর্ণ বার্তাগুলোকে অগ্রাহ্য
না করতে সতর্ক করে I অন্যথায় আমরা ভীষণ পরিণামগুলোর সম্মুখীন হই I
এটি প্রধান শিষ্য এবং নবী ঈসা
আল মসীহর পিবিইউএইচ সঙ্গী, প্রেরিত পিতরের দ্বারা লিখিত হয়েছিল, I সুরা আছ-ছফ
(সুরা 61 – ক্রম) ঈসা আল মসীহর শিষ্যদের সম্বন্ধে বলে:
মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হয়ে যাও, যেমন ঈসা ইবনে-মরিয়ম তার শিষ্যবর্গকে বলেছিল, আল্লাহর পথে কে আমার সাহায্যকারী হবে? শিষ্যবর্গ বলেছিলঃ আমরা আল্লাহর পথে সাহায্যকারী। অতঃপর বনী-ইসরাঈলের একদল বিশ্বাস স্থাপন করল এবং একদল কাফের হয়ে গেল। যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, আমি তাদেরকে তাদের শত্রুদের মোকাবেলায় শক্তি যোগালাম, ফলে তারা বিজয়ী হল।
20 এটা তোমাদের বিশেষভাবে জানা দরকার য়ে শাস্ত্রের কোন ভাববাণী বক্তার নিজের ব্যাখ্যার ফল নয়৷ 21 ভাববাণী কখনই মানুষের ইচ্ছাক্রমে আসে নি, কিন্তু পবিত্র আত্মার পরিচালনায় ভাববাদীরা ঈশ্বরের কথা বলেছেন৷
2 পিতর 1:20-21
এটি আমাদের বলে যে ঈশ্বরের
পবিত্র আত্মা নবীদেরকে সাথে করে ‘বহন করেছেন’, যাতে করে তারা যা উদ্ধৃত করেছেন এবং
পরে লিখেছেন তা ‘ঈশ্বরের থেকে’ হয় I এই কারণেই এর মতন একটি রাত হাজার মাসের চেয়ে
ভাল কারণ এটি ‘মানুষের ইচ্ছার’ বদলে পবিত্র আত্মার মধ্যে নিহিত রয়েছে I সুরা আছ-ছফ
আমাদের বলে যে যারা পিতরের বার্তায় মনোযোগ দেয় তারা শক্তির রাতে প্রয়োগ করা শক্তি
লাভ করবে এবং বিজয়ী হবে I
আমাদের মধ্যে অনেকের নিজেদের
জন্য এই লেখাগুলো পড়ার সুযোগ হয় নি I এখানে, এই বিভিন্ন লিংকগুলোর সাথে, একটি
সুযোগ রয়েছে I সুরা আল-লায়ল এক আসন্ন আগুনের সম্বন্ধ সতর্ক করে I সুরা আল-কদর
ঘোষণা করে যে ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা শক্তির রাতে কার্যরত ছিল I সুরা আছ-ছফ তাদেরকে
শক্তির প্রতিশ্রুতি দেয় যারা শিষ্যদের বার্তাকে বিশ্বাস করে I তারপরে এই শিষ্যদের
নেতা পিতর, আমাদেরকে পরামর্শ দিলেন আগামী দিনের অপেক্ষায় গোড়ার দিকের নবীদের কাছে
রাতের বেলা দেওয়া প্রকাশনের উপরে ‘মনোযোগ দিন’ I তাদের বার্তাগুলো জানা কি
বুদ্ধিমানী হবে না?
যদি আপনাকে প্রেমের গল্পের নাম
নিতে হয়, আপনি হয়ত প্রস্তাব দিতে পারেন যে নবী মহম্মদ (পিবিইউএইচ) এবং খালিদা, বা
নবী (পিবিইউএইচ) এবং তার প্রিয় স্ত্রী আইসা, বা সেই আলি এবং ফাতিমা I চলচ্চিত্র
এবং সাহিত্যে আপনি হয়ত ভাবতে পারেন: রোমিও এবং জুলিয়েট, বিউটি এবং বিস্ট, আলাদ্দিন
সিনেমার আলি এবং জেসমিন, বা হয়ত সিন্দ্রেল্লা এবং রাজকুমার চার্মিং I তাদের মধ্যে, ইতিহাস, পপ সংস্কৃতি এবং
রোমাঞ্চকর কল্পকাহিনী একসাথে আসে আবেগময় প্রেমের গল্পগুলোকে প্রদান করতে যা আমাদের
হৃদয়, আবেগ এবং কল্পনাগুলোকে মোহিত করে I
আশ্চর্যজনকভাবে, যে প্রেম রূৎ
এবং বোয়সের মধ্যে গড়ে উঠেছিল তা যে কোনো এই প্রেম কাহিনীর থেকে অনেক বেশি স্থায়ী
এবং মহৎ প্রমানিত হয়েছে, এবং আসলে, এখনও
আমাদের মধ্যে আজকের বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ লোকেদের জীবনকে প্রভাবিত করে – এই
প্রেমিকদের সাক্ষাতকারের তিন হাজার বছর পরে I
সুরা
আল-মাউন, আদ্ব-দ্বোহা, আশ-শিরাহ এবং আল-মুমতানিহা রূৎ ও বোয়সে অনুকরনীয়
রূৎ এবং বোয়সের গল্প এই
সুরাগুলো থেকে শাশ্বত নীতিগুলোকে চিত্রিত করে I বোয়স, রূতের প্রতি তার ক্ষুদ্র দয়া
সহকারে, এমন এক বাক্তি যিনি সুরা-আল-মা’উনের বিরুদ্ধে সতর্ক করা দুষ্ট ব্যক্তির
সম্পূর্ণ বিপরীত ছিলেন (সুরা 107 – ক্ষুদ্র দয়া)
2 সে সেই ব্যক্তি, যে এতীমকে গলা ধাক্কা দেয় 3 এবং মিসকীনকে অন্ন দিতে উৎসাহিত করে না।
সুরা আল-মাউন 107: 2-3
এবং নিত্য ব্যবহার্য্য বস্তু অন্যকে দেয় না।
সুরা আল-মাউন 107:7
সুরা আদ্ব-দ্বোহার
(সুরা 93 – সকালের সময়) মধ্যে বর্ণিত অভিজ্ঞতাগুলোর একটি খাঁটি উদাহরণ রূৎ I
7 তিনি আপনাকে পেয়েছেন পথহারা, অতঃপর পথপ্রদর্শন করেছেন। 8 তিনি আপনাকে পেয়েছেন নিঃস্ব, অতঃপর অভাবমুক্ত করেছেন। 9 সুতরাং আপনি এতীমের প্রতি কঠোর হবেন না; 10 সওয়ালকারীকে ধমক দেবেন না। 11 এবং আপনার পালনকর্তার নেয়ামতের কথা প্রকাশ করুন।
সুরা আদ্ব-দ্বোহা 93:7-11
রূতের গল্পে শাশুড়ি নাওমির অভিজ্ঞতাগুলো সুরা আল-শিরাহতে (সুরা 94 –স্বস্তি)
দেওয়া নীতিগুলোর একটি স্পষ্ট চিত্রণ
1 আমি কি আপনার বক্ষ উম্মুক্ত করে দেইনি? 2 আমি লাঘব করেছি আপনার বোঝা, 3 যা ছিল আপনার জন্যে অতিশয় দুঃসহ। 4 আমি আপনার আলোচনাকে সমুচ্চ করেছি। 5 নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে। 6 নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে।
সুরা আশ-শিরাহ 94:1-6
বোয়স যে ভাবে বিশ্বাসী শরণার্থী রূৎকে পরীক্ষা করে তা সুরা-আল-মুমতাহিনার উপরে
প্রয়োগ করার একটি উদাহরণ (সুরা 60 – সে যাকে পরীক্ষা করতে হবে)
মুমিনগণ, যখন তোমাদের কাছে ঈমানদার নারীরা হিজরত করে আগমন করে, তখন তাদেরকে পরীক্ষা কর। আল্লাহ তাদের ঈমান সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন। যদি তোমরা জান যে, তারা ঈমানদার, তবে আর তাদেরকে কাফেরদের কাছে ফেরত পাঠিও না। এরা কাফেরদের জন্যে হালাল নয় এবং কাফেররা এদের জন্যে হালাল নয়। কাফেররা যা ব্যয় করেছে, তা তাদের দিয়ে দাও। তোমরা, এই নারীদেরকে প্রাপ্য মোহরানা দিয়ে বিবাহ করলে তোমাদের অপরাধ হবে না। তোমরা কাফের নারীদের সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখো না। তোমরা যা ব্যয় করেছ, তা চেয়ে নাও এবং তারাও চেয়ে নিবে যা তারা ব্যয় করেছে। এটা আল্লাহর বিধান; তিনি তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।
সুরা আল-মুমতাহিনা 60:10
আজকের জন্য রূৎ এবং বোয়স
তাদের অসাধারণ প্রেমের ঘটনা
আপনাকে এবং আমাকে আল্লাহ প্রদত্ত একটি রহস্যময় এবং আধ্যাত্মিক প্রেমের চিত্র I রূৎ
এবং বোয়সের গল্প আন্ত-সাংস্কৃতিক এবং
নিষিদ্ধ প্রেম, অভিবাসন এবং একটি শক্তিশালী ও দুর্বল মহিলার মধ্যে সম্পর্কের সাথে
সম্পর্কিত – আজকের #মীটু যুগে প্রযোজ্য I এটি প্রাচীন যিহূদি-আরব সম্পর্কের সাথে
সম্পর্কিত I স্বাস্থ্যকর বিবাহ কিভাবে প্রতিষ্ঠিত করা যায় তা এটি আমাদের জন্য একটি
ব্লুপ্রিন্ট হয়ে ওঠে I যে কোনো উপায়ের মাধ্যমে রূৎ এবং বোয়সের প্রেম কাহিনীটি জানা
দরকার I
বাইবেল/কিতাবে রূতের বইয়ের মধ্যে তাদের প্রেম লিপিবদ্ধ আছে I এটি একটি ক্ষুদ্র বই – কেবল 2400 শব্দাবলী দীর্ঘ – এবং পড়া ভাল (এখানে) I এটি প্রায় 1150 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে স্থাপিত হয়েছে, লিপিবদ্ধ সমস্ত প্রেমের গল্পগুলোর মধ্যে এটিকে প্রাচীনতম করেছে I এটি বেশ কয়েকটি ছবিতে তৈরী হয়েছে I
হলিউড ছবি
রূতের প্রেম কাহিনীকে চিত্রিত করে
রূতের
প্রেম কাহিনী
নাওমি এবং তার পতি, উভয় যিহূদি, সাথে তাদের দুই পুত্র খরার থেকে পলায়ন করতে ইস্রায়েল ছেড়ে দেয় এবং নিকটস্থ মোয়াব দেশে (আজকের যর্দ্দন) স্থায়ীভাবে বাস করে I স্থানীয় মেয়েদের বিয়ে করার পরে দুই ছেলে মারা যায়, যেমন নাওমির পতি দুই পুত্রবধুর সাথে তাকে একা রেখে যায় I নাওমি তার জন্ম স্থান ইস্রায়েলে ফেরার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তার পুত্রবধুদের মধ্যে একজন, রূৎ তার সঙ্গী হতে চায় I দীর্ঘ অনুপস্থিতির পরে, নাওমি এক দুস্থ বিধবা রূপে তার জন্ম স্থান বেৎলেহামে ফিরে আসে সঙ্গে থাকে রূৎ, এক যুবতী এবং দুর্বল মোয়াবী (আরব) অভিবাসী I
রূৎ এবং বোয়সের
সাক্ষাতকার
কোনো উপার্জন ছাড়াই, রূৎ
ক্ষেতে স্থানীয় ফসল সংগ্রহকারী দলের ফেলে রাখা শস্য সংগ্রহ করতে বেরিয়ে পড়ে I সামাজিক
নিরাপত্তার একটি জাল হিসাবে নবী মুসার (পিবিইউএইচ)
শরিয়া আইন, ফসল সংগ্রহকারীদের আদেশ দিয়েছিল তাদের ক্ষেতে কিছু শস্য
পেছনে ছেড়ে যেতে যাতে দরিদ্র খাদ্য সংগ্রহ করতে পারে I এলোমেলোভাবে মনে হবে, রূৎ
নিজর মনে করে বোয়স নামে এক ধনী জমির মালকের জমিতে শস্য তুলছে I বোয়স অন্যদের মধ্যে
রূৎকে তার কর্মী দলের দ্বারা পেছনে ফেলে যাওয়া শস্য সংগ্রহ করার জন্য কঠিন পরিশ্রম
করতে লক্ষ্য করেন I তিনি তার কর্মী সর্দারকে নির্দেশ দেন ক্ষেতে অতরিক্ত শস্য
পেছনে ছেড়ে যেতে যাতে সে আরও বেশি সংগ্রহ করতে পারে I এটি করার মাধ্যমে বোয়স সুরা
আল-মানে দুষ্ট ব্যক্তির বিপরীত চিত্র তুলে ধরেছেন এবং সুরা আদ্ব-দ্বোহার পরিকল্পনা
অনুযায়ী রূৎ তার চাহিদা পূরণ করেছে I
রূৎ এবং বোয়স সাক্ষাৎ করে I তাদের সাক্ষাৎকারকে চিত্রিত করতে অনেক শিল্পকর্ম
করা হয়েছে
যেহেতু সে তার ক্ষেতে
প্রচুরভাবে সংগ্রহ করতে পারে, রূৎ ফেলে রাখা শস্য সংগ্রহ করতে বোয়সের ক্ষেতে
প্রত্যেক দিন ফিরে আসে I বোয়স, সর্বদা সুরক্ষক, সুনিশ্চিত করে যে রূৎ তার দলের
কারোর দ্বারা নিগৃহীত বা শ্লীলতাহানি না হয় I রূৎ এবং বোয়স একে অপরের প্রতি
আকর্ষিত হয়, তবে বয়স, সামাজিক মর্যাদা, এবং জাতিগত পার্থ্যকের কারণে, কোনো পদক্ষেপ
নেয় না I এখানে নাওমি ঘটক হিসাবে পদার্পণ করে I সে রূৎকে তার ফসল সংগ্রহের উৎসবের
পরে সাহসিকতার সাথে রাত্রে বোয়সের পাশে শুতে নির্দেশ দেয় I বোয়স এটিকে এক বিবাহ
প্রস্তাব বলে বুঝতে পারে এবং তাকে বিবাহ করতে চায় I
আত্মীয় উদ্ধারক
তবে পরিস্থিতি তাদের মধ্যে শুধুমাত্র ভাবাসার তুলনায় বেশি জটিল I নাওমি বোয়সের
এক আত্মীয়, আর রূৎ তার পুত্রবধু বলে, বোয়স এবং রূৎ বিবাহ সুত্রে জ্ঞাতি/আত্মীয় I
বোয়সকে অবশ্যই তাকে একজন ‘আত্মীয় উদ্ধারক’ হিসাবে বিবাহ করতে হবে I এর অর্থ
হ’ল যে মুসার (পিবিইউএইচ) ব্যবস্থার অধীনে তিনি তাকে তার ‘প্রথম স্বামীর (নাওমির
পুত্র) ‘নামে’ বিবাহ করবেন এবং সেই মতন তার ব্যবস্থা করবেন I এর অর্থ হবে যে বোয়স
নাওমির পরিবারের ক্ষেতগুলো ক্রয় করবেন I বোয়সের কাছে তা ব্যয়বহুল প্রমাণিত হলেও
সবচেয়ে বড় বাধা ছিল না I সেখানে আর একজন নিকট আত্মীয় ছিল যার কাছে নাওমির পরিবারের
ক্ষেতগুলো ক্রয় করার প্রথম অধিকার ছিল (এবং সেইভাবে রূৎকে বিবাহ করার) I সুতরাং
বোয়সের সাথে রূতের বিয়ে নাওমি ও রূতের যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব অন্য একজন চেয়েছিল কিনা
তা নিয়ে ঝুলে পড়েছিল I শহরের প্রবীনদের একটি জনসভায় এই প্রথম-লাইন বিয়েটিকে প্রত্যাখ্যান
করেছিল যেহেতু এটি তার নিজস্ব সম্পত্তিকে ঝুঁকিতে ফেলেছিল I বোয়াস এইভাবে নাওমির
পারিবারিক সম্পত্তি কিনতে এবং ছাড়িয়ে নিতে এবং রূৎকে বিবাহ করতে স্বাধীন ছিল I অনেক
কঠিন বছরের পরে নাওমি এখন স্বস্তি পেয়েছে, সুরা আশ-শিরাহ এই নীতিটি বর্ণনা করে
I
ধনী ও শক্তিশালী বোয়স যে শৌর্য
এবং শ্রদ্ধার সাথে এই নিঃস্ব বিদেশী মহিলা রূতের সাথে আচরণ করেছিলেন, তা আজকের
আমাদের #মীটু দিনগুলোতে সাধারণ হয়রানি ও শোষনের বিপরীতে একটি মডেল I পারিবারিক
লাইনের ঐতিহাসিক প্রভাব যা এই রোমাঞ্চ এবং
বিবাহ উৎপন্ন করেছিল, প্রত্যেক সময় আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যাকে আমরা আমাদের
ডিভাইসে তারিখটি নোট করে রাখি, তা এই প্রেমকে একটি স্থায়ী উত্তরাধিকার দেয় I তবে রূৎ
এবং বোয়সের প্রেম কাহিনী এমনকি আবারও মহত্তর প্রেমের একটি চিত্র – যার মধ্যে
আপনাকে এবং আমাকে আমন্ত্রণ করা হয় I
কিতাব/বাইবেল রূতের মতন আমাদের
বর্ণনা করে যখন এটি বলে:
23 আমি তার জমিতে বহু বীজ বপন করব| লো-রুহামাকে আমি কৃপা দেখাবো| লো-অম্মিকে, আমি বলব, ‘তুমি আমার লোক’ এবং তারা আমাকে বলবে, ‘আপনি আমাদের ঈশ্বর|”‘
হোশেয় 2:23
পুরনো নিয়মের ভাববাদী হোশেয়
(প্রায় 750 খ্রীষ্টপূর্বাব্দ) আল্লাহকে আমাদের কাছে তাঁর প্রেমের সাথে পৌঁছাতে তার
নিজস্ব ভগ্ন বিবাহে পুনর্মিলনকে ব্যবহার করেছিলেন I রূতের মতন যে একজন প্রেম-রহিত অবস্থায়
সেই দেশে প্রবেশ করেছিল, কিন্তু তখন বোয়সের দ্বারা তাকে প্রেম দর্শানো হয়েছিল,
তিনি তাঁর প্রেমকে আমাদের মধ্যে এমনকি তাদেরও দেখাতে চান যারা তাঁর প্রেমের থেকে
অনেক দুরে অনুভব করে I এটিকে ইঞ্জিলের (রোমীয় 9:25) মধ্যে উদ্ধৃত করা হয়েছে যাতে
দেখানো যায় কিভাবে আল্লাহ তাঁর কাছ থেকে দুরে থাকা ব্যক্তিদের ভালবাসতে ব্যাপকভাবে
পৌঁছায় I
তাঁর প্রেমকে কিভাবে দেখান যায়? ঈসা আল মসীহ, বোয়াস এবং রূতের সেই বংশধর, একজন মানুষ হিসাবে আমাদের ‘আত্মীয়’, ঠিক যেমন রূতের কাছে বোয়াস ছিলেন I তিনি আল্লাহর কাছে আমাদের পাপের ঋণ পরিশোধ করেছিলেন যখন তিনি ক্রুশের উপরে ক্রুশারোপিত হলেন, এবং এইরূপে তিনি
14 খ্রীষ্ট আমাদের জন্যে নিজেকে দিলেন, যাতে সমস্ত মন্দ থেকে আমাদের উদ্ধার করতে পারেন, যাতে আমরা সত্ কর্মে আগ্রহী ও পরিশুদ্ধ মানুষ হিসেবে কেবল তাঁর হই৷
তীত 2:14
ঠিক যেমন বোয়াস একজন
‘আত্মীয়-উদ্ধারক’ ছিলেন যিনি রূতের উদ্ধারের জন্য এক মুল্য দিয়েছিলেন, যীশুও
আমাদের ‘আত্মীয়-উদ্ধারক’ যিনি আমাদের মুক্তি দিতে মূল্য প্রদান করলেন (তাঁর জীবনের
সাহায্যে) I
আমাদের
বিবাহ সমূহের জন্য একটি মডেল
যেভাবে ঈসা আল মসীহ (এবং
বোয়াস) মুক্তি দিতে মূল্য দিলেন এবং তার পরে তার কনের মডেলগুলো জিতলেন কিভাবে আমরা
আমাদের বিবাহ সমূহকে তৈরী করতে পারি I কিতাব/বাইবেল ব্যাখ্যা করে কিভাবে আমরা আমাদের
বিবাহ সমূহকে প্রতিষ্ঠিত করি I
21 স্বেচ্ছায় তোমরা একে অপরের কাছে নত থাক৷ খ্রীষ্টের প্রতি তোমাদের শ্রদ্ধার জন্যে তা কর৷ 22 বিবাহিতা নারীরা, তোমরা য়েমন প্রভুর অনুগত তেমনি তোমাদের স্বামীদের অনুগত থাক৷ 23 কারণ স্বামী তার স্ত্রীর মস্তকস্বরূপ য়েমন খ্রীষ্ট তাঁর মণ্ডলীর মস্তক, তিনি তো তাঁর দেহেরও ত্রাণকর্তা৷ 24 তাই মণ্ডলী য়েমন খ্রীষ্টের অনুগত, তেমনি স্ত্রীরা, তোমরা সব বিষয়ে স্বামীর অনুগত থেকো৷ 25 স্বামীরা, তোমরাও তোমাদের স্ত্রীদের অনুরূপ ভালবাসো, য়েমন খ্রীষ্ট তাঁর মণ্ডলীকে ভালবেসেছেন ও তার জন্য নিজের প্রাণ উত্সর্গ করেছেন৷ 26 মণ্ডলীকে পবিত্র করার জন্য খ্রীষ্ট মৃত্যুভোগ করলেন৷ সুসমাচারের বাক্যরূপ জলে ধুয়ে তাকে পরিষ্কার করলেন, যাতে তিনি তা নিজেকে উপহার দিতে পারেন৷ 27 খ্রীষ্ট তাকে পরিষ্কার করলেন যাতে সে নিজেকে একজন জ্যোতির্মযী বধূ হিসাবে পবিত্র ও অনিন্দনীয়ভাবে উপহার দিতে পারে, যাতে তার কোন কলঙ্ক বা কুজন বা কোন অসম্পূর্ণতা না থাকে৷ 28 স্বামীরা য়েমন নিজেদের দেহকে ভালবাসে তেমনি তারা য়েন তাদের স্ত্রীকে ভালবাসে৷ য়ে কেউ তার স্ত্রীকে ভালবাসে, সে নিজেকেই ভালবাসে৷ 29 কারণ কেউ তার নিজের দেহকে ঘৃণা করে না, বরং নিজের দেহকে খাদ্য ইত্যাদি দিয়ে পুষ্ট করে তোলে এবং ভাল করে তার যত্ন নেয়৷ অনুরূপভাবে খ্রীষ্ট মণ্ডলীকে আহার দেন ও তার যত্ন করেন, 30 কারণ আমরা তাঁর দেহেরই অঙ্গ প্রত্যঙ্গ৷ 31 শাস্ত্রে য়েমন বলছে: ‘এইজন্য মানুষ তার বাবা-মাকে ছেড়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হবে ও তারা উভয়ে এক দেহ হবে৷’ 32 এই নিগূঢ় সত্য মহান; আর আমি বলি এটা খ্রীষ্ট ও তাঁর মণ্ডলীর উদ্দেশ্যে প্রয়োজ্য৷ 33 যাইহোক, তোমরা প্রত্যেকে নিজেদেরস্ত্রীকে ভালবাসবে য়েমন তোমরা নিজেদের ভালবাস; আর স্ত্রীরও উচিত তার স্বামীকে শ্রদ্ধা করা৷
ইফীষিয় 5:21-33
যেমনভাবে বোয়স এবং রূৎ প্রেম ও
শ্রদ্ধার উপরে তাদের বিবাহকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, এবং ঈসার যত্ন পতিদের জন্য তাদের
পত্নীদের আত্মত্যাগের সাথে ভালবাসার একটি নমুনা, যাতে আমরা এই একই মুল্য সমূহের
উপরে আমাদের বিবাহগুলোকে নির্মাণ করতে ভালভাবে কাজ করি I
আপনার
এবং আমার জন্য একটি বিবাহের আমন্ত্রণ
যেমন সমস্ত প্রেম কাহিনীগুলোর
মধ্যে, কিতাব/বাইবেল একটি বিবাহের সাথে শেষ হয় I ঠিক যেমনভাবে বোয়াস তাদের বিবাহের
রাস্তা খুলতে রূৎকে মুক্তি দিতে যে মূল্য প্রদান করলেন, ঈসা আল মসীহর পিবিইউএইচ
মূল্য প্রদান আমাদের বিবাহের জন্য রাস্তা উন্মুক্ত করেছে I সেই বিবাহটি রূপক নয়
বরং প্রকৃত এবং যারা তার বিবাহের আমন্ত্রণ স্বীকার করছে তাদের বলা হয় ‘খ্রীষ্টের
কনে’ I যেমন এটি বলে:
7 এস, আমরা আনন্দ ও উল্লাস করি, আর তাঁর মহিমা করি, কারণ মেষশাবকের বিবাহের দিন এল৷ তাঁর বধূও বিবাহের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছে৷
প্রকাশিত বাক্য 19:7
যারা মুক্তির সম্বন্ধে যীশুর উপহার পায় তারা তার ‘কনে’ হয় I এই স্বর্গীয় বিবাহ আমাদের সকলের কাছে দেওয়া হয়েছে I তার বিবাহে আসতে আপনার এবং আমার জন্য এই আমন্ত্রণের সাথে বাইবেল শেষ হয় I
17 আত্মা ও বধূ বলছেন, ‘এস!’ য়ে একথা শোনে সেও বলুক, ‘এস!’ আর য়ে পিপাসিত সেও আসুক৷ য়ে চায় সে এসে বিনামূল্যে জীবন জল পান করুক৷
প্রকাশিত বাক্য 22:17
রূৎ এবং বোয়সের মধ্যে সম্পর্ক প্রেমের একটি নমুনা যা আজকের দিনে এখনও নিজেকে অনুভূত করছে I এটি আল্লাহর স্বর্গীয় প্রেমের একটি চিত্র I তিনি তাঁর কনে রূপে সকলকে বিবাহ করবেন যারা তাঁর বিবাহ প্রস্তাবকে স্বীকার করে I যে কোনো বিবাহ প্রস্তাবের মতন, আপনার প্রস্তাবটি গ্রহণ করা উচিত কিনা তা দেখার জন্য তার প্রস্তাবকে ওজন করা উচিত I এখানে ‘পরিকল্পনার’ সাথে আরম্ভ করুন যাকে হজরত আদমের সাথে শুরুতে স্থাপন করা হয়েছিল, এখানে দেখতে কিভাবে হজরত ইব্রাহিম পরিকল্পনাটিকে আগে থেকেই দেখেছিলেন, এখানে কিভাবে নবী মুসা/মোসেস দেখেছিলেন কিভাবে উদ্ধারকর্তা মূল্য প্রদান করবেন, এবং এখানে দেখতে কিভাবে এটি বহুপূর্বে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যাতে আমরা জানতে পারি প্রকৃতপক্ষে এটি আল্লাহ/ঈশ্বরের প্রস্তাব I
আমরা কাবার (318 হিজরার মধ্যে) কালো পাথরের অন্তর্হিত হওয়ার ঘটনাকে ব্যবহার করে এই বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এই প্রশ্নটিকে বিস্তৃতভাবে পরীক্ষা করব I
যারা ঈসা আল মসীহর পিবিইউএইচ ক্রুশের উপরে মৃত্যুকে অস্বীকার করে তারা সাধারণত আন-নিসা 157 আয়াতটি উদ্ধৃত করে I
আর তাদের একথা বলার কারণে যে, আমরা মরিয়ম পুত্র ঈসা মসীহকে হত্যা করেছি যিনি ছিলেন আল্লাহর রসূল। অথচ তারা না তাঁকে হত্যা করেছে, আর না শুলীতে চড়িয়েছে, বরং তারা এরূপ ধাঁধায় পতিত হয়েছিল। বস্তুতঃ তারা এ ব্যাপারে নানা রকম কথা বলে, তারা এক্ষেত্রে সন্দেহের মাঝে পড়ে আছে, শুধুমাত্র অনুমান করা ছাড়া তারা এ বিষয়ে কোন খবরই রাখে না। আর নিশ্চয়ই তাঁকে তারা হত্যা করেনি। সুরা আন-
নিসা 4:157
ঈসা আল মসীহকে কি হত্যা করা হয়েছিল?
লক্ষ্য করুন এটি বলে না যে ঈসা আল মসীহ মারা যান নি I এটি বলে যিহূদিরা ‘তাকে হত্যা করে নি…’ যা আলাদা I ইঞ্জিল লিপিবদ্ধ করে যিহূদিরা নবীকে গ্রেফতার করে, এবং প্রধান যাজক কাফায়া তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তবে
28 এরপর তারা যীশুকে কায়াফার বাড়ি থেকে রাজ্যপালের প্রাসাদে নিয়ে গেল৷ তখন ভোর হয়ে গিয়েছিল৷ তারা নিজেরা রাজ্যপালের প্রাসাদের ভেতরে য়েতে চাইল না, পাছে অশুচিহয়ে পড়ে, কারণ তারা নিস্তারপর্বের ভোজ খেতে চাইছিল৷
যোহন 18:28
পীলাত রোমের দেশাধ্যক্ষ্য ছিলেন I রোমের দখলে থাকাতে, যিহূদিদের প্রাণদণ্ড দেওয়ার কর্ত্তৃত্ব ছিল না I পীলাত তখন নবীকে তার রোমীয় সৈন্যদের কাছে সমর্পণ করলেন I
16 তখন পীলাত যীশুকে ক্রুশে বিদ্ধ করে মারবার জন্য তাদের হাতে তুলে দিলেন৷শেষ পর্যন্ত তারা যীশুকে হাতে পেল৷
যোহন 19:16
অতএব রোম সরকার এবং রোমীয় সৈন্যরা তাকেই ক্রুশে দিয়েছিল – যিহূদিরা নয় I যিহূদি নেতাদের কাছে নবীর শিষ্যদের অভিযোগ এই ছিল যে
13 না! ঈশ্বরই একাজ করেছেন৷ তিনি অব্রাহামের, ইসহাকের ও যাকোবের ঈশ্বর, আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, তিনিই তাঁর দাস যীশুকে মহিমান্বিত করেছেন৷ এই যীশুকেই আপনারা মৃত্যুদণ্ডের জন্য শত্রুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন৷ সেদিন পীলাত যখন তাঁকে ছেড়ে দেবেন বলে মনস্থ করেছিলেন, তখন আপনারা তাঁকে অগ্রাহ্য করেছিলেন৷ আপনারা বলেছিলেন, যীশুকে আপনারা চান না৷
প্রেরিত 3:13
যিহূদিরা তাকে রোমীয়দের কাছে সমর্পণ করল এবং তারা তাকে ক্রুশবিদ্ধ করল I ক্রুশে তার মৃত্যুর পরে, তার দেহকে একটি সমাধিতে রাখা হল
41 যীশু সেখানে ক্রুশ বিদ্ধ হয়েছিলেন, তার কাছে একটি বাগান ছিল, সেই বাগানে একটি নতুন কবর ছিল সেখানে আগে কাউকে কখনও কবর দেওযা হয় নি৷ 42 এই কবরটি নিকটেই ছিল, যীশুর দেহ তাঁরা সেই কবরেব মধ্যে রাখলেন, কারণ ইহুদীদের বিশ্রামের দিনটি শুরু হতে চলেছিল৷
যোহন 19:41-42
আন-নিসা 157 ব্যক্ত করে যে যিহূদিরা ঈসা আল মসীহকে ক্রুশবিদ্ধ করে নি I সেটি সত্য I রোমীয়রা করেছিল I
সুরা মারইয়াম এবং নবীর মৃত্যু
ঈসা আল মসীহ মারা গেছেন কিনা তা সুরা মারইয়াম পরিস্কার করে দিয়েছেন I
33 আমার প্রতি সালাম যেদিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি, যেদিন মৃত্যুবরণ করব এবং যেদিন পুনরুজ্জীবিত হয়ে উত্থিত হব। 34 এই মারইয়ামের পুত্র ঈসা। সত্যকথা, যে সম্পর্কে লোকেরা বিতর্ক করে।
সুরা মারইয়াম 19:33-34
এটি পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করে যে ঈসা আল মসীহ তার মৃত্যু সম্পর্কে আগে থেকেই দেখেছিলেন এবং বলেছিলেন, যেমন ইঞ্জিল লিপিবদ্ধ করে I
‘পরিবর্তে যুদার হত্যা’ তত্ত্ব
একটি বহু প্রচারিত তত্ত্ব আছে যে যুদাকে ঈসা আল মসীহর মতন দেখতে রূপান্তর করা হয়েছিল I তখন যিহূদিরা যুদাকে (যাকে এখন ঈসা আল মসীহর মতন দেখতে) গ্রেফতার করল, রোমীয়রা যুদাকে (তখনও ঈসার সাদৃশ্য) ক্রুশবিদ্ধ করল, এবং যুদাকে (তখনও ঈসার মতন দেখতে) কবর দেওয়া হল I এই তত্বের মধ্যে ঈসা আল মসীহ না মারা গিয়ে সরাসরিভাবে স্বর্গে গিয়েছিলেন I যদিও না কোরআন আর নাতো ইঞ্জিলের কোথাও এই ধরণের বিস্তৃত ছকের কোনো বর্ণনা আছে, এটিকে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে I তাই এই তত্ত্বটিকে আমাদের পরীক্ষা করা যাক I
ঐতিহাসিক নথির মধ্যে ঈসা আল মসীহ
ধর্মনিরপেক্ষ ইতিহাস ঈসা আল মসীহ এবং তার মৃত্যুর প্রতি বিভিন্ন উল্লেখ সমূহকে লিপিবদ্ধ করে I আমাদের দুটির প্রতি দেখা যাক I রোমীয় ঐতিহাসিক তাসিতাস ঈসা আল মসীহর প্রতি উল্লেখ করেছিলেন যখন লিপিবদ্ধ করছিলেন কিভাবে রোম সম্রাট নীরো 65 খ্রীষ্টাব্দে নবী ঈসা আল মসীহর প্রথম অনুগামীদের উপরে অত্যাচার করেছিলেন I তাসিতাস লিখলেন:
‘নীরো.. সাধারণত খ্রীষ্টান নামে অভিহিত ব্যক্তিদের উপরে অত্যন্ত তীব্র অত্যাচারের সাহায্যে শাস্তি দিলেন, যাদেরকে তাদের বিশালতার জন্য ঘৃণা করা হত I খ্রীষ্টাস নামটির প্রতিষ্ঠাতাকে, পন্তিয়াস পীলাতের দ্বারা মৃত্যু দেওয়া হয়েছিল, যিনি তিবিরিযাস অঞ্চলের যিহূদিয়া প্রদেশের ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনধি ছিলেন; তবে অনিষ্টকর কুসংস্কার, এক সময়ের জন্য অবদমিত হয়ে আবার সহসা প্রাদুর্ভূত হয়েছিল, না কেবল যিহূদিয়া জুড়ে, যেখান থেকে অপকর্মটির উৎপত্তি হয়েছিল, বরং রোমের শহর জুড়েও’ তাসিতাস.
আন্নালস XV. 44
তাসিতাস সুনিশ্চিত করেন যে ঈসা আল মসীহ ছিলেন:
1) একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তি;
2) পন্তিয়াস পীলাতের দ্বারা প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত;
3) নবী ঈসা আল মসীহর মৃত্যুর পরে তার অনুগামীরা যিহূদিয়াতে (যিরূশালেম) তাদের আন্দোলন আরম্ভ করেছিল I
4) 65 খ্রীষ্টাব্দের (নীরোর সময়কাল) মধ্যে তারা যিহূদিয়া থেকে রোমে ছড়িয়ে পড়েছিল যার জন্য রোম সম্রাট অনুভব করল এদেরকে থামাতে হবে I
প্রথম শতাব্দীর যিহূদি ইতিহাস সম্বন্ধে যোসেফাস একজন যিহূদি সামরিক নেতা/ইতিহাসবিদ লেখক ছিলেন I এইরকম করতে গিয়ে তিনি এই বাক্যগুলো দিয়ে ঈসা আল মসীহর জীবনকে আবৃত করেছিলেন:
‘এই সময়ে সেখানে একজন জ্ঞানী ব্যক্তি ছিলেন … যীশু … উত্তম, এবং গুণী I আর যিহূদিদের মধ্য থেকে এবং অন্য জাতিদের থেকে অনেক লোকেরা তার শিষ্য হয়েছিল I পীলাত তাকে ক্রুশে ও মারা যাবার জন্য দোষী করেছিলেন I এবং যারা তার শিষ্য হয়েছিল তারা তার শিষ্যত্ব পরিত্যাগ করে নি I তারা সংবাদ দিয়েছিল যে তিনি তার ক্রুশবিদ্ধের পরে তৃতীয় দিনে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং যে তিনি জীবিত ছিলেন’
যোসেফাস 90 খ্রীষ্টাব্দ আন্তিকুইটিস XViii 33
যোসেফাস সুনিশ্চিত করেন যে:
1) ঈসা আল মসীহর অস্তিত্ব ছিল,
2) তিনি একজন ধর্মীয় শিক্ষক ছিলেন,
3) রোমীয় দেশাধ্যক্ষ্য পীলাত তার প্রাণদণ্ড দিয়েছিলেন.
4) তার শিষ্যরা ঠিক তার পরে ঈসা আল মসীহর পুনরুত্থান সম্পর্কে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিলেন I
এই ঐতিহাসিক নথি সমূহ থেকে এটি মনে হয় যে তার শিষ্যদের দ্বারা রোমীয় জগতের কাছে ঘোষিত তার পুনরুত্থান সহ নবীর মৃত্যু একটি সুপরিচিত, অবিতর্কিত ঘটনা ছিল I
ঐতিহাসিক পৃষ্ঠভূমি – বাইবেল থেকে
এখানে বাইবেলের মধ্যে প্রেরিতের বইতে এইভাবে ঘটনাটিকে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে যখন শিষ্যরা যিরূশালেমে, মন্দিরে, তার ক্রুশবিদ্ধের কয়েক সপ্তাহ পরে ঈসা আল মসীহর পুনরুত্থান সম্বন্ধে ঘোষণা করল
তর ও য়োহন যখন লোকদের সাথে কথা বলছিলেন, তখন মন্দির থেকে ইহুদী যাজকরা, মন্দিরের রক্ষীবাহিনীর সেনাপতি ও সদ্দূকীরা তাঁদের কাছে এসে হাজির হল৷ 2 পিতর ও য়োহন লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন ও মৃতদের মধ্য থেকে যীশুর পুনরুত্থানের বিষয়ে লোকদের কাছে বলছিলেন বলে ঐ লোকেরা বিরক্ত হয়েছিল৷ 3 তারা পিতর ও য়োহনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেল ও পরের দিন পর্যন্ত তাদের কারাগারে রাখল; কারণ তখন সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল৷ 4 কিন্তু অনেকে যাঁরা পিতর ও য়োহনের মুখ থেকে সেই শিক্ষা শুনেছিল, তাদের মধ্যে অনেকেই যীশুর উপর বিশ্বাস করল৷ যাঁরা বিশ্বাস করল, সেই বিশ্বাসীদের মধ্যে পুরুষ মানুষই ছিল প্রায় পাঁচ হাজার৷ 5 পরের দিন তাদের ইহুদী নেতারা, সমাজপতি ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা সকলে জেরুশালেমে জড়ো হলেন৷ 6 সেখানে হানন মহাযাজক, কাযাফা, য়োহন, আলেকসান্দার ও মহাযাজকের পরিবারের সব লোক ছিলেন৷ 7 পিতর ও য়োহনকে তাদের সামনে দাঁড় করিয়ে ইহুদী নেতারা প্রশ্ন করলেন, ‘তোমরা কোন্ শক্তিতে বা অধিকারে এসব কাজ করছ?’ 8 তখন পিতর পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হয়ে তাঁদের বললেন, ‘মাননীয় জন-নেতৃবৃন্দ ও সমাজপতিরা: 9 একজন খোঁড়া লোকের উপকার করার জন্য যদি আজ আমাদের প্রশ্ন করা হয় য়ে সে কিভাবে সুস্থ হল, 10 তাহলে আপনারা সকলে ও ইস্রায়েলের সকল লোক একথা জানুক, য়ে এটা সেই নাসরতীয় যীশু খ্রীষ্টের শক্তিতে হল! যাকে আপনারা ক্রুশে বিদ্ধ করে হত্যা করেছিলেন, ঈশ্বর তাকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন৷ হ্যাঁ, তাঁরই মাধ্যমে এই লোক আজ সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে৷ 11 যীশু হলেন‘সেই পাথর যাকে রাজমিস্ত্রিরা অর্থাত্ আপনারা অগ্রাহ্য় করে সরিয়ে দিয়েছিলেন৷ তিনিই এখন কোণের প্রধান পাথর হয়ে উঠেছেন৷’ 12 যীশুই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি মানুষকে উদ্ধার করতে পারেন৷ জগতে তাঁর নামই একমাত্র শক্তি যা মানুষকে উদ্ধার করতে পারে৷’ 13 পিতর ও য়োহনের নির্ভীকতা দেখে ও তাঁরা য়ে লেখাপড়া না জানা সাধারণ মানুষ তা বুঝতে পেরে পর্ষদ আশ্চর্য হয়ে গেল৷ তখন তারা বুঝতে পারল য়ে পিতর ও য়োহন যীশুর সঙ্গে ছিলেন৷ 14 য়ে লোকটি সুস্থ হয়েছিল, সে পিতর ও য়োহনের সঙ্গে আছে দেখে পর্ষদ কিছুই বলতে পারল না৷ 15 তারা পিতর ও য়োহনকে সভাকক্ষ থেকে বাইরে য়েতে বলল৷ তাঁরা বাইরে গেলে নেতৃবর্গ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বলল, 16 ‘এই লোকদের নিয়ে কি করা যায়? কারণ এটা ঠিক য়ে ওরা য়ে উল্লেখয়োগ্য অলৌকিক কাজ করেছে তা জেরুশালেমের সকল লোক জেনে গেছে; আর আমরাও একথা অস্বীকার করতে পারি না৷ 17 কিন্তু একথা য়েন লোকদের মধ্যে আর না ছড়ায়, তাই এস আমরা এদের ভয় দেখিয়ে সাবধান করে দিই, য়েন এই লোকের নামের বিষয় উল্লেখ করে তারা কোন কথা না বলে৷’
প্রেরিত 4:1-17
17 এরপর মহাযাজক এবং তাঁর সঙ্গীরা অর্থাত্ সদ্দূকী দলের লোকেরা ঈর্ষায় জ্বলে উঠল৷ 18 তারা প্রেরিতদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে আটকে দিল; 19 কিন্তু রাতের বেলায় প্রভুর এক দূত সেই কারাগারের দরজা খুলে দিলেন৷ তিনি তাদের পথ দেখিয়ে কারাগারের বাইরে নিয়ে গিয়ে বললেন, 20 ‘যাও মন্দিরের মধ্যে দাঁড়িয়ে তোমরা লোকদের এই নতুন জীবনের সকল বার্তা শোনাও৷’ 21 প্রেরিতেরা আজ্ঞা অনুসারে ভোর বেলায় মন্দিরে গিয়ে শিক্ষা প্রচার করতে লাগলেন৷এদিকে মহাযাজক ও তার সঙ্গীরা, ইহুদী সমাজের গন্যমান্য লোকদের এক মহাসভা ডাকল; আর প্রেরিতদের সেখানে নিয়ে আসার জন্য কারাগারে লোক পাঠালো৷ 22 কিন্তু সেই লোকেরা কারাগারে এসে কারাগারের মধ্যে প্রেরিতদের দেখতে পেল না৷ তাই তারা ফিরে গিয়ে বলল, 23 ‘আমরা দেখলাম কারাগারের তালা বেশ ভালভাবেই বন্ধ আছে, দরজায় দরজায় পাহারাদাররা দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু দরজা খুলে ভেতরে গিয়ে আমরা কাউকে দেখতে পেলাম না, দেখলাম কারাগার খালি পড়ে আছে৷’ 24 মন্দির রক্ষীবাহিনীর প্রধান ও প্রধান যাজকেরা এই কথা শুনে হতবুদ্ধি হয়ে ভাবতে লাগল, ‘এর পরিণতি কি হবে?’ 25 সেই সময় একজন এসে তাদের বলল, ‘শুনুন! য়ে লোকদের আপনারা কারাগারে রেখেছিলেন, দেখলাম তাঁরা মন্দিরের মধ্যে দাঁড়িয়ে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছেন৷’ 26 তখন রক্ষীবাহিনীর প্রধান তার লোকদের নিয়ে সেখানে গেল ও প্রেরিতদের নিয়ে এল৷ তারা কোনরকম জোর করল না, কারণ তারা লোকদের ভয় করতে লাগল, পাছে তারা পাথর ছুঁড়ে তাদের মেরে ফেলে৷ 27 তারা প্রেরিতদের নিয়ে এসে ইহুদী নেতাদের সামনে দাঁড় করালে মহাযাজক প্রেরিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেন৷ 28 তিনি বললেন, ‘ঐ মানুষটির বিষয়ে কোন শিক্ষা দিতে আমরা তোমাদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করেছিলাম৷ ভেবে দেখ তোমরা কি করেছ? তোমরা তোমাদের শিক্ষায় জেরুশালেম মাতিয়ে তুলেছ, আর সেই লোকের মৃত্যুর জন্য সব দোষ আমাদের ওপর চাপাতে চাইছ৷’ 29 তখন পিতর ও অন্য প্রেরিতেরা এর উত্তরে বললেন, ‘মানুষের হুকুম মানার চেয়ে বরং ঈশ্বরের আদেশ আমাদের অবশ্যই পালন করতে হবে৷ 30 আপনারা যীশুকে হত্যা করেছিলেন, তাঁকে বিদ্ধ করে ক্রুশে টাঙ্গিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ঈশ্বর আমাদের সেই পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন৷ 31 সেই যীশুকে ঈশ্বর নেতা ও ত্রাণকর্তারূপে উন্নত করে নিজের ডান দিকে স্থাপন করেছেন, যাতে ইহুদীরা তাদের মন ফিরায় ও তিনি তাদের পাপের ক্ষমা দিতে পারেন৷ 32 আর আমরা এসব ঘটতে দেখেছি, বলতে পারি য়ে এসব সত্য৷ পবিত্র আত্মাও দেখাচ্ছেন য়ে এসব সত্য৷ যাঁরা তাঁর বাধ্য তাদের তিনি পবিত্র আত্মা দান করেছেন৷’ 33 মহাসভার সভ্যরা এসব কথা শুনে প্রচণ্ড রেগে উঠল, আর তারা প্রেরিতদের হত্যা করতে চাইল৷ 34 কিন্তু সেই মহাসভার একজন সভ্য, গমলীয়েল ইনি ব্যবস্থার শিক্ষক, যাকে সকলে মান্য করত, তিনি উঠে দাঁড়িয়ে ঐ প্রেরিতদের কিছু সময়ের জন্য সভা থেকে বাইরে নিয়ে য়েতে বললেন৷ 35 পরে তিনি তাদের বললেন, ‘হে ইস্রায়েলীরা, এই লোকদের নিয়ে তোমরা যা করতে যাচ্ছ সে বিষয়ে সাবধান৷ 36 কারণ এর কিছু আগে থুদা নামে একজন লোক নিজেকে মহান বলে দাবী করেছিল৷ প্রায় চারশো লোক তার অনুসারী হয়েছিল; আর সে নিহত হলে তার অনুগামীরা সব য়ে যার পালিয়ে গেল, তার কোন চিহ্নই রইল না৷ 37 থুদার পরে আদমসুমারীর সময় গালীলীয় যিহূদার উদয় হয়, সেও বেশ কিছু লোককে তার দলে টানে; পরে সেও নিহত হয়, আর তার অনুগামীরাও ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়৷ 38 তাই বর্তমানে এই অবস্থা দেখে আমি তোমাদের বলছি: এই লোকেদের থেকে দূরে থাক, তাদের ছেড়ে দাও, কারণ তাদের এই পরিকল্পনা অথবা এই কাজ যদি মানুষের থেকে হয় তবে তা ব্যর্থ হবে৷ 39 কিন্তু যদি ঈশ্বরের কাছ থেকে হয়ে থাকে, তাহলে তোমরা তা বন্ধ করতে পারবে না৷ হয়তো দেখবে য়ে তোমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছ৷’ তখন তারা এই পরামর্শ গ্রহণ করল৷ 40 তারা প্রেরিতদের ভেতরে ডেকে এনে চাবুক মারল, যীশুর নামে একটি কথাও বলতে নিষেধ করে তাদের ছেড়ে দিল৷ 41 প্রেরিতেরা মহাসভার সভাস্থল থেকে বেরিয়ে চলে গেলেন, আর যীশুর নামের জন্য তাঁরা য়ে নির্য়াতন ও অপমান সহ্য করার য়োগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন, এই কথা ভেবে আনন্দ করতে লাগলেন৷
প্রেরিত 5:17-41
লক্ষ্য করুন কিভাবে যিহূদি নেতারা তাদের বার্তাকে থামাতে বিরাট প্রচেষ্টা করল I আজকের সরকারের মতন যারা নতুন আন্দোলন সম্পকে ভীত তারা গ্রেফতার করল, ভয় দেখাল, প্রহার করল এবং অবশেষে তাদের থামাতে চেষ্টা করতে শিষ্যদের হত্যা করল (কতিপয়কে) I এই শিষ্যরা তাদের বার্তাকে যিরূশালেমে ঘোষণা করল – সেই একই নগর যেখনে অল্প কয়েক সপ্তাহ পূর্বে ঈসা আল মসীহর চেহারায় কাউকে প্রকাশ্যে প্রাণদণ্ড দিয়ে কবর দেওয়া হয়েছিল I কিন্তু কাকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়েছিল? নবীকে? বা তার মতন দেখতে তৈরী করা যুদাকে?
এখন আমাদের বিকল্পগুলোকে দেখা যাক এবং দেখি কি অর্থ হয় I
ঈসা আল মসীহর দেহ এবং সমাধিটি
সমাধিটির সম্বন্ধে দুটি বিকল্প আছে I হয় সমাধিটি খালি ছিল বা তখনও এটিতে নবীর মতন দেখতে একটি দেহ রয়েছিল I আর কোনো বিকল্প নেই I
আমরা তত্বটিকে মেনে নি যে যুদাসকে নবীর মতন দেখতে তৈরী করা হয়েছিল, তার বদলে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল, এবং তারপরে তার দেহকে (নবীর সাদৃশ্যে) কবরে রাখা হয়েছিল I এখন পরবর্তী ঘটনাগুলোর সম্বন্ধে ভাবুন যাকে আমরা ইতিহাসের ঘটনা থেকে জানি I যোসেফাস, তাসিতাস, এবং প্রেরিতের কার্য সকল আমাদের বলে যে শিষ্যরা তাদের বার্তাকে যিরূশালেমে আরম্ভ করেছিল এবং কর্ত্তৃপক্ষরা সেখানে ক্রুশবিদ্ধের (যুদাসের যাকে নবীর মত দেখতে ছিল – যেহেতু আমরা তত্ত্বটিকে মেনে নিয়েছি) পরে শিষ্যদের বার্তার বিরধিতায় কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিল I তবে এই তত্বটি স্বীকার করে যে যুদাস মৃত থেকেছিল I এই তত্বের মধ্যে, দেহ কবরে (তবে তখনও নবীর চেহারায় রুপান্তর করা হয়েছিল) থেকেছিল I শিষ্যরা, সরকার, তাসিতাস, যোসেফাস – প্রত্যেকে ভুলকরে ভাববে দেহটি নবীর ছিল তবে আসলে এটি যুদাসের (যীশুর মতন দেখতে) মৃত দেহ ছিল I
এটি একটি প্রশ্ন উত্থাপন করে I রোমীয় এবং যিহূদি নেতাদের কেন যিরূশালেমে একটি পুনরুত্থানের গল্পকে থামাতে এই ধরণের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয় যদি এই দেহটি তখনও কবরের মধ্যে ছিল, নবীর মৃত্যু থেকে উত্থানের বার্তা সম্পর্কে শিষ্যদের প্রকাশ্য বার্তার ঠিক পাশে? যদি যুদাসের দেহ (ঈসা আল মসীহর মতন দেখতে) তখনও কবরের মধ্যে ছিল তবে কর্ত্তৃপক্ষদের পক্ষে এটি একটি সরল বিষয় হোত এই দেহটিকে প্রত্যেককে দেখাতে এবং এইভাবে বন্দী, অত্যাচার এবং অবশেষে তাদের শহীদ না করে শিষ্যদের (যারা বলল যে তিনি উত্থিত হয়েছেন) খন্ডন করতে পারত I তাদের এইরকম না করার কারণ ছিল যে সেখানে দেখাবার জন্য কোনো দেহ ছিল না – সমাধিটি খালি ছিল I
কালো পাথর, কাবা এবং মক্কা ও মদিনার মসজিদ চিত্রণ হিসাবে
930 খ্রীষ্ট পূর্বাব্দে (318 হিজরী) কালো পাথরটি (আল-হাজারু আল-আস্বাদ) একটি শিত্তে গোষ্ঠির দ্বারা সেই সময়ের আব্বাসিদ শাসকদের বিরোধিতায় মক্কাতে কাবার থেকে চুরি করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল I কাবাকে ফেরত দেওয়ার পূর্বে 23 বছর ধরে এটিকে রেখে দেওয়া হয়েছিল I কালো পাথর হারিয়ে যেতে পারে I
এইরকম একটি পরিস্থিতির কল্পনা করুন যেখানে একটি গোষ্ঠী প্রকাশ্যে ভিড়ের সামনে ঘোষণা করে যে মক্কার মহান মসজিদে (আল-মসজিদ আল-হারাম) কাবার পূর্ব কোনের কালো পাথরটি আর নেই I তাদের বার্তাটি এতটাই বিশ্বাসযোগ্য ছিল যে মসজিদে তীর্থযাত্রীরা বিশ্বাস করতে আরম্ভ করল যে কালো পাথরটি হারিয়ে গেছে I পবিত্র দুই মসজিদের (খাদিম আল- হার্মায়ান আস-সারিফায়্ন) প্রহরীরা এই ধরণের একটি বার্তার বিরূদ্ধে লড়তে পারত? বার্তাটি যদি মিথ্যা হত এবং কালো পাথর তখনও কাবার মধ্যে থাকত তবে প্রহরীদের পক্ষে এই বার্তাটিকে বন্ধ করার সর্বোত্তম উপায় হোত প্রকাশ্যে দেখানো যে কালো পাথরটি তখনও কাবাতে ছিল এবং এটি কয়েক শতাব্দী ধরে রয়েছে I তখন এই ধারনাটি তৎক্ষনাত অযোগ্য হয়ে পড়ত I মক্কার মসজিদে কালো পাথরটির সানিধ্য এটিকে সম্ভব করে তোলে I বিপরীত দিকে, প্রহরীরা যদি এই ধারণাকে খন্ড করতে কালো পাথরটিকে না দেখাতে পারে, তবে এটি দেখায় যে কালো পাথরটি সত্যই 318 হিজরীতে হারিয়ে গেছে I
যাইহোক, এই গোষ্ঠী যদি মদিনার ভবিষ্যদ্বাণীপূর্ণ মসজিদ (আল-মসজিদ আন-নবাবী) থেকে ঘোষণা করে যে কালো পাথরটিকে মক্কার কাবা (450 কিলো মিটার দুরে) থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে তবে দুই পবিত্র মসজিদের প্রহরীদের পক্ষে আরও কঠিন হয় তাদের গল্পকে খণ্ডন করতে যেহেতু মদিনার লোকদের কালো পাথরটিকে দেখানো আরও কঠিন হয়ে পড়ে যা বহু দুরে রয়েছে I
এটির সম্পর্কে বিরোধের সাথে কোনো পবিত্র বস্তুর ঘনিষ্ঠতা পরীক্ষা করা নিকটবর্তী হওয়ার ফলে এটিকে খণ্ডন করা বা এর সম্বন্ধে দাবিকে যাচাই করা সহজ করে তোলে I
যিহূদি নেতারা পুনরুত্থানের বার্তাটির বিরোধিতা করেছিলেন একটি দেহ দিয়ে এটির খণ্ডন করেন নি
এই নীতিটি যিরূশালেমে যুদাস/ঈসার দেহের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য I যে সমাধিটিতে যুদাসের আপাত দেহটি (ঈসার মতন দেখতে) রাখা ছিল তা মন্দির থেকে মাত্র কয়েক মিটার দুরে ছিল যেখানে ঈসা আল মসীহর শিষ্যরা ভিড়কে উচ্চৈস্বরে সম্বোধন করছিল যে নবী মৃত থেকে উত্থাপিত হয়েছেন I যিহূদি নেতাদের পক্ষে শুধুমাত্র দেহটিকে (ঈসার মতন দেখতে) সমাধির মধ্যে দেখিয়ে তাদের পুনরুত্থানের বার্তাকে অযোগ্য প্রমানিত করা সহজ ছিল I এটি একটি ঘটনা যে পুনরুত্থানের বার্তা (যেটিকে তখনও সমাধিতে থাকা একটি দেহের সাহায্যে খণ্ডন করা যায়) সমাধির কাছেই আরম্ভ হয়েছিল যেখানে প্রত্যেকের দ্বারা স্বাক্ষ্যপ্রমাণকে দেখান যেতে পারত I যেহেতু যিহূদি নেতারা একটি দেহ দেখিয়ে তাদের বার্তাকে খণ্ডন করেনি সেইহেতু সেখানে দেখানোর জন্য কোনো দেহ ছিল না I
যিরূশালেমে পুনরুত্থানের বার্তাকে কয়েক সহস্র বিশ্বাস করেছিল
এই সময়ে যিরূশালেমে ঈসা আল মসীহর শারীরিক পুনরুত্থানের বিশ্বাসে কয়েক সহস্র পরিবর্তিত হয়েছিল I আপনি যদি ভিড়ের মধ্যে একজন হতেন পিতরকে শুনতেন, আশ্চর্য বোধ করছি তার বার্তা যদি সত্য হত, তবে আপনি কি অন্তত মধ্যাহ্নভোজের একটি বিরতি নিয়ে সমাধিতে গিয়ে নিজে একবার দেখে আসতেন না যে সেখানে তখনও কোনো দেহ ছিল কিনা? যুদাসের দেহ (নবী ঈসা আল মসীহর মতন দেখতে) যদি সমাধির মধ্যে তখনও থাকত তবে প্রেরিতদের বার্তাকে কেউ বিশ্বাস করত না I তবে ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে যে তারা যিরূশালেমে আরম্ভ করে কয়েক সহস্র অনুগামীদের লাভ করল I সেটি সম্ভব হয়ে থাকবে নবীর মতন দেখতে একটি দেহের সাহায্যে যা তখনও যিরূশালেমের চারিপাশে ছিল I যুদাসের দেহ সমাধিতে থাকা অবাস্তবতার দিকে নিয়ে যায় I এর কোনো অর্থ হয় না I
যুদাসের দেহ তত্ব খালি সমাধির ব্যখ্যা করতে পারে না I
যুদাসের এই তত্বের সমস্যা হ’ল ঈসা আল মসীহর ন্যায় চেহারায় রূপান্তরিত হওয়া এবং পরে ক্রুশবিদ্ধ করা এবং তার স্থানে সমাধি দেওয়া, যেটি একটি অধিকৃত সমাধি দিয়ে শেষ হয় I তবে খালি সমাধি শিষ্যদের পক্ষে একমাত্র ব্যাখ্যায়, মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরে পেন্টেকোষ্টে, নবীর পুনরুত্থানের উপরে ভিত্তিশীল একটি আন্দোলন আরম্ভ করতে সক্ষম হয় সেই একই নগরে যেখানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছিল I Paragraph
সেখানে কেবল দুটিমাত্র বিকল্প ছিল, এক নবীর মতন দেখতে যুদাসের দেহের সাহায্যে যা সমাধিতে রয়ে গেছে, আর একটি খালি সমাধির সাথে ঈসা আল মসীহর পুনরুত্থান I যেহেতু সমাধিতে থাকা দেহ অবাস্তবতার দিকে নিয়ে যায়, তাহলে ঈসা আল মসীহ অবশ্যই রোমীয়দের হাতে মারা গিয়ে থাকবে এবং সমাধি থেকে পুনরুত্থিত হয়ে থাকবেন যেমন পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, তার জীবনের উপহার আমাদেরকে দিয়েছেন I
আল কিতাব (বাইবেল) আক্ষরিকভাবে
‘বইকে’ বোঝায় I বাইবেল ইতিহাসের প্রথম রচনা যাকে বই আকারে স্থাপন করা হয়েছে
যা আমরা আজ দেখি I বাইবেল একট বিশ্ব স্বীকৃত বই যা এর পরিধির মধ্যে সমস্ত লোক এবং
পৃথিবীর জাতিদের অন্তর্ভুক্ত করে I এই হিসাবে, এই মহান বইটিকে পৃথিবীর প্রায় সমস্ত
ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে I অনেক জাতিগণের উপরে বাইবেলের গভীর প্রভাব রয়েছে, এবং
গ্রহের সর্বাধিক পঠিত বই I তবে এই বইটি একটি জটিল গল্প সহ আবারও এক দীর্ঘ বই I তাই
আমাদের মধ্যে অনেকে এই বইয়ের বিষয়টিকে জানে না বা বোঝে না I এই নিবন্ধটি এই
ক্লাসিক বইয়ের গল্পকে ব্যাখ্যা করতে বাইবেলের বই থেকে একটি বাক্য গ্রহণ করবে – ঈসা
আল মসীহর (পিবিইউএইচ) কার্য I
আমাদের ভবিষ্যতের একটি প্রকৃত সমস্যার সমাধান করতে বাইবেলকে দেওয়া হয়েছিল I এই
সমস্যাটিকে সুরা আল-মুজাদালাহতে (সুরা 58 – আবেদনকারী মহিলা) ব্যাখ্যা করা হয়েছে
যা আসন্ন বিচারের দিনের দিকে দেখে
6 সেদিন স্মরণীয়; যেদিন আল্লাহ তাদের সকলকে পুনরুত্থিত করবেন, অতঃপর তাদেরকে জানিয়ে দিবেন যা তারা করত। আল্লাহ তার হিসাব রেখেছেন, আর তারা তা ভুলে গেছে। আল্লাহর সামনে উপস্থিত আছে সব বস্তুই। 7 আপনি কি ভেবে দেখেননি যে, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, আল্লাহ তা জানেন। তিন ব্যক্তির এমন কোন পরামর্শ হয় না যাতে তিনি চতুর্থ না থাকেন এবং পাঁচ জনেরও হয় না, যাতে তিনি ষষ্ঠ না থাকেন তারা এতদপেক্ষা কম হোক বা বেশী হোক তারা যেখানেই থাকুক না কেন তিনি তাদের সাথে আছেন, তারা যা করে, তিনি কেয়ামতের দিন তা তাদেরকে জানিয়ে দিবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।
সুরা আল-মুজাদালাহ 58:6-7
সুরা আল-মুজাদালাহ আমাদের বলে যে এমন কোনো গোপনতা নেই
যা আল্লাহ আমাদের সম্পর্কে জানেন না, এবং তিনি আমাদের বিচার করতে তার জ্ঞান
ব্যবহার করবেন I
সুরা আল-কেয়ামাহ (সুরা 75 –
পুনরুত্থান) এই দিনটিকে ‘পুনরুত্থান দিন’ বলে ডাকে এবং এছাড়াও সাবধান করে কিভাবে
মানুষকে তার জীবনের জন্য জবাব দিতে সামনে নিয়ে আসা হবে I
10 সে দিন মানুষ বলবেঃ পলায়নের জায়গা কোথায় ? 11 না কোথাও আশ্রয়স্থল নেই। 12 আপনার পালনকর্তার কাছেই সেদিন ঠাঁই হবে। 13 সেদিন মানুষকে অবহিত করা হবে সে যা সামনে প্রেরণ করেছে ও পশ্চাতে ছেড়ে দিয়েছে। 14 বরং মানুষ নিজেই তার নিজের সম্পর্কে চক্ষুমান। 15 যদিও সে তার অজুহাত পেশ করতে চাইবে।
সুরা আল-কেয়ামাহ 75:10-15
তাহলে আমরা কি করব আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য এবং
কাজকর্মগুলোর জন্য আমরা যদি লজ্জিত হই? বাইবেলের বার্তা তাদের জন্য যারা এই
উদ্বিগ্নতা বহন করে I
বইটির বার্তা
আমরা নবী ঈসা আল মসীহর পিবিইউএইচ শেষ সপ্তাহকে পরীক্ষা করলাম I ইঞ্জিল লিপিবদ্ধ করে যে তিনি ষষ্ঠ দিনে – শুভ শুক্রবারে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন, এবং তাঁকে পরের রবিবারে আবার জীবনে ওঠানো হয়েছিল I এটিকে তাওরাত এবং গীতসংহিতা ও নবীদের উভয়ের মধ্যে পূর্বাভাষ করা গিয়েছিল I কিন্তু কেন এটি ঘটল এবং আজকে আপনার এবং আমার জন্য এটির অর্থ কি? এখানে আমরা বুঝতে চাই ঈসা আল মসীহর দ্বারা আমাদেরকে কি দেওয়া হয়েছে এবং আমরা কিভাবে করুণা এবং ক্ষমা পেতে পারি I এটি আমাদেরকে এমনকি ইব্রাহিমের মুক্তিপণকে বুঝতে সাহায্য করবে যাকে সুরা আস-সাফফাত (সুরা 37), সুরা আল ফাতিয়া (সুরা 1 – উদ্ঘাটক) এর মধ্যে বর্ণিত করা হয়েছে, যখন এটি আল্লাহকে ‘আমাদেরকে সরল পথ দেখাতে’ বলে পাশাপাশি উপলব্ধি দিতে কেন ‘মুসলিমের’ অর্থ ‘একজন যে সমর্পণ করে’, এবং কেন ধর্মকর্ম পালন যেমন বুদু, যাকাত এবং হালাল খাওয়া ভাল তবে বিচারের দিনের জন্য নিজেদের মধ্যে অপর্যাপ্ত ভাল উদ্দেশ্য I
খারাপ সংবাদ – আল্লাহর সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের সম্বন্ধে নবীরা কি বলে
তাওরাত শিক্ষা দেয় যে যখন আল্লাহ মানবজাতিকে সৃষ্টি করলেন তিনি
27 তাই ঈশ্বর নিজের মতোই মানুষ সৃষ্টি করলেন| মানুষ হল তাঁর ছাঁচে গড়া জীব| ঈশ্বর তাদের পুরুষ ও স্ত্রীরূপে সৃষ্টি করলেন|
আদিপুস্তক 1:27
“প্রতিমূর্তি” শারীরিক অর্থে বোঝায় না, তবে বরং সেই অর্থে যাতে আমাদেরকে তৈরী করা হয় তাঁকে প্রতিফলিত করতে এমনভাবে যাতে আমরা আবেগপূর্ণভাবে, মানসিকভাবে, সামাজিকভাবে, এবং আত্মিকভাবে কার্যকলাপ করি I তাঁর সাথে সম্পর্কের মধ্যে হতে আমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছিল I আমরা এই সম্পর্ককে নিচের স্লাইডের মধ্যে দেখতে পারি I সৃষ্টিকর্তাকে, অসীম শাসক হিসাবে, উপরে রাখা হয়েছে যেখানে পুরুষ এবং স্ত্রীকে স্লাইডের নিচে রাখা হয়েছে যেহেতু আমরা সীমিত প্রাণী I সংযোগকারী তীরের দ্বারা সম্পর্ককে দেখানো হয়েছে I
তাঁর প্রতিমূর্তিতে, লোকেদেরকে সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে সম্পর্কের মধ্যে হতে তৈরী করা হয়েছিল
আল্লাহ চরিত্রের দিক দিয়ে সিদ্ধ – তিনি পবিত্র I এই কারণে যাবুর বলে
4 হে ঈশ্বর, মন্দ লোকরা আপনার কাছে থাকুক, এ আপনি চান না| দুষ্ট লোকরা আপনার উপাসনা করে না| 5 বোকারা আপনার কাছে আসতে পারে না| লোকদের মন্দ কাজ করাকে আপনি ঘৃণা করেন|
গীতসংহিতা 5:4-5
আদম অবাধ্যতার একটি কার্য করেছিল – কেবলমাত্র একটি – আর ঈশ্বরের পবিত্রতায় তার বিচারের প্রয়োজন হয়েছিল I তাওরাত এবং কোরআন লিপিবদ্ধ করে যে আল্লাহ তাকে মরণশীল করলেন এবং তাঁর উপস্থিতি থেকে বিতাড়িত করলেন I সেই একই পরিস্থিতি আমাদের জন্য বিদ্যমান I যখন আমরা পাপ করি বা অমান্য করি তখন আমরা যে কোনো উপায়ে আল্লাহকে অসম্মান করি যেহেতু আমরা প্রতিমূর্তি অনুসারে কাজ করি না যাতে আমাদের তৈরী করা হয়েছে I আমাদের সম্পর্ক ভেঙ্গে যায় I এর ফলে পাথরের মতন শক্ত এক বাধার সৃষ্টি হয় যা আমাদের এবং সৃষ্টিকর্তার মধ্যে আসে I
আমাদের এবং পবিত্র ঈশ্বরের মধ্যে আমাদের পাপ এক শক্ত বাধা সৃষ্টি করে
ধর্মীয় যোগ্যতার দ্বারা পাপের বাধাকে বিদ্ধ করা
আমাদের মধ্যে অনেকে আমাদের এবং আল্লাহর মধ্যে এই বাধাকে ধর্মীয় অনুষ্ঠান সমূহ বা কার্যাবলীর দ্বারা বিদ্ধ করতে চেষ্টা করে যা বাধাকে ভাঙতে যথেষ্ট যোগ্যতা অর্জন করে I প্রার্থনা, উপবাস, হাজ্জ, মসজিদে যাওয়া, যাকাত, ভিক্ষা দান, সেই পথগুলো যার দ্বারা আমরা বাধাকে বিদ্ধ করতে যোগ্যতা অর্জন করতে চাই যাকে পরে চিত্রিত করা হয়েছে I আশা হ’ল যে ধর্মীয় যোগ্যতা কিছু পাপকে বাতিল করবে I আমাদের অনেক কাজগুলো যদি যথেষ্ট যোগ্যতা অর্জন করে আমরা আমাদের পাপগুলোকে বাতিল করতে এবং করুণা ও ক্ষমা পেতে আশা করি I
ভাল কার্য সমুহ করার দ্বারা আল্লাহর সামনে যোগ্যতা অর্জন করতে এই বাধাকে বিদ্ধ করতে আমরা চেষ্টা করি
কিন্তু পাপ বাতিল করতে কতটা যোগ্যতা আমাদের প্রয়োজন? আমাদের কি আশ্বাস যে আমাদের যোগ্যতাপূর্ণ কাজগুলো পাপ বাতিল করতে এবং বাধাকে বিদ্ধ করতে পর্যাপ্ত হবে যা আমাদের এবং আমাদের সৃষ্টিকর্তার মধ্যে এসেছে? আমরা কি জানি যে আমাদের ভাল উদ্দেশ্যগুলো পর্যাপ্ত হবে? আমাদের কাছে কোন আশ্বাস নেই আর তাই আমরা যতটা সম্ভব পারি চেষ্টা করি করতে এবং আশা করি বিচারের দিনে এটি পর্যাপ্ত হবে I
কার্যকলাপ সমূহের দ্বারা যোগ্যতা অর্জন করার পাশাপাশি, ভালো উদ্দেশ্যের জন্য প্রচেষ্টায়, আমাদের মধ্যে অনেকে পরিষ্কার থাকতে কঠিন পরিশ্রম করে I প্রার্থনার পূর্বে আমরা অধ্যবসায়ের সাথে বুদু অনুষ্ঠিত করি I অশুচিকারী লোকেদের থেকে, বস্তুগুলোর থেকে এবং খাদ্যের থেকে দুরে থাকতে আমরা কঠিন পরিশ্রম করি I কিন্তু নবী যিশাইয় প্রকাশ করলেন যে:
6 আমরা সবাই পাপের জন্য নোংরা হয়ে উঠেছি| এমন কি আমাদের ভাল কাজও অশুদ্ধ| আমাদের ভালো কাজগুলো রক্তে রঞ্জিত পোশাকের মত| আমরা সবাই মরা পাতার মত| আমাদের পাপ আমাদের বাতাসের মতো বয়ে নিয়ে চলেছে|
যিশাইয় 64:6
নবী আমাদের বলেন যে এমনকি যদি আমরা সমস্তকিছুকে এড়িয়ে চলি যা আমাদের অশুচি করে, আমাদের পাপ সমূহ আমাদের ‘ধার্মিক কার্যকলাপ’ আমাদের পরিষ্কার করতে ‘নোংরা নেকড়ার’ মতন অকেজো করে তুলবে I ওটি খারাপ সংবাদ I তবে এটি আরও খারাপ হয় I
ইঞ্জিল এই সত্যটিকে নিম্নলিখিত উপায়ে সংক্ষিপ্তসার করে:
কারণ পাপের বেতন মৃত্যু…
রোমীয় 6:23
“মৃত্যু” আক্ষরিক অর্থে ‘বিচ্ছিনতা’ I আমাদের আত্মা যখন আমাদের শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয় আমরা শারীরিকভাবে মারা যাই I অনুরূপভাবে আমরা এমনকি এখন ঈশ্বরের থেকে আত্মিকভাবে বিচ্ছিন্ন এবং মৃত হয়েছি এবং তাঁর দৃষ্টিতে অশুচি I
এটি পাপের মূল্যের জন্য যোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে আমাদের আশার সমস্যাকে প্রকাশ করে I সমস্যা হল যে আমাদের কঠিন প্রচেষ্টা সমূহ, যোগ্যতাগুলো, ভালো উদ্দেশ্য সমূহ, এবং কাজগুলো, যদিও ভুল নয়, তবুও অপর্যাপ্ত কারণ আমাদের পাপের জন্য প্রতিদান (‘বেতন’) হ’ল ‘মৃত্যু’ I কেবলমাত্র মৃত্যুই এই প্রাচীরকে বিদ্ধ করে কারণ এটি ঈশ্বরের ন্যায়কে সন্তুষ্ট করে I হালাল খাদ্য খাওয়ার দ্বারা যোগ্যতা অর্জনের জন্য আমাদের প্রচেষ্টাগুলো ক্যান্সার (যার পরিণাম মৃত্যু) নিরাময়ের জন্য চেষ্টা করার মতন I হালাল খাদ্য খারাপ নয়, ভাল – এবং একজনের হালাল খাওয়া ভাল – কিন্তু এটি ক্যান্সার নিরাময় করবে না I ক্যান্সারের জন্য আপনার এক সম্পূর্ণ ভিন্ন চিকিৎসার প্রয়োজন যা ক্যান্সারের কোশিকাগুলোকে মারে I
তাই এমনকি আমাদের প্রচেষ্টা এবং ভাল উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে যা ধর্মীয় যোগ্যতার জন্ম দেয় আমরা আমাদের সৃষ্টিকর্তার দৃষ্টিতে আসলে মৃত এবং একটি মৃত দেহের মতন অশুচি I
আমাদের পাপের পরিণাম মৃত্যু – আল্লাহর সামনে আমরা অশুচি মৃত দেহের মতন
ইব্রাহিমকে সরল পথ দেখানো হয়েছিল I তিনি শুধুমাত্র ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতির উপরে ভরসা করেছিলেন এবং ঈশ্বর পাপের জন্য মৃত্যুর মূল্যের যোগান দিয়েছিলেন
কোরআন এটির সম্বন্ধে সুরা আস-সাফফাতে (সুরা 37 – তারা যারা মাত্রা স্থাপন করে) বলে যেখানে এটি বলে:
107 আমি তার পরিবর্তে দিলাম যবেহ করার জন্যে এক মহান জন্তু। 108 আমি তার জন্যে এ বিষয়টি পরবর্তীদের মধ্যে রেখে দিয়েছি যে, 109 ইব্রাহীমের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। সুরা আস-
সাফফাত:107-109
আল্লাহ ‘মুক্তিপণ (মূল্য প্রদান করলেন) দিলেন’ আর ইব্রাহিম আশীর্বাদ, করুণা এবং ক্ষমা পেলেন যা ‘শান্তিকে’ অন্তর্ভুক্ত করেছিল I
শুভ সংবাদ: আমাদের স্বপক্ষে ঈসা আল মসীহর কাজ
সেখানে আমাদের সরল পথ দেখাতে সুরা আল-ফাতিয়ার (সুরা 1 – উদ্ঘাটন) অনুরোধ অনুসারে নবীর উদাহরণ
4যিনি বিচার দিনের মালিক। 5 আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। 6 আমাদেরকে সরল পথ দেখাও, 7 সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।সুরা আল-
ফাতিহা 1:4-7
ইঞ্জিল ব্যাখ্যা করে যে এটি একটি চিত্র যা দেখায় আল্লাহ কিভাবে পাপের জন্য মূল্য প্রদান করেন এবং মৃত্যু ও অশুচিতার জন্য একটি সরল কিন্তু শক্তিশালী উপায়ে নিরাময় যোগান দেন I
23 কারণ পাপ য়ে মজুরি দেয়, সেই মজুরি হল মৃত্যু৷ কিন্তু ঈশ্বর অনুগ্রহ করে যা দান করেন সেই দান হল আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশুতে অনন্ত
জীবন৷ রোমীয় 6:23
এতক্ষণ পর্যন্ত সব ‘খারাপ সংবাদ’ ছিল I তবে ‘ইঞ্জিল’ আক্ষরিক অর্থে ‘শুভ সংবাদ’ বোঝায় এবং সেটিকে ঘোষণা করার দ্বারা আমাদের এবং ঈশ্বরের মধ্যে এই বাধাকে বিদ্ধ করতে ঈসার মৃত্যু পর্যাপ্ত হয় আমরা দেখতে পারি কেন এটি শুভ সংবাদ যেমন দেখানো হয়েছে I
ইব্রাহিমকে সরল পথ দেখানো হয়েছিল I তিনি শুধুমাত্র ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতির উপরে ভরসা করেছিলেন এবং ঈশ্বর পাপের জন্য মৃত্যুর মূল্যের যোগান দিয়েছিলেন
নবী ঈসা আল মসীহ ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন এবং পরে প্রথম ফল হিসাবে মৃত্যু থেকে উঠেছিলেন যাতে করে তিনি আমাদেরকে এখন নতুন জীবন দান করেছেন I মৃত্যুর পাপের বন্দী হয়ে থাকার আমাদের আর কোনো দরকার নেই I
ঈসা আল মসীহর পুনরুত্থান ‘প্রথম ফল’ ছিল I আমরা মৃত্যু থেকে মুক্ত হতে পারি এবং সেই একই পুনরুত্থানের জীবন পেতে পারি
তাঁর কোরবানী এবং পুনরুত্থানের মধ্যে ঈসা আল মসীহ ঈশ্বরের থেকে আমাদের বিচ্ছিন্নকারী পাপের বাধার মধ্যিখান দিয়ে দ্বারে পরিণত হলেন I এই জন্যই নবী বললেন:
9 আমিই দরজা৷ যদি কেউ আমার মধ্য দিয়ে ঢোকে তবে সে রক্ষা পাবে৷ সে ভেতরে আসবে এবং বাইরে গেলে তার চারণভূমি পাবে৷ 10 চোর কেবল চুরি, খুন ও ধ্বংস করতে আসে৷ আমি এসেছি, যাতে লোকেরা জীবন লাভ করে, আর য়েন তা পরিপূর্ণ ভাবেই লাভ করে৷’
যোহন 10:9-10
এইরূপে ঈসা আল মসীহ দ্বার হলেন যা পাপ এবং মৃত্যুর বাধাকে ভগ্ন করে
এই দ্বারের কারণে, আমরা এখন আমাদের পাপ বাধা হওয়ার পূর্বে সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে পুনরায় অর্জন করতে পারি এবং করুণা এবং পাপের ক্ষমা পেতে আশ্বস্ত হতে পারি I
এক উন্মুক্ত দ্বারের সাহায্যে আমরা এখন আমাদের সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে পুনস্থাপিত হয়েছি
যেমন ইঞ্জিল ঘোষণা করে:
5 কারণ একমাত্র ঈশ্বর আছেন আর ঈশ্বরের ও মানুষের মধ্যে কেবল একমাত্র পথ আছে, যার মাধ্যমে মানুষ ঈশ্বরের কাছে পৌঁছতে পারে৷ সেই পথ যীশু খ্রীষ্ট, যিনি নিজেও একজন মানুষ ছিলেন৷ 6 সমস্ত লোকদের পাপমুক্ত করতে যীশু নিজেকে উত্সর্গ করেছিলেন৷ যীশুর এই কাজ সঠিক সময়ে প্রমাণ করল য়ে ঈশ্বর চান য়েন সব লোক উদ্ধার পায়৷ 1 তিমথি 2:5-6
আপনার কাছে ঈশ্বরের উপহার
নবী ‘সকল লোকেদের’ জন্য ‘নিজেকে দিয়েছিলেন’ I তাই এটি অবশ্যই আপনাকে তথা আমাকে অন্তর্ভুক্ত করে I তাঁর মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের মাধ্যমে তিনি একজন মধ্যস্থতাকারী হয়ে মূল্য প্রদান করেছেন এবং আমাদের জীবন প্রদান করেছেন I এই প্রদত্ত জীবনটি কিরকম?
23 কারণ পাপ য়ে মজুরি দেয়, সেই মজুরি হল মৃত্যু৷ কিন্তু ঈশ্বর অনুগ্রহ করে যা দান করেন সেই দান হল আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশুতে অনন্ত জীবন৷
রোমীয় 6:23
লক্ষ্য করুন এটিকে কিভাবে আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে I এটিকে দেওয়া হয়েছে এক … ‘উপহার’ হিসাবে I উপহার সম্পর্কে চিন্তা করুন I এতে কিছু এসে যায় না উপহারটি কি, যদি এটি প্রকৃতপক্ষে একটি উপহার হয় এটি এমনকিছু যার জন্য আপনি কাজ করেন না এবং যোগ্যতার দ্বারা অর্জন করেন না I যদি আপনি এটিকে অর্জন করতেন তবে উপহারটি আর একটি উপহার হত না – এটি একটি মজুরি হত! সেই একই ভাবে আপনি যোগ্য হতে বা ঈসা আল মসীহর কোরবানীকে অর্জন করতে পারেন না I এটিকে এক উপহার হিসাবে দেওয়া হয়েছে I এটি ততটাই সরল I
আর উপহারটি কি? এটি ‘অনন্ত জীবন’ I তার অর্থ যে পাপ আপনাকে এবং আমাকে মৃত্যুতে নিয়ে এসেছে তার মূল্য এখন চুকিয়ে দেওয়া হয়েছে I ঈশ্বর আপনাকে এবং আমাকে অধিক ভালবাসেন I এটি ততটাই শক্তিশালী I
অতএব অপনি এবং আমি কিভাবে অনন্ত জীবন পাব? আবার, উপহার সম্পর্কে চিন্তা করুন I কেউ যদি আপনাকে একটি উপহার দিতে চায় আপনি অবশ্যই এটিকে ‘গ্রহণ করবেন’ I যে কোনো সময় এক উপহার দিলে সেখানে কেবলমাত্র দুটি বিকল্প হয় I হয় উপহারটিকে প্রত্যাখ্যান করা হয় (“না ধন্যবাদ আপনাকে”) বা এটিকে গ্রহণ করা হয় (“আপনার উপহারের অন্য ধন্যবাদ I আমি এটিকে গ্রহণ করব”) I অতএব এই উপহারটিকেও অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে I এটিকে কেবল মানসিকভাবে বিশ্বাস করতে, অধ্যয়ন করতে বা বুঝতে পারা যায় না I উপকার পেতে গেলে, যে কোনো উপহারকে আপনাকে অবশ্যই ‘গ্রহণ করতে হবে’ I
12 কিন্তু কিছু লোক তাঁকে গ্রহণ করল এবং তাঁকে বিশ্বাস করল৷ যাঁরা বিশ্বাস করল তাদের সকলকে তিনি ঈশ্বরের সন্তান হবার অধিকার দান করলেন৷ 13 ঈশ্বরের এই সন্তানরা প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসারে কোন শিশুর মতো জন্ম গ্রহণ করে নি৷ মা-বাবার দৈহিক কামনা-বাসনা অনুসারেও নয়, ঈশ্বরের কাছ থেকেই তাদের
এই জন্ম৷ যোহন 1:12-13
আসলে ইঞ্জিল ঈশ্বরের সম্পর্কে বলে যে
ঈশ্বর আমাদের উদ্ধারকর্তা, যিনি সকল লোকেদের চান উদ্ধার হতে …
1 তিমথি 2:3-4
তিনি একজন উদ্ধারকর্তা এবং তাঁর ইচ্ছা যে ‘সকল লোকেরা’ তাঁর উপহার গ্রহণ করুক এবং পাপ ও মৃত্যু থেকে রক্ষা পাক I এটি যদি তাঁর ইচ্ছা হয়, তবে তাঁর উপহার গ্রহণ করতে হলে শুধুমাত্র তাঁর ইচ্ছার প্রতি সমর্পণ করতে হবে – ‘মুসলিম’ শব্দটির বিশেষ অর্থ – একজন যে সমর্পণ করে I
কিভাবে আমরা এই উপহারটি পাই? ইঞ্জিল বলে যে
12 এক্ষেত্রে ইহুদী ও অইহুদীদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই, একই প্রভু সকলের প্রভু৷ যত লোক তাঁকে ডাকে সেই সকলের ওপর তিনি প্রচুর আশীর্বাদ ঢেলে দেন৷
রোমীয় 10:12
লক্ষ্য করুন যে এই প্রতিশ্রুতি ‘প্রত্যেকের’ জন্য I যেহেতু তিনি মৃত্যু থেকে উঠলেন ঈসা আল মসীহ এমনকি এখনও জীবিত I অতএব আপনি যদি তাঁকে ডাকেন তিনি শুনবেন এবং তাঁর উপহার আপনাকে দেবেন I আপনি তাঁকে ডাকুন এবং তাঁকে বলুন I আপনি হয়ত কখনও এইরকম করেন নি I নিচে একটি নির্দেশনা দেওয়া আছে যা আপনাকে সাহায্য করতে পারে I কোনো যাদু মন্ত্র নয় I এটি কোনো নির্দিষ্ট কথা নয় যা শক্তি দিতে পারে I এটি ইব্রাহিমের যেমন ছিল সেইরকম বিশ্বাস যাকে আমরা এই উপহারটি দেওয়ার জন্য ঈসা আল মসীহর উপরে রাখতে পারি I তাঁকে বিশ্বাস করার সাথে সাথে তিনি আমাদের কথা শুনবেন এবং উত্তর দেবেন I ইঞ্জিল শক্তিশালী, তবুও এত সহজও বটে I যদি আপনি এটিকে উপযোগী পান, এই নির্দেশনাকে অনুসরণ করতে স্বচ্ছন্দ অনুভব করুন I Quote
প্রিয় নবী এবং ঈসা আল মসীহ I আমি বুঝতে পেরেছি যে আমার পাপের কারণে আমি আমার সৃষ্টিকর্তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছি I যদিও আমি কঠিনভাবে চেষ্টা করি, আমার প্রচেষ্টাগুলো এই বাধাকে বিদ্ধ করে না I তবে আমি বুঝতে পেরেছি যে আপনার মৃত্যু আমার সমস্ত পাপ ধুতে এবং আমাকে শুদ্ধ করতে একটি কোরবানী ছিল I আমি জানি যে আপনি আপনার কোরবানীর পরে মৃত্যু থেকে উঠেছিলেন তাই আমি বিশ্বাস করি যে আপনার কোরবানী পর্যাপ্ত ছিল এবং তাই আমি আপনার কাছে সমর্পণ করি I আমি আপনার কাছে যাচনা করি দয়া করে আমার পাপের থেকে শুদ্ধ করুন এবং আমার সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে মধ্যস্থতা করুন যাতে করে আমি অনন্ত জীবন পেতে পারি I আমার এই সমস্ত করার জন্য ঈসা আল মসীহ, আপনাকে ধন্যবাদ জানাই এবং এখন এমনকি আপনি আমার জীবনে ক্রমাগত পথ প্রদর্শন করতে থাকবেন যাতে আমি আপনাকে আমার প্রভু হিসাবে অনুসরণ করতে পারি I
সুরা আল-হাক্কক্কাহ (সুরা 69 – বাস্তবতা) বর্ণনা করে কীভাবে বিচারের দিনটি এক তুরীর বিফোটের সাথে উদঘাটিত হবে
13 যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে-একটি মাত্র ফুৎকার 14 এবং পৃথিবী ও পর্বতমালা উত্তোলিত হবে ও চুর্ণ-বিচুর্ণ করে দেয়া হবে,15 সেদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে। 16 সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে ও বিক্ষিপ্ত হবে। 17 এবং ফেরেশতাগণ আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে ও আট জন ফেরেশতা আপনার পালনকর্তার আরশকে তাদের উর্ধ্বে বহন করবে। 18 সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে। তোমাদের কোন কিছু গোপন থাকবে না।
সুরা আল-হাক্কক্কাহ 69:13-18
সুরা কাফ
(সুরা 50) এছাড়াও একটি
দিনের বর্ণনা করে যখন আল্লাহর তূরী ফুঁকে যাবে আর আমাদের ডান ও বাম দিকের
তত্ত্বাবধায়ক দেবদূতরা আমাদের কাজ ও যোগ্যতার রেকর্ড প্রকাশ করবে I এই আয়াতগুলো
পড়ে:
16 আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী থেকেও অধিক নিকটবর্তী। 17 যখন দুই ফেরেশতা ডানে ও বামে বসে তার আমল গ্রহণ করে। 18 সে যে কথাই উচ্চারণ করে, তাই গ্রহণ করার জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রয়েছে। 19 মৃত্যুযন্ত্রণা নিশ্চিতই আসবে। এ থেকেই তুমি টালবাহানা করতে। 20 এবং শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে এটা হবে ভয় প্রদর্শনের দিন। 21 প্রত্যেক ব্যক্তি আগমন করবে। তার সাথে থাকবে চালক ও কর্মের সাক্ষী। 22 তুমি তো এই দিন সম্পর্কে উদাসীন ছিলে। এখন তোমার কাছ থেকে যবনিকা সরিয়ে দিয়েছি। ফলে আজ তোমার দৃষ্টি সুতীক্ষ্ন। 23 তার সঙ্গী ফেরেশতা বলবেঃ আমার কাছে যে, আমলনামা ছিল, তা এই।
সুরা কাফ 50:16-23
আয়াত 20 বলে
যে তুরীর সাবধানবাণী ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে (কোরআনের প্রকাশনের আগে) I কখন
এটিকে দেওয়া হয়েছিল? এটিকে ঈসা আল মসীহর
(পিবিইউএইচ) দ্বারা দেওয়া হয়েছিল যখন তিনি ইঞ্জিলের মধ্যে ভবিষ্যদ্বাণী
করলেন যে পৃথিবীতে তাঁর প্রত্যার্বর্তন স্বর্গের তুরীর দ্বারা ঘোষিত হবে:
31 লাবন বলল, “মহাশয়, আপনাকে আমাদের আলযে স্বাগত জানাই| আপনার এখানে দাঁড়িয়ে থাকার দরকার নেই| আপনাদের বিশ্রামের জন্যে আমি সমস্ত বন্দোবস্ত করছি এবং আপনাদের উটগুলোর জন্যে আমাদের বাড়ীতে জায়গা আছে|”
মথি 24:31
এর পরে কি
ঘটে? সুরা কাফ বর্ণনা করে এক দেবদূত আমাদের ডান দিকে এবং বাম দিকে, আমাদের
কাজকর্মগুলো রেকর্ড করছে যেহেতু আল্লাহ আমাদের ঘাড়ের শিরার থেকে নিকটতম, ইঞ্জিল
আমাদের বলে যে আমাদের কাজকর্মের এই রেকর্ডগুলো এত ব্যাপক যে তারা আসলে ‘বই’ I
এটিকে একটি দর্শনে বর্ণনা করা হয়েছে যাকে যোহন,
ঈসা আল মসীহর পিবিইউএইচ একজন শিষ্য, পেয়েছিলেন এবং ইঞ্জিলের শেষ বইয়ের মধ্যে
লিখেছিলেন I যেমন এটিকে লেখা হয়েছে:
11 পরে আমি এক বিরাট শ্বেত সিংহাসন ও তার ওপর যিনি বসে আছেন তাঁকে দেখলাম৷ তাঁর সামনে থেকে পৃথিবী ও আকাশ বিলুপ্ত হল এবং তাদের কোন অস্তিত্ব রইল না৷ 12 আমি দেখলাম, ক্ষুদ্র অথবা মহান সমস্ত মৃত লোক সেই সিংহাসনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে৷ পরে কয়েকটি গ্রন্থ খোলা হল এবং আরও একটি গ্রন্থ খোলা হল৷ সেই গ্রন্থটির নাম জীবন পুস্তক৷ সেই গ্রন্থগুলিতে মৃতদের প্রত্যেকের কাজের বিবরণ লিপিবদ্ধ ছিল এবং সেই অনুসারে তাদের বিচার হল৷ 13 য়ে সব লোক সমুদ্রগর্ভে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল সমুদ্র তাদের সঁপে দিল, আর মৃত্যু ও পাতাল নিজেদের মধ্যে য়ে সব মৃত ব্যক্তি ছিল তাদের সমর্পণ করল৷ তাদের কৃতকর্ম অনুসারে তাদের বিচার হল৷ 14 পরে মৃত্যু ও পাতাল আগুনের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হল৷ এই আগুনের হ্রদই হল আসলে দ্বিতীয় মৃত্যু৷ 15 জীবন পুস্তকে যাদের নাম লেখা দেখতে পাওয়া গেল না, তাদের সকলকে আগুনের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হল৷
প্রকাশিত বাক্য 20:11-15
এটি ঘোষণা
করে যে সকলের বিচার হবে ‘তাদের কাজ অনুসারে’ যেমন এই ‘বইয়ের’ মধ্যে
লিপিবদ্ধ করা হয়েছে I তাই আমরা প্রার্থনার পরে আমাদের ডান দিক এবং বাম দিকের
দেবদুতদের শুভেচ্ছা জানাই এবং কাজকর্মের রেকর্ডিংয়ের ক্ষেত্রে কিছু সুবিধা পাওয়ার
আশা করি I
জীবন পুস্তক
কিন্তু লক্ষ্য করুন সেখানে আর একটি পুস্তক আছে, যাকে ‘জীবনের পুস্তক’ বলা হয়, যেটি ভাল-মন্দ যোগ্যতার নথি-ধারণকারী বইয়ের থেকে আলাদা I এটি ব্যক্ত করে ‘যে কেউ’ যাদের নাম জীবন পুস্তকে পাওয়া যাবে না তাদেরকে আগুনের হ্রদে (জাহান্নামের জন্য আর একটি মেয়াদ) নিক্ষেপ করা হবে I তাই, এমনকি যদিও আমাদের ডান দিকে দেবদূতের দ্বারা লিপিবদ্ধ ভালো গুনগুলোর তালিকা খুব দীর্ঘ হয়, এবং দেবদূতের দ্বারা লিপিবদ্ধ আমাদের বাম দিকে পাপগুলোর তালিকা খুব সংক্ষিপ্ত হয় – এমনকি তবুও – আপনার নাম যদি ‘জীবন পুস্তকে’ না থাকে আমরা তখনও জাহান্নামের জন্য দোষী সাব্যস্ত হব I এই ‘জীবন পুস্তক’ কি এবং কিভাবে এই পুস্তকে আমাদের নাম লিপিবদ্ধ হয়?
তাওরাত এবং কোরআন উভয়ই ব্যক্ত করে যে যখন হজরত আদম পাপ করল, আল্লাহ তাকে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছিলেন এবং তাকে মরণশীল করেছিলেন I এর অর্থ হ’ল যে সে (এবং আমরা তার সন্তান) জীবনের স্রোত থেকে বিছিন্ন হয়েছিল I এটাই কারণ যে আমরা মরণশীল এবং একদিন আমরা মারা যাব I নবী ঈসা আল মসীহ পিবিইউএইচ এই জীবনকে আমাদের কাছে পুনস্থাপন করতে এসেছিলেন যাতে আমাদের নামকে জীবন পুস্তকের মধ্যে প্রবেশ করাতে পারা যায় I যেমন তিনি ঘোষণা করলেন
24 ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি; য়ে কেউ আমার কথা শোনে, আর যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর ওপর বিশ্বাস করে সে অনন্ত জীবন লাভ করে এবং সে অপরাধী বলে বিবেচিত হবে না৷ সে মৃত্যু থেকে জীবনে উত্তীর্ণ হয়ে গেছে৷
যোহন 5:24
নবী ইব্রাহিম পিবিইউএইচ কিভাবে জীবনের এই বরদানকে আগে থেকেই দেখছিলেন, এবং কেন ঈসা আল মসীহ আমাদের জীবন দিতে পারেন তা এখানে বিস্তৃতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে I সুরা কাফ আমাদের সাবধান করে যে